আদালতের আদেশ অমান্য করে লৌহজং উপজেলার সরকারি, বেসরকারি পুকুর ভরাট করছে ভূমিদস্যু কুদ্দুস

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদেনিমন্ডল ইউনিয়নের কাজিরপাগলা গ্রামে জোরপূর্বক পুকুর ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ভূমিদস্যু কুদ্দুস ইতিপূর্বে অন্যের জায়গা দখল করে বাড়ি করে বসতি স্থাপন করারও অভিযোগ রয়েছে। এর পরে সরকারি মালিকানা এবং হাই কোর্টে সিআর ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মুন্সীগঞ্জে পিটিশন মামলা ১৭৬/২০২১, ফৌ: কা: বি: ১০৭/১১৭ (সি) ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে কুদ্দুস গংদের বিরুদ্ধে।

মেদেনীমন্ডল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ তার ইউনিয়ন পরিষদের প্যাড ব্যবহার করে বিবাদমান পুকুরে সকল ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। সেই আদেশও অম্যান্য করে ড্রেজার দিয়ে ভরাট করেছেন। ঘটনাস্থলে লৌহজং থানা পুলিশও কোর্টের নোটিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে ভূমিদস্যু কুদ্দুসকে থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। ভূক্তভোগী মৃত ইন্তাজদ্দিন মোড়লের ছেলে খলিলুর রহমান ওরফে খলিল মোড়ল (৬০) জানান, বিশাল জলাশয় ৬৫ শতাংশের একটি পুকুর। এই পুকুরের একটি অংশ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

বিচারাধীন বিষয় আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কোন প্রকার পুকুরের আকার আকৃতি পরিবর্তন না করার আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশকে ব্রদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সে ড্রেজার দিয়ে অর্ধেকাংশ ভরাট করে ফেলেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে পুকুরটি ভরাট করতে গিয়ে মালিকানা জায়গাও ভরাট করে ফেলেছেন। পুকুরটি ভরাট করার পূর্বে ৩০ টি করই গাছও কেটে বিক্রি করে দিয়েছে কুদ্দুস।এ বিষয়ে ভূমিদস্যু কুদ্দুসের সাথে কথা বললে সে জানায়, এই পুকুরটি তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি। খলিল মোড়লের কোন কাগজপত্র নেই।

ইউনিয়নের পরিষদে বসা হয়েছিল সে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র দেখাতে পারলে সে সেচ্ছায় ঐ পুকুরে তাকে ছেড়ে দিবে বলেও জানান তিনি। ৩০টি গাছ বিক্রির বিষয়টি কুদ্দুস স্বীকার করেছেন। কুদ্দুস বলেন, আমি কোর্ট থেকে ৫ বছর পূর্বে ৩ বার রায় পেয়েছি। ৫ বছর পরে গিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছে। কালু মোগল থেকে ক্রয় সুত্রে মালিক। আমার থেকে খলিল মোড়লের ভাতিজা গং জায়গা ক্রয় করেছে।আব্দুল কুদ্দুস (৪০), আহাম্মদ হোসেন (৪২), আমজাদ হোসেন (৬২), মো: দুলাল (৪০) এই চারজনকে দায়ী করে মামলা করা হয়েছে। ভূমিদস্যু আব্দুল কুদ্দুস (৪০) এর নেতৃত্বে বিবাদমান পুকুরটি জোর পূর্বক ভরাট করে যাচ্ছে।

আর এস ২৯১ নং খতিয়ানভূক্ত আর এস ১১৪৬ নং দাগের পুকুর ষোল আনায় ৬৫ শতাংশ। খলিলুর রহমান পৌত্রিক সূত্রে মালিক অন্যান্য শরীকগণের সাহিত এজমালিতে মালিক ও ভোগদখলকার। আর এস জরীপকালে ভূলবশত মৃত ইন্তাজদ্দিনের নাম না উঠায় বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। এমতাবস্থায় ২২ আগস্ট রোববার সকাল ১০টায় ২য় পক্ষগণ নালিশী পুকুরের পাশে এসে মো: খলিলুর রহমান ও তার ছেলে মেয়েদের আপীল মোকদ্দমা প্রত্যহার করার হুমকি প্রদান করে। মামলা প্রত্যহার না করলে গ্রামছাড়া করারও হুমকি প্রদান করে এবং জোর পূর্বক পুকুর ড্রেজার দিয়ে ভরাট করারও হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭/১১৭ সি ধারায় একটি মামলা করা হয়।

মামলাটি দ্রুত লৌহজং থানাকে ব্যবস্থা গ্রহনে আদেশ দেয়। লৌহজং থানা কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ করে। উভয় পক্ষকে নালিশী ভূমিতে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখা এবঙ স্ব-স্ব অবস্থানে থাকা এবং উক্ত ভূমির কোন প্রকার পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করে শান্তি শৃঙখলার অবনতি ঘটাতে নিষেধ করে নোটিশ জারি করে। বিষয়টির ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ করার পরেও জোরপূর্ব ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করেছে ভূমিদস্যু খলিল গং।ঘটনাস্থলে সাংবাদিক গেলে চান্দেরবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল কাদেরকে ভূমিদস্যু কুদ্দুস মার্কেট সমিতির মালিক পক্ষকে দিয়ে হুমকি দিয়ে আসে।

এ বিষয়ে কেন সে জড়িয়েছে? এ বিষয়ে স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রহিম জানান, পুকুরটি ভরাট কারর জন্য টেন্ডার নিয়েছি আমি। আমি জানি এই পুকুরটি কুদ্দুস কোর্টের মাধ্যমে রায় পেয়েছে। হাইকোর্টে মামলা রয়েছে তা তার জানা নেই। খলিল মোড়লের পক্ষ থেকে তাকে কিছুই বলা হয়নি। অভিযোগ আসার পর থেকে ড্রেজার বন্ধ রাখা হয়েছে। চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়েই আমি ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট শুরু করেছিলাম।

এ বিষয়ে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আলমগীর হোসাইন জানান, আদালতের নোটিশ পুলিশ দিয়ে পাঠিয়েছি। এখানে কাজ বন্ধ করার জন্য কোর্টের মাধ্যমে ১৪৫ জারি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here