শিউলির প্রতারণার জালে নাসিক কাউন্সিলর খোরশেদ,অপপ্রচারে বিব্রত নগরবাসী

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ব্যবসায়ী থেকে ভয়ংকর চরিত্রের অধিকারী সাঈদা শিউলী। সবাই তাকে সাঈদা শিউলী নামে চিনলেও তার আসল নাম সাঈদা আক্তার খুকু। যিনি একের পর এক বিয়ে করে রীতিমত রেকর্ড গড়ে তুলেছেন। ৪ থেকে ৫টি বিয়ে করেছেন। কেউ এই সংখ্যা সঠিকভাবে বলতে পারছেনা।

নারায়ণগঞ্জে বসবাসকারী এই নারী দেশের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে করে স্বামীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা তার অন্যতম পেশা বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার তার চোখ পড়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের দিকে। খোরশেদও ছেড়ে দেয়ার পাত্র না। উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে। অথচ এই ভয়ংকর চরিত্রের নারী তার সর্বশেষ স্বামী স্বপনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী সহ হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কারণ মুখ খুললেই কাউন্সিলর খোরশেদ কারো মাইনাস পয়েন্ট হয়ে দাড়াবে। তাই স্বামী স্বপনকে মুখ বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়েছে এই ভয়ংকর নারী।

নির্দিষ্ট সূত্র বলছে, কাউন্সিলর খোরশেদ কান্ডে যদি স্বামী স্বপন মুখ খুলে তাহলে এই নারীর অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাবে। যার ফলে খোরশেদরা তাকে নিয়ে আরো কথা বলার সুযোগ পেয়ে যাবে। এমনকি তার মুখোশে ঢাকা চেহারাটা সবার সামনে উন্মুক্ত হয়ে যাবে। যেকারণে ওই নারী তার স্বামী স্বপনকে হুমকি দিয়েছে। যাতে করে ভয়ে সে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। তার উপরে মিথ্যা মামলার খড়গ তো রয়েছেই।

প্রসঙ্গত ২৪ এপ্রিল রাতে কাউন্সিলর খোরশেদ ও তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা ফেসবুকে এসে সাঈদা শিউলীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেন। খোরশেদকে বিয়ে করার জন্য উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা সহ হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সাঈদা শিউলী এক ভিডিও বার্তায় এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো খোরশেদের দ্বিতীয় বিয়ের কাবিন সংক্রান্ত প্রমাণ দিবেন বলে জানিয়েছেন।জানাগেছে, সাঈদা আক্তার ওরফে শিউলী নারায়ণগঞ্জ জেলা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে করে স্বামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুটি বিয়ে, টাঙ্গাইলে একটি বিয়ে ও পাবনা জেলায় একটি বিয়ে করেছে। এছাড়াও আরো একটি বিয়ের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে সর্বশেষ স্বামী তারিকুল রহমান স্বপন এখন সবচেয়ে বেশি গেড়াকলে রয়েছে। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে হেনস্থা করছে এই নারী। প্রশাসন ও উচ্চ মহলের সাথে বিশাল লিংক থাকার দরুন এই নারী একের পর এক বিয়ে করেও উল্টো দাপট দেখিয়ে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। এমনকি ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বামী স্বপনের মুখে তালা এটে দিয়েছে।

একাধিক সূত্র বলছে, অর্থের লোভে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ফতুল্লার শিহাচর এলাকার স্বপনকে বিয়ে করে সাইদা শিউলী। ভেবেছিল নিজেদের বাড়ি আছে নিশ্চয় ধনী পরিবারের সন্তান। কিন্তু বিয়ের পরে জানতে পারে এটা তার বাবার দেয়া বাড়ি। এছাড়া আর তেমন কোন সম্পদ নেই বললেই চলে। এতে কাবিনের দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা দাবি করে শিউলী। টাকা না দেয়ার যৌতুকের মামলা ঠুকে দেন ওই নারী। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর যাবত এই মামলার ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে স্বপনকে। জামিনে ছাড়া পেলেও আবারো খোয়ারে ঢুকাতে মিথ্যা অভিযোগ দেয় ফতুল্লা মডেল থানায়। তবে শেষ পর্যন্ত তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এসব ঘটনার মধ্যে চলে আসে কাউন্সিলর খোরশেদের ঘটনা।

তাই স্বপনের মুখ বন্ধ রাখতে নানা হুমকি ধামকি চলে। এতে নিজেকে বেশ গুটিয়ে নিয়েছে স্বপন। এমনকি সে অপরিচিত কারো ফোন পর্যন্ত রিসিভ করছেনা।সূত্রটি আরো বলছে, বিগত ১২-১৪ দিন পূর্বে স্বপনকে শাসায় শিউলী। বেশি বাড়াবাড়ি করলে দেখে নেয়ার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এমনকি স্বপনের বাড়িয়ে দিয়ে চিৎকার চেচামেচিও করে।

