মুন্সীগঞ্জ গজারিয়ায় কয়েকশ কোটি টাকার সরকারি জমি বেদখল, প্রশাসন নিরব

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জেলা প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ গজারিয়ার চরবাউশিয়া মৌজা ২নং সিটের বড়কান্দি গ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে শুরু করে দক্ষিণ থেকে শুরু করে উত্তর দিকের সম্পূর্ণ সরকারি জায়গা দখল করে নিয়েছে। দখলের হিড়িক পড়ে গেছে অত্র এলাকায়। অত্র এলাকার ৪০টি পরিবার মিলে ৩০০ জনের বসবাস।

এখানের ৩০০জন নারী, শিশু, বৃদ্ধা-বৃদ্ধ মিলে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কারো আধাশতংশের মধ্যে ঘর উঠিয়ে ঠাসাঠাসি করে বসবাস করে আসছে। অত্র গ্রামের ২০০শ নারী-পুরুষ ও শিশু বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করে এই ডোবা সরকারি ভাবে যেন দখল করতে না আসে। মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে সোমবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা ৬টায়।

মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন, মালেকা (৬৫) স্বামী দুদু মিয়া, ৫ ছেলে বাড়ী সাড়ে ৪শতাংশ। রনু বেগম (৬৫) পিতা রফিকুল ইসলাম ৩ ছেলে ২ মেয়ে। বাড়ী সাড়ে ৫শতাংশ। ইব্রাহীম (৪০) পিতা মৃত আরব আলী ২ভাই ২ বোন সাড়ে ৪শতাংশ। শিরিনা (৬০) স্বামী সিরাজ ৪শতক জায়গা রয়েছে তাদের। রোশনা খাতুন (৭৫) স্বামী নুরুল ইসলাম ৪ ছেলে ৪ শতক জায়গায় বসবাস। চেহারা খাতুন (৭০) স্বামী মৃত জজ মিয়া ৩ ছেলে ৩শতক জায়গায় বসবাস। খোরশেদো স্বামী মৃত হাফেজ ২ ছেলে ৩ মেয়ে সাড়ে ৩শতক জায়গায় তাদের বসবাস। মিনু বেগম (৪৫) স্বামী স্বপন মিয়া, বিল্লাল পিতা মৃত মালেক, রাফেজা (৭০) স্বামী মৃত মাহমুদ হোসেন, খায়রন নেছা (৭৬) স্বামী আ: মালেক প্রমুখ।

কয়েকশ কোটি টাকার সরকারি জায়গা উদ্ধার না করে ডোবা ভরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বিষয়টি ডোবার সাথে যাদের বাড়ি এমন ৪০ পরিবার ৩০০ সদস্য নিয়ে জায়গার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। মানব বন্ধনে উপস্থিত সকলে প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে ন্যাাক্কার জনক বলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সরকারি সকল জায়গা উদ্ধার করার জন্যও তারা দাবী করেন বিক্ষোভ মিছিলে।

আব্দুর রব জানান, প্রশাসনের কাছে আমাদের বাড়ির সামনের এই ডোবা আমাদেরকে বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু তারা এই আবেদনের কিছু না করে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর তৈরী করে কাদেরকে দখল করে দেওয়ার পায়তারা করছে সেটা প্রশাসনই বলতে পারবে। ভরাটকৃত সকল সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে উদ্ধার করে আসলে এই ডোবা ভরতে দেয়া হবে। অন্যথায় কোনমূল্যেই এই জায়গা ভরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর উঠাতে দেয়া হবে না। যেখানে আমরা ৩০০ নারী-পুরুষ, বৃদ্ধা-বৃদ্ধ জায়গার অভাবে বসবাস করতে পারছি না, সেখানে আমাদের বাড়ির সামনের ডোবা সরকার নিয়ে নিবে এটা হতে দেয়া যাবে না।

একই জায়গায় ৩/৪টি পায়খানা তৈরী করেছে জায়গার অভাবে। কিভাবে এমন গরীব অসহায় মানুষের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাদেরকে এই ডোবা দখল করে দিতে চাচ্ছে প্রশাসন? কেউ যদি এই ডোবা ভরতে আসে তাদেরকে এই ডোবা থেকে যেতে না দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে মানব বন্ধন ও ভিক্ষোভ করতে আসা গ্রামের নারী পুরুষ।

প্রায় কয়েকশ কোটি টাকার সরকারি জায়গা বেদখল হয়ে গেছে কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের কোন ভূমিকা লক্ষ করা যায়নি। বিএনপির হাসমত উল্লাহ ও জামায়াতের আউয়াল মুন্সী এবং ডাক্তার রতন ভূইয়া সরকারের এ সকল জায়গা দখল করে ভরাট করে অনেকাংশে ভবন ও কাঁচাপাকা ঘরও উঠিয়ে ফেলেছেন। সদ্য বালু দিয়েও ভরাট করে ফেলেছেন।

সোমবার (১৪ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় চরবাউশিয়ার বড়কান্দির দক্ষিণে থেকে শুরু করে উত্তরের শেষ পর্যন্ত পুরো কয়েকশ কোটি টাকার সরকারি জায়গা দখল করে নিয়েছে। এ সময় ৩০০ পরিবার রাস্তায় নেমে পড়ে। যে কোন মূল্যে এই সম্পত্তি রক্ষা করবে তারা। কোনভাবে সরকারকে নিতে দিবে না। মানব বন্ধন ও বিক্ষোভকারীদের একটাই বক্তব্য এই ডোবা নিতে হলে সরকারি ডোবা যারা দখল করে বাড়িঘর তৈরী করেছে, গাছ লাগিয়েছে তাদের জমি আগে উদ্ধার করতে হবে।

কয়েকশ কোটি টাকার ডোবা নালা সরকারি খাস হিসেবে রয়েছে। কিন্তু মহাসড়ক থেকে শুরু করে বেশীরভাগ অংশই ভরাট করে দখল করে নিয়েছেন। সরকারি জায়গায় পাকা দালনও উঠে গেছে। বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে রেখেছেন অধিকাংশ জায়গায়। পায়ো নিষ্কাশনে জায়গাও রাখাহয়নি। যার যার মতো করে ভরাট করে দখলে নিয়ে নিয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর তৈরীর জন্যই এই ডোবা ভরাট করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। তাকে কয়েকশ কোটি টাকার জায়গা উদ্ধার না করে এই ডোবা কেন ভরাট করে প্রধানমন্ত্রীর ঘর তুলতে হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here