কে হচ্ছেন ১৪ দলীয় জোটের নতুন মুখপাত্র?

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ বর্ষীয়ান নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের নতুন মুখপাত্র কে হচ্ছেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর গুঞ্জন চলছে। দীর্ঘদিন নাসিমের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের আদর্শিক এ জোটের নতুন দায়িত্বে আসতে চাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক হেভিওয়েট নেতাই। কারণ ১৪ দলীয় জোটের বড় ও অন্যতম প্রধান দল হিসেবে আওয়ামী লীগই জোটের সমন্বয় করে থাকে।

এর আগে জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জননেতা মোহাম্মদ নাসিম। নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেল ১৩ জুন তিনি মারা যান। ১৪ দলের সমন্বয়ক হিসেবে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দায়িত্বে থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে এতদিন জোটের সমন্বয় ও মুখপাত্র একসঙ্গে দুটি দায়িত্বই সামলিয়েছেন মোহাম্মদ নাসিম। নাসিমের অবর্তমানে এখন কে হচ্ছেন নতুন মুখপাত্র- এ নিয়ে জোটসঙ্গী ও আওয়ামী লীগ নেতারা এখন তাকিয়ে আছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের দিকে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে দেশের রাজনীতিতে ১৪ দলের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, জোটের ঐক্য অটুট রাখতে পারবে এমন কারো হাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব তুলে দেবেন বলেই তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন বড় দল হিসেবে জোটের সমন্বয় ও মুখপাত্রের দায়িত্ব আওয়ামী লীগই পালন করে থাকে। জোটনেত্রী শেখ হাসিনা যাকে ঠিক করে দেবেন তিনিই ১৪ দলের মুখপাত্র হবেন। এখন করোনার দুঃসময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তাই এ বিষয়ে তাড়াহুড়োরও কিছু নেই। সব বিষয়ে জোট নেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।

জোটের মুখপাত্রের দায়িত্বে কে আসছেন এমন আলোচনা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন নেতাকে ঘিরেই চলছে মূল আলোচনা। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম।

সাধারণত জোটের সঙ্গে মূল দলের সমন্বয় করে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হয়। জোটের সঙ্গে মূল দলের সমন্বয় করা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগের মত বড় দলের সাধারণ সম্পাদকের অনেক সাংগঠনিক ব্যস্ততা থাকে। সেজন্য দলীয় সভাপতি অন্য কোনও জ্যেষ্ঠ নেতাকে এ দায়িত্ব দিয়ে থাকেন।

আমির হোসেন আমু স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ১৫ দল ও পরবর্তীতে ৮ দলীয় জোটের সমন্বয় করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গেও রয়েছে সুসম্পর্ক। জোটের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিয়েছেন নিয়মিত। ১৪ দলের শরিকদের দুর্বলতাও রয়েছে আমির হোসেন আমুর প্রতি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকও জোট মুখপাত্র হওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে নেই। রাজনীতিতে সজ্জন হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন ও গত নির্বাচনের আগে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের পক্ষে মাঠে কাজ করেছেন। তিনিও ১৪ দলের দায়িত্বে আসতে পারেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন আরেক হেভিওয়েট নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ। টানা চারবার দলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৯ সালের পর তিনি কিছু দিন ১৪ দলের সমন্বয়ও করেছেন। জোট নেতাদের সঙ্গে তার রয়েছে খুবই সুসম্পর্ক। দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ১৪ দলের সমন্বয়ের দায়িত্ব হানিফ ভালভাবেই পালন করতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের নামও এ পদের জন্য জোর আলোচনায় আছে। মায়ার সঙ্গে জোট নেতাদের অনেকটা রাজপথের সম্পর্ক। ২০১৪ সালে বিএনপির টানা অবরোধের সময় ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন মায়া। অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকায় ঢাকাকেন্দ্রিক তার রাজনৈতিক প্রভাবও আছে। সে হিসেবে মায়া জোটের রাজনীতিতেও বেশ ভাল করবেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।

বাম প্রগতিশীল জোট ১১ দল, আওয়ামী লীগ, জাসদ ও ন্যাপ মিলে ১৪ দল গঠিত হয়। বর্তমানে এ জোটের প্রধান দলগুলো হল ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, বাসদ (একাংশ), জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরিকত ফেডারেশন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here