প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না। আগে ঘোষণা করা সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ মে। এই সময় থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সরকারি-বেসরকারি-আধাশাসিত-স্বায়ত্তশাসিত অফিস সীমিত পরিসরে চালু রাখা যাবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বুধবার (২৭ মে) বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এ সব তথ্য গণমাধ্যমকে জানান। প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটি না বাড়ানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অনুমোদন দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, ধর্মীয় জমায়েত আগের মতো বন্ধ থাকবে। হাট-বাজার-দোকানপাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
মসজিদ-মন্দিরে আগের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা চলবে বলে যোগ করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, আমরা লকডাউন একেবারে উঠিয়ে নিচ্ছি না। ধীরে ধীরে সবকিছু চালু হবে। এ সময়ে রেল পরিবহন চলবে না। তবে বেসরকারি বিমান প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান চালু করতে পারবে।
সীমিত পরিসরে অফিস চালু থাকলে অফিসে বয়স্ক, গর্ভবতী নারীরা আসতে পারবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, অফিস চললেও সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ৫ জুন থেকে ছুটি বাড়িয়ে ১৫ জুন করা হয়েছে।
এর আগে ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণেই ছুটি বাড়াতে হবে। শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ৫ মে পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। এই ছুটির পর আবারও ছুটি বাড়ানো হবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় গত ১৭ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই ছুটির সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ছুটির সময় ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে ক্লাস চলছে এবং ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও ক্লাস আপলোড করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ঘরে বসে শিখি’ শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে ভিডিও ক্লাস চলছে। এই নামে একটি ওয়েব পোর্টালও ডেভেলপ করা হচ্ছে।
ছুটি দীর্ঘ হতে পারে এমন ভাবনা থেকে মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদফতর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন ছুটি না বাড়িয়ে কোনও উপায় দেখা যাচ্ছে না। আর সে কারণে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।
পাহাড়ি এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওরসহ দুর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিও-এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কমিয়ে এবং ক্লাস বাড়িয়ে ক্ষতিপূরণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
ছুটির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে একটি গাইডলাইন তৈরি করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে।