প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জেলা ও মহানগর আাওয়ামী লীগের নতুন কমিটি নানা আলাপ আলোচনা চলমান থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেই আলাপ আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। সহসাই দেখা মিলছে না নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে আপাতত সকল কমিটির গঠন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। যে সকল জেলা ও মহানগর সম্মেলন বাকী রয়েছে জন্মশতবার্ষিকী পালন শেষে সেগুলোর সম্মেলন করা হবে।
আপাতত সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী নিয়েই ব্যস্ত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। সবশেষ ১৯ ফেব্রুয়ারী বুধবার ঢাকা বিভাগীয় সকল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অনুষ্ঠিত যৌথসভায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। যেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র বলছে, ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই বছর পর ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে বিলুপ্ত শহর আওয়ামী লীগের কমিটিতেও সভাপতি ও সেক্রেটারী পদে ছিলেন আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা। কমিটির মেয়াদ ছিল ২ বছর। কিন্তু পার হয়ে গেছে ৭ বছর।
একই সাথে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আবদুল হাইকে সভাপতি, সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।
জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল একের পর এক নানা ঘটনায় বিতর্কিত হতে থাকেন। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদেরকে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। সবশেষ জেলা আওয়ামী লীগের অধীনে থাকা বিভিন্ন থানা উপজেলা কমিটি গঠনেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল তৃণমূলের মন জয় করতে পারেনি। তারা তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা দেখাতে পারেনি। সবসময় প্রভাবশালী নেতাদের মতামতের উপরই নির্ভর করতে হয়েছে।
এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর তাদের অধিনে প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি ২০১৭ সালের মে মাসে গঠন করা হবে বলে ঘোষণা করা হলেও কমিটি গঠনের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের কয়েকটি ওয়ার্ডের পদপ্রার্থীরা। কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগও তাদের চোখে পড়ছেনা বলে জানান তারা। ইতোমধ্যে বছর দুয়েক পেরিয়ে গেলেও কমিটির কোন লক্ষণ দেখছেন না নেতাকর্মীরা। সবশেষ কেন্দ্রীয় নির্দেশনাতেও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো উদোগ দেখা যায়নি।
যার সূত্র ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নানা গুঞ্জ ভেসে বেড়াচ্ছিল।
বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে একটু জোরেসোরেই আলোচনা শোনা যাচ্ছিল। কেউ কেউ আবার আগামী ৬ মার্চের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি আসছে বলে জানিয়েছিলেন। সেই সাথে পদ পদবীর জন্য অনেকে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ র্পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আটকে যাচ্ছে। ১৯ ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগীয় সকল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী নিয়ে ব্যস্ত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সেই সাথে আপাতত নতুন কোন কমিটি গঠন করা হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) ঢাকা বিভাগীয় সকল সাংগঠনিক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক সকলের উদ্দেশ্য বলেছেন জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে হবে। জন্মশতবার্ষিকী পালনকে ঘিওে দলের ভাবমূর্তির দিকে নজর রাখতে হবে। অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করা যাবে না। যে সকল জেলা ও মহানগরের কাউন্সিল হয় নাই সেগুলো জন্মশতবার্ষিকী পালন শেষে করা হবে। জন্মশতবার্ষিকীতে কিছু করা যাবে না। জন্মশতবার্ষিকীর পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে সকল কমিটির ঘোষণা করা হবে।
