প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ ইলিশের জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞারোপের সফলতাকে অনুসরণ করে বঙ্গোপসাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিজ সম্পদের ভাণ্ডারের সুরক্ষায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ফলে মঙ্গলবার (২৩ জুলােই) পর্যন্ত টানা ৬৫ দিন কর্মহীন ছিলেন দেশের জেলেরা।
তবে এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়েছে ভারতীয় জেলারা। তারা বঙ্গোপসাগরের আন্তর্জাতিক সীমা বা ইনোসেন্ট প্যাসেজ পেরিয়ে বাংলাদেশের অন্তত ৫০ নটিক্যাল মাইল অভ্যন্তরে ঢুকে ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জেলেরা অভিযোগ করেন, দুই মাসেরও বেশি সময় তারা সাগরে মাছ ধরতে পারেননি, কিন্তু সুযোগটি নিয়েছে ভারতীয় জেলেরা- তারা এ সময় বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে গেছে।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ট্রলারসহ ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের ভেতরে আটক হয়। গত সপ্তাহে পটুয়াখালীতে পাঁচ শতাধিক জেলেসহ ৩২টি ভারতীয় ট্রলার জব্দ করে কোস্টগার্ড। ভারতীয় জেলেদের দাবি- উত্তাল বঙ্গোপসাগরে তীব্র বাতাসে দিক বিভ্রান্ত হয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েছে। কিন্তু জেলেসহ বোট মালিকদের অভিযোগ, আমাদের দেশে অবরোধ কিন্তু ভারতে অবরোধ নেই। গত ২০ মে থেকে বাংলাদেশ সীমানায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির সুযোগে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে অবাধে মাছ শিকার করছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
বাংলাদেশ বোট মালিক সমিতির মহাসচিব আমিনুল হক বাবুল বলেন, আমাদের দেশে যখন মাছ আহরণ বন্ধ থাকে তখন বিদেশি ট্রলারগুলো আমাদের দেশে এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম কিন্তু আমরা কোথাও প্রতিকার পাচ্ছিলাম না। দক্ষিণাঞ্চলীয় বরগুনা জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নলিবাজার। বাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকাটি জেলে অধ্যুষিত। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ মূলত সাগরের মৎস্য সম্পদের উপর নির্ভর। সুটকেসে, বস্তায় আর হ্যান্ডবাগে শুধু ইলিশ।
মাছ ধরার জন্য নৌকা নিয়ে সাগরে যেতে পারলে তাদের জীবিকা চলে, নতুবা জীবন থমকে যায়। টানা ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময় জেলেরা অলস সময় কাটিয়েছেন। একজন জেলের স্ত্রী রেনু বেগম বলছিলেন, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সময়টাতে তার সংসারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল। আছমা বেগমের স্বামী সাগরে মাছ ধরতে যেতে না পারায় সংসার থমকে গেছে। তিনি বলেন খাওয়া-দাওয়া চলাফেরায় সমস্যা হয়। এহন তো জাল বাইতে পারে না।