প্রেসনিউজ২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানীর অভিযোগে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন দুপুর ২টায় এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখনো চলছে।বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা রফিকুল চরিত্র নিষ্পাপ ফুলদের করে অপবিত্র স্লোগানে তারা বলেন, গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চরিত্র ভালো থাকা উচিত।
কিন্তু তিনি যখনি বিভিন্ন ক্লাসে যান তখনি মেয়েদের শরীরে হাত দেন। আমরা চাই না আমাদের আর কোনো বোন তার দ্বারা হয়রানীর শিকার হোক। তার মতো শিক্ষক আমরা এ বিদ্যালয়ে চাই না। আমরা তার পদত্যাগ চাই।এ সময় শিক্ষার্থীরা নাসিক ৪, ৫, ৬নং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে আমরা আন্দোলন করলে তিনি নাকি আমাদের পরীক্ষা দিতে দিবে না। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন কথা কীভাবে বলেন? তিনি আমাদের ওপেনলি থ্রেট দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন আমরা যেনে না করি।
সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। সোহেল এবং বিল্লাল নামে দুই শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ দুজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে ঠিক সময়ে আসতো না তাই আমি তাদের বেতন কর্তন করি। পরবর্তী সময়ে মিটিংয়ের আমি তাদের বেতন পরিশোধ করে দেই। তারা আমাকে ফাঁসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে।নাসিক ৪, ৫, ৬নং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি এমন কোনো কথা শিক্ষার্থীদের বলিনি। এ সময় আন্দোলন করলে তাদের পরীক্ষা খারাপ হবে আমি এ কথা তাদের বলেছি।
আমি তাদেরকে কয়েকবার বুঝিয়েছি। আমি একজন নারী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বলি কীভাবে? গতকাল রাতে তারা অভিযোগ নিয়ে যখন আমার কাছে আসে, তাদেরকে তখন বলেছি এ বিষয়টি আমি দেখবো। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমার কথা না শুনে আজ আন্দোলন করছে।উক্ত স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দ্বিপেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল স্কুল মিটির সদস্য ফারুক হোসেনের কাছে। তার নলেজে বিষয়টি আছে। এটা খুব দুঃখজনক। আমাদের কাছে অভিভাবকরাও অভিযোগ দিয়েছে।
সফুরা খাতুন স্কুলের ইংলিশ শিক্ষিকা ফরিদা আক্তার বলেন, গত ২০১৯ সাল থেকে তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছে আজই প্রথম শুনছি তার বিরুদ্ধে এমন কথা। এটা খুব দুঃখজনক।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়কে আন্দোলন করলে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেই। তারা এখনো বিদ্যালয়ের মধ্যে আন্দোলন করছে।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাদের যদি কোনো অভিযোগ করার থাকে তাহলে তারা যেন স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়।নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার শরীফুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা দেখবো। আমরা দুই পক্ষের কাছ থেকে দুই রকম বক্তব্য পাচ্ছি। তাই এখন বিস্তারিত বলা সম্ভব হচ্ছে না।