সিদ্ধিরগঞ্জে কাবিন জালিয়াতি মামলার আসামি ইমাম করেন সুদের ব্যবসা

0
সিদ্ধিরগঞ্জে কাবিন জালিয়াতি মামলার আসামি ইমাম করেন সুদের ব্যবসা

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বাস স্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম মোসলেহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সুদের কারবার ও কাবিন নামা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে কাবিন নামা জালিয়াতির মামলাও করেছেন ভগ্নিপতি ফয়সাল আহমেদ। সুদ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ওই ইমাম পরিবর্তনের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন এলাকার মুসল্লিরা।

জানা গেছে, আদমজী বাস স্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোসলেহ উদ্দিনের বাড়ী ভোলা জেলার লালমোহন থানা এলাকায়।তার ছোট বোনের নাম আকলিমা আক্তার। একই উপজেলার চরটিটিয়া গ্রামের মো: জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে পারিবারিক ভাবে ২০২০ সালে বিয়ে হয় আকলিমার। দেড় লাখ টাকা দেনমোহর কথা থাকলেও কাজীকে হাত করে মোসলেহ উদ্দিন ৫ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে কাবিন রেজিষ্ট্রি করান।

দাম্পত্য জীবন ঠিকিয়ে রাখতে ফয়সাল তা মেনে নিলেও ২০২১ সালের ২৩ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া কাজী অফিসে সাজানো স্বাক্ষী বানিয়ে কাজীকে প্রভাবিত ও আগের কাবিন নামা গোপন রেখে মুসলেহ উদ্দিন মোহরানা করান ২৪ লাখ টাকা। ফয়সাল তার স্ত্রী আকলিমাকে নিয়ে মুসলেহ উদ্দিনের বাসায় বেড়াইতে আসলে কৌশলে এ জালিয়াতিটি করা হয়। শেষপর্যন্ত বনিবনা না হওয়ায় ফয়সাল তার স্ত্রী আকলিমাকে তালাক দেওয়ার পর কাবিন নামায় দেনমোহর জালিয়াতি প্রকাশ পায়। পাশাপাশি এক বিয়ের দুই কাবিন নামা নিয়ে উঠে প্রশ্ন।

এদিকে কাবিন নামা জালিয়াতি প্রকাশ পাওয়ার পর মোসলেহ উদ্দিন, তার বোন আকলিমা আক্তার, কাবিনের স্বাক্ষী আজিজুল গাফ্ফার, মজিবর খান ও কাজী মো: মাছিহুর রহমানকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলা করেন ফয়সাল আহমেদ। যার নং- ৩৫১/২২। অভিযোগ রয়েছে, সুদ ব্যবসা করায় আদমজী এলাকার ৬৯ জন মুসল্লি গণস্বাক্ষর দিয়ে ইমাম মোসলে উদ্দিনকে পরিবর্তন করে অন্য ইমাম নিয়োগ দেওয়ার জন্য মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত আবেদন জানান।

তার পরও তিনি কৌশলে বহাল রয়েছেন।স্থানীয়দের অভিযোগ, গোদনাইল চৌধুরীবাড়ী এনায়েতনগর এলাকার জয়নাল নামে এক তুলা ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিনের কাছ থেকে ২০১৭ সালে কদমতলী এলাকার জসিম খা নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে মাসে ৪ হাজার টাকা সুদ দেওয়ার শর্তে ইমাম মোসলে উদ্দিনের কাছ থেকে দুই লাখ সত্তর হাজার টাকা নেন। পরে ২০২২ সালে মোসলেহ উদ্দিন আরো ৩০ হাজার টাকা দেন জয়নালকে। ফলে মাসিক সুদ ধরা হয় ১২ হাজার টাকা।

তবে মোসলেহ উদ্দিন তার স্ত্রীর নামে স্ট্যাম্পে লিখিত নেন কর্জ হিসেবে। কদমতলী এলাকার মানিক মেডিকেল ফার্মেসি মালিক মো: মুছা মোসলেহ উদ্দিনের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে মাসে বাইশ হাজার টাকা পর্যন্ত সুদ দিয়েছেন। একই এলাকার আবুল খায়ের মোসলেহ উদ্দিনের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে মাসে তিন হাজার টাকা করে সুদ দেন। একাধিক মুসল্লি ক্ষোভের সাথে জানান, ইমাম মোসলেহ উদ্দিন চালাকি করে কর্জ হিসেবে লিখিত নিয়ে সুদ ব্যবসা করছেন।

তাই সুদখোর ইমামকে দ্রুত পরিবর্তন করতে মসজিদ কমিটির কাছে আবেদ করা হয়েছে।জালিয়াতি কাবিনের স্বাক্ষী মজিবর খান বলেন, মোসলেহ উদ্দিন তার বোন ও বোন জামাইয়ের দ্বিতীয় কাবিন করেন। তখন তিনি কাবিনে দেনমোর অংকের যায়গা খালি রেখে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন। পরে এ বিষয়ে তার বোন জামাই পারিবারিক আদালতে মামলা করলে আমরা বিষয়টি জানতে পারি যে, দেনমোহর ২৪ লাখ টাকা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইমাম মোসলেহ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ধার হিসেবে টাকা দিয়েছি। কোন মুনাফা নেইনি। কাবিন জালিয়াতিতেও তিনি জড়িত নয় বলে দাবি করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here