ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধন করেন: প্রধানমন্ত্রী

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ দেশের সকলকে ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। এটা মোটেও সঠিক না। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বুধবার (১৩ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ৮টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন ধর্ম যার যার। আমরা এটাই বলি ধর্ম যার যার উৎসব সকলের। কাজেই উৎসব সকলে আমরা এক হয়ে পালন করব। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি, আমরা বাঙালি, আমাদের দেশে কিন্তু সব ধর্মের মানুষ বাস করে। সেখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাইতো আছে।

সব জাতি-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বিকশিত করতে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন আমাদের এই যে সকল ধর্ম-বর্ণ, বিভিন্ন ছোট ছোট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, তাদের নিজস্ব যে সংস্কৃতি, অর্থাৎ শুধু ধর্মালম্বী না, আমাদের যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদেরও কিন্তু নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা আছে, সংস্কৃতি আছে। সেগুলোতে যাতে বিকশিত হয়। সেদিকে দৃষ্টি রেখেও কিন্তু আমরা প্রত্যেকটি এলাকায় তাদের এই সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ আমরা করে দিয়েছি।

অতীতের সংস্কৃতির সাথে আধুনিক সংস্কৃতিও রপ্ত করতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন আবহমান কাল থেকে যেগুলো চলে আসছে এগুলোও যাতে বিকশিত হতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের ঐতিহ্য, এগুলো আমরা ভুলব না। কিন্তু আমরা সামনের দিকেও এগিয়ে যাব। আধুনিক যুগের যত সংস্কৃতি সেটাও আমরা রপ্ত করব। সেভাবে আমরা করতে চাই।

সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন আজকে পহেলা বৈখাশ আমরা উদযাপন করি। এই একটা উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে, সব বাঙালি এক হয়ে আমরা কিন্তু এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। যেখানে সকলের একটা চমৎকার মিলন কেন্দ্র হয়।… আমাদের প্রবাসীরাও এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেন।

অতীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বাধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন পহেলা বৈশাখ, যে পহেলা বৈশাখ পালন করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ১৪০০ সাল বরণ করতে যেয়ে আমরা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এটা হচ্ছে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনকি বটমূলে বোমা হামলা করেও মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। যাতে করে আমাদের এই সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ হয়ে যায়।

আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি-ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই ঐতিহ্য আমাদেরকেই ধারণ করে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে চর্চা করতে পারে, বিকশিত করতে পারে এবং আরও এই আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সম্মিলন ঘটিয়ে যেন এটাকে যেন আরও বেশি উৎকর্ষ সাধন করতে পারে সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেটাই আমরা দেব।

দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী আমরা হয়েছি আমাদের এই অগ্রযাত্রা অবশ্যই আমাদের ধরে রাখতে হবে।

সংস্কৃতি চর্চাটাকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই আমাদের সংস্কৃতি চর্চাটাকে আমরা আরো সমৃদ্ধশালী করতে পারি। সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেব।সংস্কৃতি চর্চায় সহযোগিতা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিপ্রান্ত হতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here