১৫ আগস্ট, বাঙালীর কান্নার দিন

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী। এদিন বাঙালির শোকের দিন। আগামিকাল রোববার সারাদেশে দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হবে।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃংশসভাবে শাহাদতবরণ করেন।

ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসভবনেই এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা। কিছু বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিকের চক্রান্ত এবং সেনাবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল উচ্চাভিলাষী সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার স্ত্রী শেখে ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল।

তবে প্রবাসে থাকায় সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। আগস্টের এ হত্যাকাণ্ডে আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনসহ বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ এবং কয়েকজন নিরাপত্তা কমকর্তা ও কর্মচারী। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে এই শহীদদেরও। দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়।দিনটি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত ও অভিশপ্ত দিন।

এই দিনটিতে বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দীর্ঘ ৩৪ বছরেরও বেশি সময় পর সেই কলঙ্ক থেকে জাতির দায়মুক্তি ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার চূড়ান্ত বিচারের রায় কার্যকর করা হয়। ওইদিন মধ্যরাতের পর ৫ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাঙালির বিজয়ের অভিযাত্রাও আরেক ধাপ এগিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দিনটি বাঙালির জীবনে যেমন শোকের, তেমনি গৌরব ও আনন্দেরও।বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান।

ঐক্য, প্রেরণা ও স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক। জাতির স্বপ্নের রূপকার। তাঁর ইস্পাত কঠিন নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে দিয়েছে অধিকার আদায়ের অমর প্রেরণা। পাকিস্তানি শাসকদের ক্রমাগত শোষণ, দমনপীড়ন, ঔপনিবেশিক লাঞ্ছনা-বঞ্চনা আর দীর্ঘদিনের নির্যাতন-নিপীড়ন-বৈষম্যের অপমান থেকে বাঙালিকে চিরকালের মতো মুক্ত হওয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।পাকিস্তানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।

সেদিন তাঁর বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-এই অমর বাণীতে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহ্বান ছড়িয়ে পড়েছিল নিপীড়িত কোটি বাঙালির প্রাণে প্রাণে।জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব টিভি চ্যানেল, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া বিশেষ সংবাদ ও শোক দিবসের অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here