প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাবেন কিনা- সে বিষয়ে আগামী ৫ ডিসেম্বর আদেশ দেবেন সুপ্রিম কোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে বেগম জিয়ার জামিন বাতিল হলে তাঁর আইনজীবীদের করা আবেদনের আংশিক শুনানি নিয়ে জামিন আদেশের বিষয়ে ৫ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট চেয়েছেন আদালত। আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল বিভাগে এ রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ সদস্যের বেঞ্চে এ জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
এদিন বেগম জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেগম জিয়ার জামিন আবেদন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলে ওইদিনও পূর্ণাঙ্গ শুনানি গ্রহণের ইচ্ছে পোষণ করে আদেশের জন্য ২৮ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্টের জামিন খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওইদিনই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৪০১ পৃষ্ঠার এ আপিল আবেদন দাখিল করা হয়। ১৭ নভেম্বর জামিন আবেদন উপস্থাপনের পর চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান শুনানির জন্য ২৫ নভেম্বর তা পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ জুলাই বেগম জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা আপিল আবেদন দায়ের করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ৭ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বেগম জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে মামলার নথি তলব করেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয় মামলার নথি। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালত মিলে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এখন ১৭টি মামলা বিচারাধীন আছে। এর মধ্যে জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এই দুটি মামলায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। অরফানেজ মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল আপিল বিভাগে ও চ্যারিটেবল মামলায় ৭ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে। এ দুটি মামলায় জামিন পেলেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার মুক্তির পথ বাধামুক্ত হবে।