উল্লেখ্য, ২৪ এপ্রিল রাতে ফেসবুকে এসে খোরশেদ ও তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা ওই নারী সম্পর্কে কথা বলেন। লাইভে জানানো হয়, সাইদা শিউলি নামে এই নারী এক ভয়ঙ্কর চরিত্রের অধিকারী। তার সাথে প্রশাসন ও উচ্চ মহলের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের চলাফেরা। সে একজন ব্যবসায়ী এবং তিনবার বিয়ে করেছেন।

খোরশেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি করোনার শুরু থেকেই করোনায় আক্রান্তদের সেবা প্রদান করি ও সম্মুখে থেকে লডাই করি, দাফন সৎকার করি। এক পর্যায়ে গত মে মাসে আমি ও আমার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হই। এসময় অক্সিজেনের অভাবে আমার স্ত্রীকে এক পর্যায়ে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়। তখনি মনে হয় অক্সিজেনের জন্য করোনায় আক্রান্ত যারা সমস্যায় পড়বেন তাদের অক্সিজেন সাপোর্ট দেব বিনামূল্যে। এসময় বাংলানিউজের একটি সংবাদের নিচে এ মহিলা কমেন্ট করে সে অক্সিজেন দিতে চায় এবং আমার সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেয়। তখন থেকেই সে আমার সাথে ফেসবুকে কানেকটেড হয় এবং কথা বলা শুরু করে।

এক পর্যায়ে আমি বুঝতে পারি তার মতলব ভিন্ন এবং আমি তাকে তখন দূরে সরাতে চেষ্টা করি এবং বোঝাই। তার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেকেও আমি ঘটনা জানাই, তখন সে আমাকে বলে তার মা হয়তো দুষ্টুমি করছে এরকম কিছু সম্ভব নয়। তাতেও কাজ হবেনা বুঝে আমি নভেম্বর ডিসেম্বরে তার ভগ্নিপতিকে জানাই। এতে সে আরো ক্ষুব্দ হয় এবং আমার পেছনে উঠেপড়ে লাগে। তারপর আমার স্ত্রীকেও বুঝিয়ে বলি, আমার স্ত্রীও বলে যে সে আমার সাথে দুষ্টুমি করছে হয়তো। এরপর একবার সে আমাকে বিয়ে করবে ঠিক করে গাড়ি নিয়ে কাজী নিয়ে আমার বাড়িতে আসে আমাকে উঠিয়ে নেয়ার জন্য। পরে আমার স্ত্রী ও লোকজন তাকে আটকায়। সে আমাদের জীবন বিষিয়ে তুলেছে। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষসহ সবার কাছে গেছে তবে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ যে সবাই তার কূটকৌশল বুঝতে পেরে তাকে অবজ্ঞা করেছে।

তিনি আরো বলেন, ২১ জানুয়ারির পর থেকে হোয়াটস এ্যাপে, ম্যাসেঞ্জারে, টেলিফোনে আমাদের হুমকি দিচ্ছে এবং হত্যার হুমকি জানাচ্ছে মহিলা। আমার পরিবারের সবাইকে মারাত্মক মানুষিক অত্যাচার করছেন। সর্বশেষ আমার স্ত্রী ও সন্তান নকিবকে তুলে নিয়ে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। আমি এসব ঘটনায় শুরু থেকেই সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং অবহিত করেছি।

কাউন্সিলর খোরশেদের অভিযোগের পর সাঈদা শিউলি এক ভিডিও বার্তায় বলেন আমি একজন ব্যবসায়ী। ২০০৩ সাল থেকে আমি ব্যবসা করে আসছি। স্বযোগ্যতায় আমি কোম্পানীকে দাঁড় করিয়েছি। আমার তো কোন রাজনৈতিক অবস্থান নাই। আমি কেন কিভাবে একজন প্রভাবশালী কাউন্সিলরের বাসায় গিয়ে উঠিয়ে আনবো। এটা কি গল্প না। দেশে এসে আমি নারায়ণগঞ্জের অভিভাবক শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী আপার কাছে গিয়ে সব ডকুমেন্ট দিব। সাংবাদিকদেরও দিব। আমাকে ও আমার পরিবারকে এখন হেনস্থা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন খোরশেদ আরেকজনকে বিয়ে করছে আমি সেই বিয়ের সাক্ষী। খোরশেদ মূলত করোনা ইস্যুতে ব্যবসা করছে। সব তথ্য আমি এসে ফাঁস করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here