প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সারাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফনে এগিয়ে এসে দেশ-বিদেশে আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার তার নমুনা সংগ্রহের পর শনিবার সকালে দেওয়া ফলাফল তিনি জানতে পারেন তিনি করোনা পজিটিভ। শনিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে খোরশেদ নিজেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেন।
সেই সঙ্গে তার অনুপস্থিতিতে করোনায় আক্রান্তদের দাফন, ত্রাণ কার্যক্রম, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্লাজমা সংগ্রহ ও টেলিমেডিসিন কার্যক্রম কিভাবে চলবে সে বিষয়েও তিনি লাইভে দিক নির্দেশনা প্রদান করে তার নিজ এলাকা ও দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন। ঈদের একদিন আগে তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনাও করোনায় আক্রান্ত হন। বর্তমান খোরশেদ তার নিজ বাড়ির একটি কক্ষে আইসোলেশনে রয়েছেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম দিকে যখন দেশের কোথাও মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা যাচ্ছিল না ঠিক সেই মুহুর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোরশেদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন ও সৎকারের ঘোষণা দেন। এরপর থেকে তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত মোট ৬১ জনকে দাফন ও সৎকার করেছেন।
নারায়ণগঞ্জে খোরশেদই প্রথম কোন জনপ্রতিনিধি যিনি দেশে করোনা সংক্রমনের পরপরই তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর জনসচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরী হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিজ ওয়ার্ডবাসীর মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ করেন। গত ৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন করা হলে শুরু করেন ত্রাণ তৎপরতা। সবশেষে শুরু করেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন ও সৎকার।
এক্ষেত্রে তিনি হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ করেননি। করোনায় মৃত অনেক হিন্দু ব্যক্তির কোন স্বজন শ্মশানে না আসায় খোরশেদ নিজেই মৃত ব্যক্তির মুখাগ্নি করেছেন। কাউন্সিলর খোরশেদ এসব কাজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ব্যাপক ভাবে আলোড়িত হয়। করোনাকালে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কারণে তাকে নারায়ণগঞ্জবাসী ‘বীর বাহাদুর’ ও ‘করোনা হিরো’ খেতাবে ভূষিত করে।
ফেসবুক লাইভে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে খোরশেদ জানান, তার অনুপস্থিতিতে দাফন ও সৎকার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তার টিমের সদস্য মোঃ জয়নাল। আর ত্রাণ বিতরণ, প্লাজমা সংগ্রহ ও টেলিমেডিসিন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তার টিমের নাজমুল কবীর নাহিন।
সার্বিক তত্বাবধানে থাকবেন তার ব্যক্তিগত সহকারি আলী সাবা টিপু। এছাড়া টেলিফোনে তিনি সব কাজেরই তত্ববধান করবেন বলে জানান। সেই সঙ্গে শিগগিরই সুস্থ হয়ে তিনি আবারও এসব জনহিতকর কাজে যোগদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।