ফতুল্লার কাশিপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম দেওভোগে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ছুড়িকাঘাতে শরীফ (৩০) এক একজন টিভি ফ্রিজ ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে শামীম মেম্বার বাহিনীর বিরুদ্ধে। বুধবার (১ এপ্রিল) সকালের দিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বাড়ৈভোগ মসজিদ সংলগ্ন বালুর মাঠে শরীফকে একদল সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।

পরে তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা কেরন। খুনের শিকার শরীফ হোসেন ওই এলাকার আলাল মাদবরের ছেলে। এলাকায় তার একটি টিভি ফ্রিজের দোকান রয়েছে। এছাড়াও সে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। স্থানীয় মেম্বার শামীম বাহিনীর বড় শাকিল, ছোট শাকিল, লালন, লিমন, ইমনদের সাথে শরীফ হোসেনের দ্বন্দ্ব চলছিল। এর জের ধরেই এদিন সকাল পৌনে এগারটার দিকে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মা রহিমা বেগম।

পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন। তিনি বলেন, ওই এলাকায় দুটি গ্রুপ রয়েছে। তাদের মধ্যে স্থানীয় ইস্যু নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এই দ্বন্দ্বের জেরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিহত শরীফের মা রহিমা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, তার ছেলে এলাকায় ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন। গত দুই মাস আগে তাকে বিয়ে করানো হয়েছিল।

এছাড়াও সে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। নিহতের মায়ের দবি, তার ছেলে বিএনপি করে ব্যবসা করে এটা মেনে নিতে পারছিলন না বড় শাকিল, ছোট শাকিল, লালন, লিমন, ইমনসহ আরও কয়েকজন। প্রায় সময় তার কাছ থেকে তারা টাকা চাইতো। এছাড়াও মেম্বার শামীমের কথা কেউ না মানলে তারা এলাকায় মানুষকে মারধর হুমকি ধামকি দিত। এমন একটি ঘটনার প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা শরীফের উপর ক্ষুব্ধ ছিল। সে ক্ষোভ থেকেই তারা শরীফকে ডেকে নিয়ে খুন করে। এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকার আধিপত্য নিয়ে মেম্বার শামীম বাহিনীর বড় শাকিল, ছোট শাকিল, লালন, লিমন, ইমনদের সাথে শরীফের দ্বন্দ্ব ছিল। তবে, সে বিএনপির সমর্থক থাকলেও এর আগে প্রায় সময় এই গ্রুপের লোকজনদের সাথে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে সে গিয়েছিল।

পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দিলে তারা আলাদা হয়ে যায়। এ নিয়ে শরীফের উপর ক্ষুব্ধ হয় তারা। সূত্র আরও জানায়, কিছুদিন মেম্বার শামীম বাহিনীর বড় শাকিল, ছোট শাকিল, লালন, লিমন, ইমনদের সাথে শরীফের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনা নিয়ে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ বাদল বিচার শালিসও করেছিলন। ওই বিচারে শরীফের বাবা আলাল মাতব্বরকেও চড় থাপ্পর মেরেছিলেন বাদল। এরপর আবারও তাদের দ্বন্দ্ব দেখা দিলে করোনা পরিস্থিতির পর এ নিয়ে বসে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছিলেন সাইফুল্লাহ বাদল। কিন্তু এর আগেই শরফীকে তারা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।

শামীমসহ হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত সবাই ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদলের অনুসারি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, কিছুদিন আগে না, অনেকদিন আগে বিচার করেছিলাম। ওদের মধ্যে কি একটা গণ্ডগোল জানি হইছিলো। মনে নাই। তার বাবাকে চড় থাপ্পর মারি নাই। শামীম মেম্বার শতভাগ আমার লোক। সে মেম্বার আমার লোকইতো হবে। অনেক ভালো ছেলে সে। যারা হত্যার সাথে আছে শুনতাছি তারাও আমার লোক। এলাকার সবাই সবার লোক। কিন্তু কেউ হত্যা করবে এটাকে সমর্থন করবো নাকি? এটা কেউই প্রত্যাশা করে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here