রাজধানীর মিরপুরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৬, রূপনগর বস্তিতে শুধু আহাজারি

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়ি বস্তিতে বেলুন ফোলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ হয়েছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এদিকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বস্তিবাসীদের কান্নার আহাজারিতে ভাড়ি হয়ে উঠছে শিয়ালবাড়ি বস্তি এলাকা। শোকে স্তব্ধ গোটা বস্তি। প্রতিদিন যেখানে সন্ধ্যা বেলা সবার চুলায় রান্না হয় আজ তাদের রান্নাঘরে নেই কোনো আলো। জ্বলছে না কোনো চুলা। হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আহতরা।

কখন যেন আহতদের মৃত্যুর খবর আসে সেই চাপা উৎকণ্ঠা সবার মাঝে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।নিহত ৬ শিশু হলো- ফারজানা (৭), নূপুর (১১), রুবেল (১০), রমজান (৮), শাহিন (৯) ও রিয়া মনি (১০)। এদের মধ্যে সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিয়া মারা যায়। সবার লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালের মর্গে রাখা হয়েছে।রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, মনিপুর স্কুল এলাকায় একজন বিক্রেতা গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে বেলুন ফুলিয়ে বিক্রি করছিলেন। সিলিন্ডার দিয়ে বেলুন ফোলানোর সময় এটির বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় আশেপাশে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিন শিশু ও এক নারী ঘটনাস্থলে মারা যান। আহতদের সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, আহতদের মধ্যে ৫/৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে কারও মাথায় আঘাত লেগেছে। এক শিশুর নাড়ি বেরিয়ে গেছে। জান্নাত নামে এক নারীর ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এক শিশু ঝলসে গেছে। তাকে বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। আহতরা হলেন- সোহেল (২৫), রিকশাচালক জুয়েল (৩০), জান্নাত (২৫), তানিয়া (৭), মীম (৭) বায়েজীদ (৯) অজুফা (৭) জাামিলা (৭) সিয়াম (১১) অজানা (৭) মোস্তাকিম (৭) নিহাদ(৮) মোরসালিনা(৯) অর্নব/রাকিব(১০) জনি (৯) সহ আরও অনেকে।।

এদিকে রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়ি বস্তিবাসীদের কোনো ঘরেই রান্না হচ্ছে না। নিহত আর আহতদের আত্মীয় স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভাড়ি হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। শত শত উৎসুক মানুষের ভীড়। তবুও কারো যেন সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই। গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের লোমহর্ষ বর্ণণা দিতে গিয়ে প্রতক্ষ্যদর্শী সোহাগ নামের এক তরুণ বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে যখন ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে আসি দেখি- বাচ্চারা ছিঁটাই রয়েছে। কেউ মরা, কেউ জীবিত, কেউ গোংড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ অনেক জোরে একটা শব্দ শুনে জেগে উঠি। ভাবছিলাম আমরা কারেন্টের চোরাই লাইন ব্যবহার করি। সেটার ট্রান্সমিটার বাস্ট করেছে। দেখি আমার ঘর কাঁপছে। পরে বাইরে আইস্যা দেখি রাস্তায় রক্ত আর মাংস ছিটিয়ে রয়েছে। চারদিকে ধোয়া আর ধোয়া। বাচ্চারা ছিঁটাই রয়েছে। কেউ মরা, কেউ জীবিত, কেউ গোংড়াচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here