প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়নগন্জ সদর উপজেলা চিকিৎসক।মহামারী করোনায় নারায়নগন্জ জেলার ফোকাল পার্সন হিসাবে কর্মরত। আমি গর্বিত ডা.জাহিদ আমার স্কুল জীবনের ছোট ভাই।আমরা একই এলাকার বাসিন্দা। আমি গর্বিত এই ভেবে যে তার মত একজন দায়িত্বশীল মানবিক মানুষের সাথে আমার পরিচয় আছে। করোনার শুরু থেকেই ডা.জাহিদের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ শুরু হয়।ফোকালপার্সন হিসাবে সরকারি দায়িত্ব পালনের বাইরে আমরা দূর থেকে তার যে কর্ম তৎপরতা দেখেছি তাতে মুগ্ধ হয়েই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাতেই আমার আজকের এই ছোট নিবেদন।
করোনার শুরুতে যখন হাসপাতাল গুলো করোনা চিকিৎসার মত প্রস্তুত হতে পারেনি তখন আতংকিত নগরবাসীকে বাড়ী বাড়ী গিয়ে চিকিৎসা দেয়া,লকডাউন করা,টেলিমেডিসিন সেবা ও তথ্য দিয়ে করোনা আক্রান্ত ও তাদের পরিবারের আশ্রয় স্থলে পরিনত হয়েছিল ডা.জাহিদ।তাকে টেলিফোনে পাওয়া গেছে দিনরাত ২৪ ঘন্টা।দিন রাত ছুটতে গিয়ে নিজেও আক্রান্ত হয়েছিল করোনায়।অসুস্থ অবস্থায় আইসোলেশনে থেকে পালন করেছে তার দায়িত্ব নিয়মিত। মার্চ,এপ্রিল, মে ও জুন মাস গুলোতে আমি প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৪’শত ফোন কল রিসিভ করেছি,সেই হিসাবে জাহিদ কি পরিমান ফোন করেছে তা সহজেই অনুমেয়।
আমি নিজেই তাকে দিনে কমপক্ষে ৫ বার করতাম সেই সময় গুলোতে করোনা টেষ্ট, রোগী ভর্তি,পরামর্শ সহ বিভিন্ন কারনে।এখনো প্রতিদিনই তাকে কল করতে হয় করোনা পরীক্ষার জন্য। এখানে বিশেষ ভাবে লক্ষনীয় সে কখনো বিরক্ত হয় না কোন কারনে।এবং তাকে অনুরোধ করে ব্যার্থ হতে হয় না কখনো।কল সেন্টারের মত সে সব সময় আপডেটেট থাকে। আমার ধারনা তার লেভেলে জাহিদ দেশ সেরা।শুধুমাত্র সে চাকরীরত বিধায় দায়িত্ব পালন করেছে বলে আমার মনে হয় না।কারন এদেশে গা বাচিঁয়ে চাকরী করার লোকের সংখ্যাই বেশী।সেখানে জাহিদের করোনাকালীন সময়টা সে শুধু চাকুরি হিসাবে দেখেছে বলে আমার কাছে মনে হয় না।
একজন মানবিক মানুষ হিসেবে তার দায়িত্ব বোধের পরিচয় দিয়েছে ডা.জাহিদ। আমি গর্বিত ডা.জাহিদ আমার স্কুল জীবনের ছোট ভাই,আমরা একই এলাকার বাসিন্দা। সর্বোপরি ওর মত একজন মানবিক ও আলোকিত মানুষের সাথে আমার পরিচয় আছে এজন্য আমি বিশেষভাবে গর্বিত।প্রশান্তি বোধ করি যখন দেখি আমার দেশের একজন সরকারী ডাক্তার নিজ দায়িত্বের চেয়ে বেশী কাজ করে,জীবনবাজী রেখে দায়িত্ব পালন করে,দূর্গত মানুষের আশ্রয় স্থলে পরিনত হয়। জাহিদের পাশাপাশি দেশের সকল চিকিৎসক ও সেবা কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি টিম খোরশেদ এর পক্ষ থেকে স্যালুট জানাই।
গতকাল দৈনিক প্রথম আলো থেকে তাকে সম্মানিত করেছে দেখে মনে মনে খুব প্রশান্তি অনুভব করছি।ধন্যবাদ প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে।আমরা টিম খোরশেদও মনস্থির করেছি তাকে আমরা সংবর্ধিত করবো।পাশাপাশি আমরা করোনা যুদ্ধে যেসকল কর্মকর্তা ও নগরবাসীকে পাশে পেয়েছি তাদেরও কৃতজ্ঞতা ও সম্মান জানাতে চাই তাদের মানবিক সহায়তার জন্য। মানবিকতার আলো ছড়িয়ে পড়ুক সকল প্রাণে।