প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ পীর আবদুল মান্নান: এই বুঝি করোনায় আক্রান্ত হবে,এই ভয়ে রাতের আধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে, দেশের অভ্যান্তরের জেলাগুলো থেকে কর্মসংস্থানের জন্য আসা মানুষ গুলো। এই নারায়ণগঞ্জে ভালো নেই শ্রমিকরা। তারা খাবার পাচ্ছে না। করোনা ভাইরাস নারায়ণগঞ্জে মহামারি আকার ধারণ করছে।
প্রতিদিন করোনা রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারী-বেসরকার সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লকডাউন করে দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। বাড়ছে খাদ্য সংকট। বৈষম্যের শিকার হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ।
তাই বাইরের জেলা থেকে সুখের সন্ধ্যানে নারায়ণগঞ্জে এসে কষ্টে আছে মানুষ। করোনার ভয়ে শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ থেকে পালাতে শুরু করেছে। তারা রাতের আধারে পালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কৌশলে। পালাতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। তারপরও বাঁধা মানছে না । মঙ্গলবার রাতে ফতুল্লায় ট্রাক ভাড়া করে পালানোর চেষ্টা করেছিল প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।
কিন্তু ফতুল্লা পুলিশ সেই শ্রমিকদের আটকে দিয়ে যানবাহন জব্দ করেছে। এদিকে আটককৃতরা পুলিশের কাছে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন এহেনে আমগেহা কাছে ট্যাকা নাই, খাওন নাই। আমরা গ্রামে গেলে খ্যাতের সবজি ধান খাইয়া বাঁচতে পারমু। আমগো ছাইরা দেন, নাইলে খাওন দেন।
এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় বাল্কহেড যোগে নদীপথে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে ফতুল্লার বুড়িগঙ্গা নদীতে ধাওয়া করে প্রায় ৭২ যাত্রীকে আটক করা হয়। পরে যাত্রীরা যেখান থেকে এতে উঠেছিল, সেখানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে এবং ট্রলার ও বাল্কহেড আটক করা হয়েছে।
ওসি আরো জানান, ওই রাতেই ফতুল্লার টাগারপার থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হওয়া যাত্রী ভর্তি তিনটি পিকআপ আটক করা হয়। এতে প্রায় দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। তিনি আরও জানান, এ রাতেই মাউরাপট্টি থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করা যাত্রী ভর্তি চারটি পিকআপ আটক করা হয়েছে। এসব পিকআপে প্রায় দুই শতাধিক যাত্রী ছিল।
ওসি জানান, ফতুল্লার পঞ্চবটী থেকে কিশোরাগঞ্জ যাওয়ার পথে সাইনবোর্ড এলাকায় প্রায় ৬০ যাত্রীসহ একটি ট্রাক আটক করা হয়। সব যাত্রী যেখান থেকে উঠেছিল, সেখানে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি গাড়িই থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিক সুরাইয়া বলেন, “হয় খাওন দেন, নাইলে যাইতে দেন, কি করমু, কাজকর্ম বন্ধ”। পুলিশ জানায়, আটককৃতরা বেশিরভাগই রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা।