আলো আধারে অকার্যত সিদ্ধিরগঞ্জ-জালকুড়ি সড়ক, অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব সংবাদদাতা: একদিকে বাতির আলোতে আলোকিত হাস্যোজ্জ্বল সড়ক। অন্যদিকে ঘুনঘুনে অন্ধকারে নিমজ্জিত। এমনই দৃশ্যের দেখা মিলেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) আওতাভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ-জালকুড়ি সড়ক (দশ পাইপ রোড) সড়কের।

আলো আধারের এই কার্যত অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। একের পর এক নানা ঘটনা ঘটে গেলেও এ নিয়ে কারও যেন কোনো দায় নেই। এই নিস্পৃহতা বড়ই বিস্ময়কর।সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি-জালকুড়ি সড়কের কিছু অংশে সড়কবাতি জ্বললেও বেশিরভাগ অংশে নেই আলোকবাতি। এতে করে নানারকম অপকর্মের শিকার হন জনসাধারণ। 

দশ পাইপ সংলগ্নের ডাম্পিং ব্রিজের পরের অংশ অর্থাৎ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কমুখী থেকে সড়কবাতি থাকলেও ক্যানেলপাড়ের অংশে বাতির ছিটাফোঁটাও নেই। সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণে এই সড়ক মানুষের কাছে অন্যরকম একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠছে। দিবারাত্রি মানুষকে এখানে ছবি তোলা থেকে শুরু করে আড্ডায় মেতে থাকতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার শর্ট ফিল্মও করেন সিদ্ধিরগঞ্জ-জালকুড়ি সড়কে।এ সড়ক দিয়ে জনসমাগম তুলনামূলকভাবে যথেষ্ঠ থাকলেও ব্যস্ত এ সড়কে সন্ধ্যা হলেই আতঙ্কে থাকতে হয় পথচারীদের।
নতুন সড়ক হওয়ায় বিনোদনের জন্য দিবারাত্রি সড়কের উভয় পাশে আড্ডায় মেতে থাকে মানুষেরা। তবে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয় তাদের।অন্ধকার হওয়া বিভিন্ন সময় মানুষ সহসাই ছিনতাই, ডাকাতির শিকার হন। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাস, মাদকের মহড়ার সড়ক এটি।দেখা যায়, সন্ধ্যা হতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মাদকসেবন থেকে শুরু করে মাদক বিক্রির কাজও হয় অন্ধকার এ সড়কটিতে। বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এখানে হাটতে আসা মানুষদের।
জীবিকার তাগিদে খেটে খাওয়া দিনমজুর থেকে শুরু করে রিক্সাচালকদের পড়তে হয় ছিনতাইকারীদের কবলে। প্রায় সময় অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটে  সড়কটিতে। ঢাকার ডেমরার আমুলিয়া থেকে ভ্রমণে আসা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা ফেসবুক ও টিকটকে বিভিন্ন ভিডিও দেখে এখানে ঘুরতে আসলাম। রাস্তাঘাট ভালোই সুন্দর। আবার একটি পার্কের মতোও দেখলাম। তবে পার্কের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। সারা বিকেল ভালোই কাটালাম। তবে সন্ধ্যার পর মনে হয় এলাকাটি বিপদজনক।
যে পরিমাণ অন্ধকার এখানে মানুষকে মেরে ফেললেও টের পাবে না কেউ। দ্রুত এখানে পর্যাপ্ত আলো ও নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।মিজমিজি ক্যানেলপার এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, একটা সময় আমাদের এখানকার মানুষজন ভয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতো না। তবে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একটি সুন্দর  সড়ক করা হয়েছে।আমাদের সবার জন্য এটি উপকারী। এখন খুব সহজেই আমরা রিকশা নিয়েও এ সড়ক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ যেতে পারি।
তবে ডাম্পিং এর পর থেকে রাতের সড়কটা অসাধারণ লাগে। সিটি করপোরেশন যদি আমাদের এলাকার বাতিও জ্বালিয়ে দিতেন অন্তত ভয় থেকে রক্ষা পেতাম। জানতে চাইলে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ-জালকুড়ি সড়কের বাতি জ্বলে না সেটা আমার জানা ছিলো না।
যেহেতু বাতির কারণে পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, আমরা খুব শিঘ্রই ব্যবস্থা নিবো।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজ জানান, এ সড়কে নিয়মিত পুলিশ টহল দিয়ে থাকে। তারপরও আমরা বিশেষ নজরদারি রাখবো। প্রয়োজনে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here