মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় পতাকা বিক্রির ধুম

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ পীর আবদুল মান্নান:  রাত পোহালেই ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির গৌরব আর অহংকারের এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর একাত্তরের এই দিনেই দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বীর বাঙালি।

এই দিনেই পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। প্রতি বছর যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিজয়ের এই দিনটি উদযাপন করে জাতি। বলা চলে, প্রতি বছর গোটা ডিসেম্বরজুড়েই চলে বিজয়ের মাসের নানা আয়োজন।

সেই আয়োজন আর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে মাসের শুরু থেকেই রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে। এবছর করোনাকালীন পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন হলেও পতাকা বিক্রিতে তেমন ব্যত্যয় ঘটেনি। বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরেই বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, গাড়িতে, রিকশায়, দোকানে কিংবা বৃক্ষের মগডালে সবখানে উত্তোলন করা হয় লাল-সবুজের পতাকা। বাতাসে পাখির মতো দু-ডানা মেলে পতপত করে উড়ে স্বাধীন দেশের সেই পতাকা।

গতকাল সোমবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দর্জিরা পতাকা সেলাইয়ে শেষ মুহূর্তে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে তাদের এই পতাকা তৈরির কাজ। অপরদিকে, হকাররাও ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন নানা মাপের নানা দামের পতাকা, পতাকা সংবলিত ব্রেসলেট, পাখা, চরকা, স্টিকার কিংবা পতাকার ঢঙে তৈরি করা মাস্ক ইত্যাদি।

একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ ও ষোলই ডিসেম্বর উপলক্ষে প্রতিবছরই পতাকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন জানিয়ে গুলিস্তানের দর্জি মো. আক্কাস উদ্দিন বলেন বছরের এই সময়গুলোতে আমার কাছে পতাকার অনেক অর্ডার (বায়না) থাকে। মাসে তিন থেকে চার লাখ টাকার পতাকা বিক্রি করি। এবারও বেচাবিক্রি বেশ ভালো।

দর্জি আক্কাস উদ্দিনের দোকানের কর্মচারি মো. রুহুল হাওলাদার বলেন আমি যত পতাকা সেলাই করবো, তত টাকা পাবো। কন্ট্রাকে (চুক্তিভিত্তিক) কাজ করি। আমরা যারা এখন কাজ করছি, সবাইকে ওভারটাইম (বাড়তি সময়) করতে হয়। প্রতিদিন এখন ষোল-সতের ঘণ্টা কাজ করছি।

পল্টন এলাকায় ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছিলেন হকার হিরু মিয়া। তিনি বলেন, ‘দিনে দুই-তিন হাজার টাকার মতো পতাকা বিক্রি করি। লাভ হয় সাত-আটশো টাকা। ছয় ফিট বাই দশ ফিট মাপের বড় পতাকার দাম সাড়ে তিনশো টাকা। আর সবচেয়ে ছোট পতাকার দাম বিশ টাকা। অন্য মাপের পতাকাগুলো তিনশো, আড়াইশো, দুইশো, দেড়শো, একশো, পঞ্চাশ টাকা।

হকার আবুল কালাম আজাদ বলেন ঠিক নাই। আমি একেক সময় একেকটা বিক্রি করি। বেশিরভাগ সময় শিশুদের খেলনা বিক্রি করি। এখন পতাকা বিক্রি ভালো …. তাই পতাকা বিক্রি করছি। দাম জানাতে চাইলে তিনি জানান, কাগজের পতাকা এক বান্ডেল (১০০টি পতাকা) ২৫ টাকা। পতাকা-চরকা ২০ টাকা। ছোট হ্যান্ড-পতাকা একটি দশ টাকা। আর পতাকা-ব্রেসলেট ২৫ টাকা।

পতাকার সঙ্গে করোনাকালীন পতাকার ঢঙে তৈরি করা মাস্কও বিক্রি করছেন হারুন হাসান। তিনি  বলেন আমি সবসময় মাস্ক বিক্রি করি। পাইকারি দোকানে পতাকা-মাস্ক দেখে নিয়ে এলাম। বিক্রি ভালো হচ্ছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাই পতাকা ও মাস্ক বেশি কিনছে। কাপড়ের তৈরি প্রতি পিস পতাকা মাস্ক ২০ টাকা দামে বিক্রি করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here