মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় করোনায় চাকরি হারিয়ে ইমামের আত্মহত্যা!

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জেলা প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় কর্মরত এক ইমাম করোনাকালে চাকরি হারিয়ে হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানায়, চাকরি চলে যাওয়ার পর হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। তারপর থেকে কারো সাথে তার যোগাযোগ ছিল না। ওই ইমামের নাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহিম পাটোয়ারী (৪২)। তিনি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুপসা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তিনি প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে রমজানের কয়েক দিন আগে তাকে চাকরিচ্যুত করে মসজিদ কমিটি। সরেজমিনে পুরান বাউশিয়া গ্রামে গিয়ে মুসল্লিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে এই মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করেন হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহিম পাটোয়ারী। এক সময় এ মসজিদটি ভাঙ্গা টিনসেড ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ একতলা দালান। মসজিদটির আধুনিকায়নের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল ওই ইমামের। তবে তিনি অ্যাজমা রোগী ছিলেন। সম্প্রতি শবে বরাতের কয়েক দিন আগে তার শ্বাসকষ্ট বাড়লে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় মসজিদ কমিটি।

চিকিৎসা নিতে বাড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় তার চাকরি চলে গেছে তার বদলে অন্য ইমামকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় মসজিদে ফিরে আসার জন্য একাধিক ব্যক্তিকে অনুরোধ করেন তিনি। তবে মসজিদে ফেরার সকল পথ বন্ধ জেনে নিজের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ করে সবার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন ওই ইমাম। এ দিকে সম্প্রতি গত কয়েক দিন ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় পথচারী মুসল্লিরা নামাজ পড়েন এমন একটি জায়গায় থাকা শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে গত রোববার রাতে সেখানে ফাঁসিতে ঝুলতে থাকা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

চাকরি হারিয়ে হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন বলে অনুমান তাদের। পুরান বাউশিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবু জায়েদ বলেন, ইমাম সাহেব এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। মসজিদের পেছনে তার অনেক অবদান রয়েছে। জনপ্রিয় না হলে তিনি দীর্ঘ দিন মসজিদে থাকতে পারতেন না। তার আত্মহত্যার খবরে তারা সবাই অবাক হয়েছেন। মসজিদ কমিটির সভাপতি রাজা মোল্লা বলেন, হুজুরের শ্বাসকষ্ট বাড়ায় শবে বরাতের আগে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। মুসল্লিদের সাথে কথা বলে নতুন ইমাম ঠিক করেন তারা এবং ওই ইমামকে আর ফেরার দরকার নেই বলে জানিয়ে দেয়া হয়। তার যাবতীয় পাওনাদি বিকাশের মাধ্যমে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

তবে তিনি কি কারণে আত্মহত্যা করলেন এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই তার। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ইমামের ডায়রি থেকে পাওয়া তার বাড়ির একাধিক মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here