সিদ্ধিরগঞ্জে নানা অপকর্মের হোতা কবির ও ফারুকের অপকর্ম এলাকাবাসীর মুখে মুখে

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সিদ্ধিরগঞ্জে নানা অপকর্মের হোতা লোহা চোর মোটা কবির ও মাদক ব্যবসায়ি ফারুক ওরফে চ্যাঙ্গা ফারুকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। পরিবহন চাঁদাবাজ সামাদ বেপারীসহ ৪জন গ্রেফতার হওয়ার পর কবির ও ফারুকের অপকর্ম সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পুর্বপাড়া ক্যানেলপাড়, পাইনাদী, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, সিআইখোলা, পাইনাদী নতুন মহল্লার মানুষের মুখে মুখে। ক্যানেলপাড় এলাকার বেশ কয়েক যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছ্যাচড়া সন্ত্রাসী ফারুক পুর্বপাড়া এলাকায় একটি বাহিনী গড়ে তুলেছে।

প্রকাশ্যে আদমজী ইপিজেডে ব্যবসার দোহাই দিলেও পর্দার অন্তরালে ইয়াবা ব্যবসা করে রাতারাতি প্রচুর টাকার মালিক বনে গেছে সন্ত্রাসী ফারুক। তার অপকর্ম যাতে প্রকাশ না পায় এই জন্য শেল্টারদাতাদের কয়েকজনকে নিজের টাকায় বিদেশে ঘুরিয়ে এনেছে। আইনশৃংখলা বাহিনী তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে। সম্প্রতি মিজমিজি পুর্বপাড়া ক্যানেলপাড় এলাকায় যত অপকর্মের ঘটনা ঘটতো এর নেপথ্যে সন্ত্রাসী ফারুক ও তার বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। ওই এলাকার কাউন্সিলরের একাধিক সুত্র জানান, কবির ও ফারুককে গ্রেফতার করলে তাদের অপকর্মের বহু ফিরিস্তি বেরিয়ে আসবে।

আরেকটি সূত্র জানায়, লোহা চোর মোটা কবির, ছ্যাছড়া সন্ত্রাসী ওরফে টাইগার ফারুক অপর একটি বিশেষ মহলের শেল্টারে প্রতিমাসে মোটা অংকের মাসোহারার মাধ্যমে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এই সিন্ডিকেটে রয়েছে টাইগার ফারুকের ছোটভাই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী জসিম, একাধিক মাদক মামলার আসামী সোহান, মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার মেহেদী, পুলিশের তালিকাভুক্ত ডাকাত ও সোর্স ইলিয়াস, সোর্স শুভ, লিমন, আকাশ, অনিক ও মাদকের সরবরাহকারী মিলনসহ আরো অনেকে।

এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লোক চক্ষুর আড়ালে মাদক ব্যবসা করে যুবসমাজকে বিপথগামী করে রাতারাতি তারা বনে গেছে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক। এই গ্রুপের কেউ মাদক নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেই তাদের বিশেষ মহলের ব্যক্তিরা তদবির করে ছাড়িয়ে আনে। একদিকে সামাদ বাহিনী অপরদিকে বিশেষ মহলের ব্যক্তিরা তাদের বগলতলে থাকায় কেউ এ গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ফলে অন্তরালেই রয়ে যায় তাদের কুকীর্তির খবর।

এদিকে মিজমিজি এলাকার মিরাজ নামে এক যুবক জানায়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আমিসহ আরো কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী টাইগার ফারুক (চ্যাঙ্গা ফারুক) কে মাদক ব্যবসায় বাধা দিয়েছিলাম। এর জন্য ফারুক আমাকে গুম ও খুনের হুমকি দেন। মিরাজ বলে, ফারুক গ্রুপে আরও রয়েছে মিজমিজি পাগলাবাড়ি এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী (কুট্টির ছেলে) বাবু, মুদি দোকানদার সামাদের ছেলে আবু সুফিয়ান, কালা জরিপ, রাজমিস্ত্রি লেবারের ছেলে আকাশ, চাকু মিলন ও আরো অনেকে আমাকে ওই সময় থেকে ক্ষতি করার চেস্টা করছে।

ওদিকে শিমরাইল মোড়ের ইজিবাইক চালক আনোয়ার, জব্বার, আয়াত আলী, কালামসহ অনেকেই এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন র‌্যাবের অভিযানের পর তারা এখন শান্তিতে আছেন। চাঁদাবাজ সামাদ বেপারী, মাসুদ, ইলিয়াছ মোল্লা, জহির গংরা তাদের লোকজন দিয়ে চাঁদাবাজি করতো। কেউ প্রতিবাদ করলে সামাদের অন্যতম দুই সহযোগি ছ্যাচড়া ফারুক ও মোটা কবির তাদের বাহিনী নিয়ে সাধারণ ইজিবাইক চালককে ভয়ভীতি দেখাতো।

ওদিকে ইপিজেডের সাধারণ পরিবহন মালিকদের কয়েকজন জানান, সন্ত্রাসী ফারুক ও মোটা কবির বাহিনী নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। কিছু হলেই উস্কানী দিয়ে গাড়ি ভাংচুর করায়। সম্প্রতি থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে অর্ধ শতাধিক গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার নেপথ্যে মোটা কবির ও ফারুক বাহিনীর ইন্দন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২ জুলাই বিকেলে র‌্যাব-১১’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজীর মূলহোতা সামাদ বেপারী এবং তার সহযোগী মাসুদ, ইলিয়াস মোল্লা ও জহিরকে আটক করে। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।

শিমরাইল মোড় ও সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার পরিবহন ব্যবসায়ীরা জানায়, সামাদ বেপারীসহ ৪ চাঁদাবাজ গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে চাঁদাবাজী বন্ধ রয়েছে। তবে মোটা কবির ও মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা টাইগার ফারুক বহাল তবিয়তে থেকে বীরদর্পে মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার প্রত্যেকটি মার্কেটের ও হোটেলের চিপায় গেলেই মিলবে মাদকের আলামত। একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে তাদের নেতৃত্বে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here