প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বকেয়া পাওনাসহ ৯ দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ৪র্থ দিনের মতো ঢাকার ডেমরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলের পাটকলগুলোর শ্রমিকরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। প্রতিনিধি ও ব্যুরোর পাঠানো খবর-
ডেমরা : বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উৎপাদন বন্ধ রেখে সড়ক অবরোধ করেন রাষ্ট্রায়ত্ত লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুট মিলের শ্রমিকরা। তারা ডেমরা-যাত্রাবাড়ী, ডেমরা-রামপুরা ও ডেমরা-শিমরাইল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে গাছের গুঁড়ি, ঢালাইয়ের খুঁটি ও ইট-পাথর ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এছাড়াও ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার মোড়, ডেমরা চৌরাস্তাসহ ও সুলতানা কামাল ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বসহ কয়েকটি পয়েন্টে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। চরম দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা। আজও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
খুলনা : খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, দৌলতপুর, স্টার, আলীম ও ইস্টার্ন জুট মিলের শ্রমিকরা থালা হাতে নিজ নিজ মিল গেটে সমবেত হন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক ও রেল লাইনে অবস্থান নেন। অবরোধের ফলে নতুন রাস্তার মোড়, আটরা এলাকার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
অভয়নগর (যশোর) : যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ (জেজেআই) ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এতে শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় ট্রেন চলাচলে বিঘœ হয়। এছাড়া যশোর-খুলনা মহাসড়কের রাজঘাট অঞ্চলের দু’দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে রেলযাত্রী ও বাসযাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়।
পলাশ (নরসিংদী) : একই দাবিতে আন্দোলন চলছে ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলে। মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান জানান, ১০ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৩ মাস বেতন পান না। এ সমস্যা সমাধান না করলে সোমবার থেকে উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হবে। মিলের ফিনিশিং বিভাগের শ্রমিক রাশেদ, কারিগরি বিভাগের শ্রমিক আনোয়ার হোসেন, ওয়ার্কশপ বিভাগের শ্রমিক কবির হোসেন জানান, মজুরি না পাওয়ায় অতি কষ্টে জীবনযাপন করছি। কোনো দোকানদার আমাদের বাকি দিচ্ছেন না।
পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, সব মিলে সেটআপের অনুকূলে শ্রমিক-কর্মচারীদের শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে ৫ মে থেকে কর্মবিরতি ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা।