প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ এবার মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে দু’বারে মোটা অংকের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সিদ্ধিরগঞ্জের এএসআই মোমেন আলমের বিরুদ্ধে। এরআগে তিনি ক্রসফয়ারের ভয় দেখিয়ে ২ লাথ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। রোববার (২০ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বার্মাইষ্টার্ণ এলাকার ইলিয়াছ নামে এক ভুক্তভোগি আইজিপি, ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) ও পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ইলিয়াছ অভিযোগে উল্লেখ করেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই মোমেন আলম, কনস্টেবল কাবিউল ও সোর্স মিদুল গত ৮ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে তার বাসায় ঢুকে সমস্ত জিনিসপত্র তছনছ করে নগদ ৩৭ হাজার টাকা ও ইলিয়াছের মেয়ের পায়ের একজোড়া রুপার তৈরি নুপুর নিয়ে তারা ইলিয়াছ বলে ‘একটু বাইরে আসেন।ইলিয়াছ বাইরে এসে তাদের প্রশ্ন করেন কি ব্যাপার। তখন তারা ইলিয়াছকে বলে সামনে একটি সিএনজিতে একজন লোক বসা আছে আপনি এই লোকটাকে চিনেন কিনা। এই কথা বলার পর ইলিয়াছ সিএনজির সামনে গেলে তারা ইলিয়াছকে টেনে হেছড়ে সিএনজিতে তুলে নাভানা সিটির পশ্চিম পাশের এক কোনায় নিয়ে ইলিয়াছকে সিএনজির ভেতরেই চড়-থাপ্পড় মেরে বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখিয়ে ১ লাখ টাকা দাবি করে।
ইলিয়াছ টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে চালান দিবে বলে বলে হুমকি দেয়। ইলিয়াছ তাদের এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তারা পুনরায় ইলিয়াছের দুই কানে ও গালে চড়-থাপ্পড় মেরে বলে ‘জেলার এসপি ও থানার ওসি আমার পকেটে থাকে’। তাদের না জানিয়ে আমি কোনো কাজ করিনা। পরে ইলিয়াছ মার সহ্য না করতে পেরে তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ১ লাখ টাকা জোগাড় করে নিয়ে আসতে বলে। পরে ইলিয়াছের স্ত্রী অনেক কষ্টে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৭৫ হাজার টাকা জোগাড় করে নিয়ে তাদের হাতে দিলে তারা ইলিয়াছকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে আবার গত ১৭ অক্টোবর দুপুর ১টার সময় ইলিয়াছ তার বন্ধু কাজী উকিলের অফিসে বসা ছিলো। এমন সময় এএসআই মোমেন আলম ও কনস্টেবল কাবিউল অফিসের ভিতরে গিয়ে ইলিয়াছকে বলে তুমি ইয়াবা ব্যবসা করো।
তখন তারা ইলিয়াছ ও বাবুকে হাতকড়া পড়িয়ে চড়-থাপ্পড়, কিল ঘুষি মারতে থাকে। তারপর বলে ইলিয়াছ কত টাকা দিবি বল। ইলিয়াছ টাকা দিতে না চাইলে তাকে ও বাবুকে সিএনজিতে করে আবার নাভানা সিটির পূর্বের জায়গায় নিয়ে মারধর করতে থাকে। পরে তারা ইলিয়াছ ও বাবুর কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে। ইলিয়াছ টাকা কোথা থেকে দিব বললে তারা বলে আচ্ছা ৫০ হাজার টাকা কম দিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আয়।
ইলিয়াছ বলে তার কাছে কোন টাকা নেই। এ কথা বলার পর তারা ইলিয়াছকে বলে ‘নগদ ১ লাখ টাকা পরে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দিস’। পরে ইলিয়াছ বাসায় ফোন করলে তার স্ত্রী মানুষের কাছ থেকে ধার করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসে। টাকাটা তাদের হাতে দিলে তারা ইলিয়াছকে ছেড়ে দিয়ে ২দিনের মধ্যে বাকি ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে তাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় ইলিয়াছ ও বাবুকে বলে যায় এই ব্যাপারে কাউকে যেন কিছু না বলি, বললে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিবে।
উল্লেখ্য গত সেপ্টম্বর মাসে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা থেকে প্রথমে র্যাব, পরে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মিঠু নামে এক ব্যক্তিকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে আসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই মোমেন আলম। পরে মিঠুর স্ত্রী দিলারার কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আদায় করে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। তার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, হুমকি-ধামকি দিয়ে মিঠুর স্ত্রীকে ম্যানেজ করেছিল এ এস আই মোমেন।
এদিকে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোমেন আলম। তার দাবি, ইলিয়াছ নামে তিনি কাউকে চেনন না। যদি এ নামে কাউকে ধরতাম তাহলে তাকে ছাড়তাম কেন? এসব মিথ্যা কথা।