প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে ৬নং ওয়ার্ডের আইলপাড়া এলাকার চিহিৃত মাদক সম্রাট ও কয়েকটি মামলার আসামী মোহাম্মদ আলীর তৎপরতা থেমে নেই। মোহাম্মদ আলী এলাকায় বহিরাগত। তাঁদের পূর্বপুরুষ হিন্দু। তাঁর পিতা ফকির মোহাম্মদ ছিলেন কলকাতার হিন্দু পরিবারের সন্তান। হিন্দু-মুসলিম রয়েটের সময় বাংলাদেশে এসে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন তিনি।
এরপর নাম রাখা হয় ফকির মোহাম্মদ। স্থানীয় সিরাজ মিয়ার সৎ বোনকে বিয়ে করে সুমিলপাড়ায় মামার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন ফকির মোহাম্মদ। পরে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্ত্রীর বোন কহিনুরকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে জন্ম নেয় মোহাম্মদ আলী ও নুর হোসেন। এরমধ্যে নুর হোসেন যুবলীগ নেতা খোকন হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আর মোহাম্মদ আলী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি।
এদিকে মোহাম্মদ আলী কৌশল পাল্টেছে মাদক ব্যবসার। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট স্থানে নিজস্ব লোক দিয়ে সে মাদক পৌছে দেয়। পুলিশী তৎপরতার কারণে নতুন পন্থায় তার মাদক ব্যবসা নিয়ে এলাকার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে শংকিত। মোহাম্মদ আলী বাহিনীতে বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে তার ‘বড় ভাই’ দের শেল্টারে। স্থানীয়দের তথ্যমতে, নাসিক ৬নং এই ওয়ার্ডের সুমিলপাড়া, চর শিমুলপাড়া, এসওরোড, বার্মাইষ্টার্ন, বিহারীপট্টি, নতুন বাজারসহ ৫/৬টি স্পটে প্রকাশ্যে চলছে তাঁদের বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের কেনা-বেঁচা।
এসব স্পটে মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা মাদক সেবন ও সরবরাহও করছে দাপটের সাথে। তাঁর এই অবাধে মাদক ব্যবসা পরিচালনার কারণে সিদ্ধিরগঞ্জে দিন দিন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার মধ্যে তরুণ যুব সমাজের সংখ্যাই বেশি। ফলে চরম উৎকন্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ঐসব এলাকাসহ নাসিক ৬নং ওয়ার্ড এলাকার বেশিরভাগ অভিভাবকরা। এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি, ইভটিজিং, মারধর, হত্যা মামলা সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
সাতঘোড়া সিমেন্ট ফ্যাক্টরির এক অফিসারকে রাস্তায় রড দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় মোহাম্মদ আলী। এই মামলায় তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও জামিনে বেড়িয়ে এসে আবার এলাকায় অরাজকতা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত ১৯ মার্চ যুবলীগ কর্মীকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মামলারও ১৩ নম্বর আসামী মোহাম্মদ আলী। এর আগেও ডিবি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের জন্য তাঁর বাসায়একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু সে কৌশলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শক্তিশালী একটি সঙ্গবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে মোহাম্মদ আলী ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী নুর হোসেন। কমপক্ষে ৮/১০ জন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে এ সিন্ডিকেটে। এ চক্রটি পাইকারী ও খুচরা ভাবে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা বিক্রি করে থাকে। এলাকাবাসী মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশ রয়েছে-যত প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীই হোকনা কেন, কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।