প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মোঃ মাওলা (১৭) নামে এক কিশোর নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। নিখোঁজের ৪ দিন পর তার হাত-পা বাধা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহতের ৩ বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতদের দেখানো মতে ১৬ নভেম্বর শনিবার সকালে উপজেলার পূর্বাচল এলাকার ১০ নং সেক্টর থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও নিহতের পরিবারের দাবি নিহত কিশোর মাওলার বন্ধু ও তার প্রেমিকার অপর প্রেমিক নাছিম আরো কয়েকজনের সহায়তায় তাকে নির্মমভাবে খুন করেছে। উপজেলা ভোলাব ইউনিয়নের পাইস্কা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার এসআই নাজিমউদ্দিন জানান, গত ১৩ নভেম্বর বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ভোলাব ইউনিয়নের পাইস্কা এলাকার কাঠমিস্ত্রি এখলাছ উদ্দিনের ছেলে অটোরিক্সা চালক মোঃ মাওলাকে (১৭) রিজার্ভ ট্রিপের কথা বলে একই এলাকার তার বন্ধু কাউসার ও সবুজ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়ী থেকে অটোরিক্সাসহ ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফিরেনি।
বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির পর না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখোঁজের পিতা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। পুলিশ জিডির তদন্ত করতে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার (১৫ নভেম্মর) রাতে নিখোঁজ মাওলার মোবাইল ফোনসহ কাঞ্চন পৌরসভার তারাইল এলাকার মানিকের ছেলে নাছিমকে গ্রেপ্তার করেন। তার দেয়া তথ্যমতে তার সহযোগী পাইস্কা এলাকার সানাউল্যার ছেলে কাউসার ও মান্নানের ছেলে সবুজকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের দেখানো মতে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ পূর্বাচল উপশহরের ১০ নম্বর সেক্টরের ৩১৬ নম্বর রোডের ৮ নম্বর প্লটের ঝোপের ভিতর থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় নিখোঁজ মাওলার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন। এসআই নাজিম আরো জানান, নিহত মাওলার সাথে তারাইল এলাকার লিটনের মেয়ে স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী লামিয়ার সাথে প্রেম ছিল। এদিকে মাওলারই বন্ধু তারাইল এলাকার নাছিমও লামিয়াকে ভালবাসতো।
নাছিম লামিয়ার জীবন থেকে মাওলাকে সরে যেতে একাধিকবার মাওলাকে বললেও সে নাছিমের কথা প্রত্যাখ্যান করে। এরই জের ধরে নাছিম ও তার সহযোগী বন্ধু পাইস্কা এলাকার মান্নানের ছেলে সবুজ, সানাউল্যার ছেলে কাউসারসহ আরো কয়েকজন মাওলাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বুধবার বিকেলে রিজার্ভ ভাড়ার কথা বলে কাউসার মাওলাকে অটোরিক্সাসহ বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই পূর্বাচল উপশহরের ১০ নম্বর সেক্টরের ৩১৬ নম্বর রোডের ৮ নম্বর প্লটের ভিতর নিয়ে হাত-পা বেধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঝোপের ভিতরে লাশ গুমের উদ্দেশ্য ফেলে রেখে আসে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহামুদুল হাসান বলেন, প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কিশোরকে তার বন্ধুরা হত্যা করেছেন বলে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।