স্বাস্থ্যবিধির “স্বও” নেই গণপরিবহনে,ডাবল ভাড়া দিয়েই নামতে হয় যাত্রীদের

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনে বুধবার (৩১ মার্চ) থেকে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের জন্য ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্ত এদিন চট্টগ্রাম নগরী ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। যাতে নির্দেশনা মানেনি পরিবহন শ্রমিকরা।

যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি যাত্রী সিটে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনতো দূরের কথা উল্টো দাঁড়িয়েও যাত্রী নিয়েছে তারা। এতে করে ভাড়া বৃদ্ধিতে যাত্রীদের কপাল পুড়লেও খুলে গেছে পরিবহন শ্রমিকদের কপাল। অধিকাংশ পরিবহন কর্মীর মুখে ছিলো না মাস্ক-ই। নেই হ্যান্ডস্যানিটাইজারের ব্যবস্থা।

বুধবার (৩১ মার্চ) সারাদিন নগরীর ইপিজেড, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, জিইসি সরেজমিনে ঘুরে গণপরিবহণের এমন চিত্র দেখা গেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি দুই সিটে একজন যাত্রী-পরিবহন করার কথা থাকলেও অধিকাংশ গণপরিবহনে ভেতরে এবং বাইরে যাত্রীপরিবহন করছে।

সাইদুর রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, বাদামতলী থেকে জিইসির আগের ভাড়া সাত টাকা কিন্তু ৬০ শতাংশ বেশি দিলে সেটা দাঁড়ায় ১১ টাকা। কিন্তু যখন ভাড়া দিতে গেলাম তখন বললো ডাবল ভাড়াই দিতে হবে নয়ত আরেক সিটে যাত্রী বসতে দিতে হবে। বাধ্য হয়ে ডাবল ভাড়া দিয়ে নামতে হলো। ১০ নম্বর রোডের বাসচালক মো. সোহান বলেন, ভাড়া যে ৬০ ভাগ বাড়াইছে সেটা যদি একদম ঠিকভাবে হিসাব করি তাহলে তো অনেক ঝামেলা। যেমন যে জায়গায় আগে ভাড়া আট টাকা ছিল সেটা ৬০% হিসাবে আসে ১২ টাকা ৮০ পয়সা। এখন আমাদের বা যাত্রীদের কারো কাছেই তো ভাংতি পয়সা নেই। তাই সোজা ১৩ টাকা দিতে বলি। এরপরই যাত্রীরা ঝগড়া শুরু করে।

সড়কে যাত্রী-চালকের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থানের জেরে দুর্ভোগ বাড়ছে গণপরিবহনগুলোতে। দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিয়েছি। তবে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার ফলে একদিকে যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে যেখানে আমরা দুই সিটের ভাড়া পেতাম সেখানে এখন আমরা ভাড়া কম পাচ্ছি। ভাড়া বৃদ্ধি হলেও সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন যাতে যাত্রী এবং পরিবহন সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, এদিন নগরের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যদিও আমাদের স্বল্পসংখ্যক অভিযানে সমগ্র নগরীকে মনিটর করা আসলেই কঠিন। তবে বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) এবং বিআরটিএ থেকেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আমাদের প্রয়োজন যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার এবং তাতে গণপরিবহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহনের কথা বলা হয়েছিলো। এ প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের আগে ৬০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। এর আগে গত বছর ৩১শে মে থেকেও গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশ দেয়ার পরেও ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়েছিলো সরকার। পরে পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে আবার স্বাভাবিক যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছিলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here