প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, গত ৫০ বছরে ইসি নিয়োগে কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়নি। সংবিধানে এটা বাধ্যতামূলক হলেও সব ক্ষমতাসীন সরকার এটা লঙ্ঘন করেছে। সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকলে এই আইন করা অনস্বীকার্য।
রবিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ‘চলমান স্থানীয় নির্বাচন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ- আমার কথা’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মাহবুব তালুকদার বলেন, আইন করা অনস্বীকার্য। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব দলের সমঝাঝোতা ছাড়া এহেন আইন করা অসম্ভব। তবে আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়। আইন প্রণয়ন নির্বাচনের অন্যতম বা প্রধান সোপান হলেও অবশ্যই তা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
সমঝোতা না হলে অরাজকতার আশঙ্কাও করেন মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সমঝোতা না হলে দেশব্যাপী অরাজকতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা করি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচনে এখন কিছু জটিল অসুখ চলমান। মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কি না!
তিনি জানান, ৭ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ভোট পড়ে ২০ শতাংশ। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ৭০ শতাংশ ভোট পড়ে। চট্টগ্রাম নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে জামানত হারিয়েও একজন প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। স্বভাবত ঐ নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থীর সবাই জামানত হারিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বিশ্বে নজিরবিহীন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতে, নির্বাচনে একটা নতুন ধারা সূচিত হলো। এই উপ-নির্বাচনের ফল নির্বাচনের প্রতি জনগণের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ বলা হলেও ইতিবাচকভাবে বলা যায়। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং জনসমর্থন না থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন।’
