তাপপ্রবাহের কারণে আইনজীবী ও বিচারকদের ড্রেসকোড পরিবর্তনের আলোচনায় বসবেন: প্রধান বিচারপতি

0
তাপপ্রবাহের কারণে আইনজীবী ও বিচারকদের ড্রেসকোড পরিবর্তনের আলোচনায় বসবেন: প্রধান বিচারপতি

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ আদালতে আইনজীবী ও বিচারকদের ড্রেসকোড পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধান বিচারপতি। শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দেশব্যাপী তাপপ্রবাহের কারণে আইনজীবীদের আবেদনের পর এই সংবাদ আসে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেলে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে উচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষাপটে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়।সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মো. কাউছার ও আইন বায়েজীদ হোসাইন এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ মূলত একটি গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। বছরের প্রায় ৮ মাস উচ্চ তাপমাত্রা থাকে। আইনজীবীদের আদালতে পরিধানের জন্য সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রুলস ১৯৭৩ এবং আপিল বিভাগের রুলস ১৯৮৮-তে শীত ও গ্রীষ্মকালে একই ধরনের পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত আইনজীবীদের পোশাকটি মূলত ব্রিটিশ ভাবধারা ও আবহাওয়া বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছিল।

কালের বিবর্তে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আইনজীবীদের কল্যাণ ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবিবেচনায় পোশাকের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে দেশের হাজার হাজার আইনজীবী প্রতি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চমাত্রার গরম আবহাওয়ার কারণে নিদারুণ, অসহনীয়, অবর্ণনীয়, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে লাখো লাখো বিচারপ্রার্থীকে আইনি সেবা দিয়ে আসছেন।

একই সাথে নিম্ন ও উচ্চ আদালতের বিচারকরা একই ধরনের পোশাক পরিধান করায় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন।অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী, কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/টাই পরিধানের কারণে প্রতিবছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন এবং অনেক আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।তীব্র গরম এবং তাপ প্রবাহের কারণে অনেক বয়স্ক আইনজীবী আদালতে যেতে পারেন না। ফলে অনেক আইনজীবী পেশাগত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, ইতোপূর্বে করোনা মহামারির সময়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা মোতাবেক ড্রেস কোড পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে আদালতের বিচারকার্য বা আইনজীবীদের পেশাগত কোনো অসুবিধা হয়নি।তাই আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, বিচারক এবং বিচার বিভাগের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে আইনজীবীদের প্রচলিত পোশাকের পরিবর্তন আবশ্যক বিধায় বিষয়টি সুবিবেচনায় নিয়ে আইনজীবী এবং বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের আবেদন জানানো হয়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার ঢাকা জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় শফিউল আলম ওরফে আলাউদ্দিন নামে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। তার সহকর্মীরা দাবি করছেন, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই আইনজীবী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে শুনানি শেষে চেম্বারে ফিরছিলেন।

হঠাৎ মেট্রোপলিটন বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে তিনি মাথা ঘুরে পড়ে যান। তখন উপস্থিত আইনজীবীরা তাকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মেডিকেলে নিয়ে যান। তখন পর্যন্ত তার হুশ ছিল। এরপর অবস্থার অবনতি হলে পার্শ্ববর্তী ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here