প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি: হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব অষ্টমী স্নান উপলক্ষে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তীর্থস্থান ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের দু’পাড়ে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) হাজারো পূণ্যার্থীর ঢল নামে। সুর্যোদয়ের সাথে সাথে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের দু’পাড়ে ঘাটে এসে পূণ্যার্থীরা ভিড় জমায় হয়।
স্নানোৎসবে আসা দূর-দূরান্তের তীর্থ যাত্রীদের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ময়মনসিংহ সিটি করর্পোরেশন ব্রহ্মপুত্র নদ তীরবর্তী স্থানে পূণ্যার্থীদের কাপড় পাল্টানোর জায়গা ও শৌচাগারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেছে। উৎসবটিকে ঘিরে নদ তীরবর্তী এলাকায় ও বিভাগীয় শহরের দূর্গাবাড়ী, স্বদেশী বাজার, আমপট্রি সড়ক ও বিভিন্ন মন্দির কেন্দ্রীক গ্রামীন মেলা বসেছে ।অষ্টমী স্নানকে ঘিরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী তীর্থ যাত্রীরা “হে ভগবান ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্র, আমার পাপ হরণ কর” পবিত্র মন্ত্র উচ্চারন করে ফুল, কলা, আম, ডাব, হরতকিসহ পূণ্যার্থীরা ভক্তিমন্ত্রের সাথে সাথে মেতে উঠে স্নানোৎসবে।
পাপ মোচনের বাসনায় প্রতি বছরই অষ্টমী তিথিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তীর্থস্থান ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের দু’পাড়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখো পূণ্যার্থীর স্নানোৎসবে কয়েকটি ঘাটে চলে এই স্নানোৎসব।উৎসব মূখর পরিবেশে এ বছর ব্রহ্মপুত্র নদের গফরগাওঁয়ের রোৗহা, ত্রিশালের ধলা, কালির বাজার, সদরের বেগুনবাড়ি, বিদ্যাগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জের লাঠিয়ামারি, পিয়ারপুরসহ কয়েকটি স্থানের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ঘাটে পুণ্যার্থীরা অস্টমীর স্নান ও পুঁজা সম্পন্ন করেন।
পুণ্যস্নানের পাশাপাশি পুণ্যার্থীরা প্রার্থনা করেন যেন দেশে সব সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সাম্প্রদায়িক সম্বপ্রীতি বজায় রেখে সব সম্প্রদায়েরঅনুগামীরা মানুষ একত্রে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। ধর্মীয় বিশ্বাস আর অনুভুতি থেকে প্রতি বছরেই পাপমোচনের জন্যে এখানে স্নান করতে আসেন পুন্যার্থীরা চৈত্রমাসের শুল্ক পক্ষের অষ্টমী তিথিতে গঙ্গা এই বহ্ম্রপুত্রে আসেন, পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে অনেকে পূজা-অর্চনা সারেন আবার কেউ পশু বিসর্জন দেন নদের জলে নিকটজনের মঙ্গল কামনায় এবং পুণ্যার্থীরা পাপ মোচন ও কল্যানের জন্যে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করেন।হিন্দু পূরাণ মতে চৈত্র মাসের শুক্ল তিথিতে পূণ্যলাভের আশায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করা হয়।
তাদের বিশ্বাস এই তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে পাপ মুক্ত হয়। দেবতা পরশুরাম পিতার আদেশে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেন, তখন মাতৃহত্যার অভিশাপে তার হাতে কুড়াল আটকে যায়। তখন মুণি-ঋষিদের ধারনা থেকে পরশুরাম হিমালয়ের পবিত্র সরোবরে গঙ্গা স্নান করে পাপমুক্ত হন এবং ঐ কুড়াল হাত থেকে খসে পড়ে। আর তখন থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের পূণ্যার্থীরা ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসবে মিলিত হয় পাপমোচনের লক্ষ্যে।
অষ্টমী স্নান উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। এবছর ময়মনসিংহ বিভাগের হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পুন্যার্থীরা ব্রহ্মপুত্রে স্নান করতে আসেন।