সিদ্ধিরগঞ্জে গানের আসরের আড়ালে দেহব্যবসা

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে বৃদ্ধি পেয়েছে অশ্লীলতা। রাত হলেই জমে উঠে একাধিক গানের আসর। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের শেল্টারে বাউল শিল্পি সমিতির ব্যানারে বসায় গানের আসর। চলে মাদক বেচা কিনা ও নষ্টামি। এসব আসরা জনপ্রিয় করে তুলছে সুন্দরী নিশিকন্যারা। খদ্দেররা উড়াচ্ছে টাকা।

পকেট ভারি করছে গানের নামে নিশিকন্যাদের মিলন মেলার আয়োজক ও দালালরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের উত্তর পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন, জালকুড়ি সীমা ডাইং সংলগ্ন, গোদনাইল লাকি বাজার ও কাঁচপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় রাতে গান বাজনার আসর জমে। একেক জায়গায় একেক বাউল সমিতির নামে এসব গান বাজনার আয়োজন করা হয় বাউল শিল্পি সমিতির নামে। শুক্রবারসহ প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে তিন চার দিন চলে আসর।

চলে রাত দশটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ একাধিকবার এসব আসরে হানা দিয়ে আয়োজকদের আটক ও বাধ্যযন্ত্র জব্দ করলেও রহস্য জনক কারণে বন্ধ হচ্ছেনা।  সরেজমিনে কয়েকটি আসরে গিয়ে দেখা গেছে, গানের চেয়ে বেশি চলে কানাকানি। শিল্পিদের কাতারে আকর্ষণীয় সাজে বসা সুন্দরী যুবতীরা। একটি আসরে শিল্পিদের গান চলা অবস্থায় ত্রিশ উর্ধ্ব দুইজন লোককে যুবতীদের সঙ্গে  কানাকানি করতে দেখা যায়। কখনো গানের মাঝ খানে, কখনো গান শেষে চলে তাদের কানাকানি। কানাকানির পরই আসর থেকে বের হয়ে উদাও হয়ে যায় ওই যুবতী।

অন্তত আধা ঘন্টা পর আবার আসরে ফিরে আসে। শিল্পিদের কাতারে বসে থাকা সুন্দরী যুবতীদের সঙ্গে কানাকানি ও আসা যাওয়ার কারণ জানতে গিয়ে বের হয় প্রকৃত রহস্য। বিভিন্ন আসরে নিয়মিত গান পরিবেশন করা একজন শিল্পি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,আসলে এসব যুবতীরা শিল্পি নয়। তারা নিশিকন্যা। যারা কানাকানি করে তারা দালাল। খদ্দেরের পছন্দ হলে দরদাম চুড়ান্ত করে দালালরা এসে কানে কানে বলে। তখন তারা খদ্দেরের সঙ্গে চলে যায় আসরের আশাপাশে আয়োজকদের নির্ধারিত ঘরে। পাঁচ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে সময় কাটিয়ে আবার চলে আসে আসরে।

ওই শিল্পি আরো জানায়, দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বিত্তবান ব্যক্তিরাও গাড়ি দিয়ে এসব গানের আসরে এসে পছন্দের নিশিকন্যাকে দশ থেকে বিশ হাজার টাকায় সারা রাতের জন্য নিয়ে যায়। আসর জামানোর জন্য আয়োজকরা নারী লিল্পির ব্যাবস্থা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন খদ্দের জানায়, গান বাজনা লোক দেখানো। মূলত চলে দেহব্যবসা ও মাদক বেচা কিনা। আয়োজকরা পায় কমিশন। একজন নিশিকন্যা ঠিক করে দিলে খদ্দেরের কাছ থেকে দালাল পায় দুইশত টাকা। গান শোনার চেয়ে মাদক সেবি আর নিশিকন্যাদের জন্যই লোকজন আসে বেশি।

নিশিকন্যা বিউটি (ছদ্ধনাম) জানায়, তাদের আয়ের অর্ধেক দিয়ে দিতে হয় গানের আয়োজকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইনবোর্ড এলাকার গানের আসরের পাশের একজন চা পান দোকানদার বলেন, শিল্পিরা গান গেয়ে আসর জমায়। দালালরা নিশিকন্যাদের জন্য খদ্দের জুগায়।  সাইনবোর্ড এলাকার গানের আসরের আয়োজক বাউল শিল্পি ইমরান দেওয়ান  বলেন, প্রশাসনিকভাবে লিখিত কোন অনুমতি নেই। মাদক ও দেহব্যবসার  বিষয়টি সঠিক নয়।  সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, এসব গানের আসরের কোন  অনুমতি দেওয়া হয়নি অচিরেই সব আসরে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here