লালমনিরহাটে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী পালিয়েছে।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ লালমনিরহাট সংবাদদাতা: পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় রোমান প্রবাসী এক হতভাগার সুন্দরী স্ত্রী আকলিমাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে রোকনুজ্জামান রোকন (২৭) নামে আর এক রোমান প্রবাসী। আকলিমার ঘরে ১০ বছরের স্কুল পড়ুয়া কন্যা সন্তান থাকলে এখনও বিয়ে হয়নি ঐ লম্পট রোকনের। ফলে এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

রোকনুজ্জামান রোকন (নেন্দা) ঔ উপজেলার কেতকীবাড়ি এলাকার মৃত জমসের আলীর ছেলে। সে ৭ বছর যাবত রোমানে থাকে। আকলিমা বেগম একই এলাকার সাইদুল ইসলাম (সেল্লুর) স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানের মা। এ ঘটনায় সাইদুল ইসলাম থানায় একটি জিডি করেন। জানা গেছে, রোমান প্রবাসী সাইদুল ইসলাম (২৯) ১২ বছর আগে বিয়ে করেন একই উপজেলা সিন্দুর্নার ইউনিয়নের তমোর চৌপুতী এলাকার জলিমুদ্দিনের মেয়ে আকলিমাকে। বিয়ের পর তাদের সুখের সংসার চলছিলো। সংসারে ১টি মেয়ে বাচ্চাও আসে। যার বয়স ১০ বছর। সে স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে।

সাইদুল ইসলামের স্ত্রীর প্রতি কুনজর পরে ঔ এলাকার মৃত জমসের আলীর ছেলে ও রোমান প্রবাসী রোকনুজ্জামান রোকনের (নেন্দা)।রোকন সম্পর্কে সাইদুলের ফুফার বড় ভাইয়ের ছেলে হওয়ায় বাড়িতে ছিলো তার অবাধে যাতায়াত। সেই সুযোগে সাইদুলের স্ত্রী আকলিমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পরকীয়ার প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ করে লম্পট চতুর রোকন। আকলিমা একান্ত কাছে পাবার জন্য এরপর শুরু হয় রোকনের নতুন পরিকল্পনা। গত ৪ বছর আগে রোকন দেশে এসে সাইদুলকে প্রচুর টাকা রোজগার করার জন্য রোমানে নিয়ে যায়। তারা দুজনে রোমানে থাকাকালীন সময়ে মাঝেমধ্যে রোকন দেশে এসে আকলিমার সাথে অবাধে মেলামেশা করে।

এদিকে সাইদুল রোনানে সাড়ে ৩ বছর থাকার পর অসুস্থ হলে বাড়িতে চলে আসে। চিকিৎসা শেষে গত ১৭ রমজান আবারও সে রোমানে চলে যায়। সেখানে ২ মাস থাকার পর আবারও অসুস্থ হলে গত দুইমাস আগে বাড়িতে চলে আসে। সাইদুল দেশে আসার কয়েকদিনের মধ্যে রোকনও দেশে চলে আসে। এবারে রোকন দেশে আসলে সাইদুলের বাড়িতে তার অবস্থান করার হাড় বেড়ে যায়। রোকনের পরামর্শে আকলিমার গত রবিবার (২০ অক্টোবর) রাতে সাইদুলকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ায়। সাইদুল ঘুমিয়ে পড়লে রোকনের সাথে আকলিমা পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে সাইদুলের ঘুম থেকে উঠে দেখে তার স্ত্রী ঘরে নেই এবং আলমারির ড্রয়ার খোলা। বিভিন্ন যায়গায় তাদের খোজাখুজি করার পর কোথাঅ তাদের না পেলে গত সোমবার ২১ অক্টোবর দিন গত রাতে থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন সাইদুল ইসলাম।

এবিষয়ে কথা হলে সাইদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, স্ত্রী সন্তানের সুখের জন্য আমি রোকনের পরামর্শে বিদেশ গিয়েছিলাম। সেই স্ত্রীই আজকে আমার সাথে বেইমানি করলো। এখন আমি সমাজে কিভাবে মুখ দেখার আর নিষ্পাপ এই কন্যা সন্তানটিকে আমি কিভাবে মানুষ করব বলে সে হাউমাউ করে কাদতে থাকে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাইদুল ইসলাম বলেন, রোকনকে আমি নিজের ভাইয়ের মতো দেখতাম। সেই ভাই বিশ্বাস ঘাতকের মতো আজকে আমার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেলো। যাবার সময়ে তারা নগদ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, দেড় ভড়ি ওজনের স্বর্ণালংকার, ও কাপড় চোপড় নিয়ে গেছে, এবং রোকনের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগীতায় আকলিমাকে নিয়ে গেছে বলে সাইদুল ইসলাম দাবী করেন।

এদিকে রোকনুজ্জামান রোকনের বাড়িতে তার পরিবারের সাথে কথা বললে তারা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। বর্তমানে তারা ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান। রোকনুজ্জামান রোকনের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে দেখা পাওয়া যায়নি এবং সেলফোন নাম্বারে ফোন দিলে তা সুইচঅফ দেখায়। সাইদুল ইসলাম শশুর ও আকলিমার বাবা জলিমুদ্দিন বলেন, আমি মেয়েকে ১২ বছর আগে বিয়ে দিয়েছি। তাদের সুখের সংসার চলছিলো। এর মাঝে যে হঠাৎ করে একি হলো আমি কিছুই জানিনা। তবে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করা হচ্ছে তবে মেয়েটিকে কোথায় পাওয়া যাচ্ছেনা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মেয়ে রোকনের সাথে পালিয়ে গেছে কিনা তা আমি জানিনা। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি খুবই টেনশনে আছেন বলে জানান।

ঐ এলাকার ইউপি সদস্য পরমেশ্বর এর সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ঘটনার বিষয় জানার পর রোকনের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তারা পালিয়ে বিয়ে করে থাকলে তার কাগজপত্র না হয় মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেবার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে।
হাতীবান্ধা থানায় কর্মরত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই মামুন বলেন, ঘটনা স্থলে গিয়ে সাইদুলের স্ত্রীকে নিয়ে রোকনের পালিয়ে যাবার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। মেয়েটিকে ফিরিয়ে দেবার জন্য রোকনের পরিবারকে খুবই চাপ দেয়া হচ্ছে। রোকনের সকল ভাই বর্তমানে পলাতক। তবে দুইএক দিনের মধ্যে সাইদুলের স্ত্রীকে রোকন ফিরিয়ে দিবে বলে তার বিশ্বাস।

এবিষয়ে কথা হলে হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) উমর ফারুক বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পাবার পর ঘটনা স্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছিলো। রোকনুজ্জামান রোকনের পরিবারকে চাপ দেয়া হচ্ছে, মহিলাটিকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। যদি তারা পালিয়ে গিয়ে সাইদুলকে ডিভোর্স করে রোকনকে বিয়ে করে থাকে তাহলে ডিভোর্সের কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here