প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি॥বরগুনার আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকি ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাড: এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি।
সোমবার বেলা ১২ টার সময় গুলিশাখালীর বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাড: এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির ল’চেম্বারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গেজেট ভূক্ত রাজাকারের ছেলে গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম আমাকে গত ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা দেড়টার সময় আমতলী ফেরিঘাট দেখে তার লাইসেন্সকৃত শর্টগান দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় আমি আমতলী থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ১৬ এপ্রিল সাধারনডায়েরী করেছি। এ ঘটনার পর থেকে আমি এখন নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, আমার এবং আমার বড় ভাই ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সত্তারের বিরুদ্ধে অসত্য মিথ্যা ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দিয়ে ১৫ এপ্রিল বরগুনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সমে¥লনে যে বক্তব্য রেখেছেন তাসম্পূর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট। ৪০দিন কর্মসূচীর যে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন তা তালিকার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন নয়।
বরং বিগত ১০ বছর ইউপি চেয়ারম্যান থাকা কালে এ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম নামে-বেনামে এবং জাল স্বাক্ষরে মাস্টারোল তৈরি করে কাজ না করে একই প্রকল্প বার বার দেখিয়ে চেকের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মাসাৎ করেছে। যা সুষ্ঠ তদন্ত করলে সত্যতা প্রমানিত হবে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে গুলিশাখালী বাজার মসজিদের নামে বরাদ্দ করা টাকার কাজ না করে আইন বর্হিভূত ভাবে সে টাকায় তার নিজ বাড়ীর মসজিদে কাজ করেন।
মসজিদটিতে মুসল্লি না থাকায় সে মসজিদটি এখন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে আছে। এছাড়া এ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় খেকুয়ানী স্কুলের মাঠ ]াট, খেকুয়ানী গাজী বাড়ীর সামনের রাস্তা মেরামত, পূর্ব কলাগাছিয়া মাদ্রাসার মাঠ ]াট, কালিবাড়ি ধোপা বাড়ি সংলগ্ন খালের ব্রিজ নির্মান প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে কোটি কোটি টাকা অত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়া সরেজমিন তদন্ত পূর্বক মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মো.নুরুল ইসলামের অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এবং ভাটার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ যানবাহন সম্পর্কে আমি মাসিক আইন শৃংখলা সভায় তুলে ধরি। এবং অবৈধ ইট ভাটার কারনে এলাকার পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব এবং ফসল হানির কথা তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ হাই কোর্টে রিট করি। রিট নং- ১৬১৯/২০২৩। এ ঘটনার জের ধরে সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।
এছাড়া মো. নুরুল ইসলাম আওয়ামীলীগ বিরোধী সংগঠনের সাথে জড়িত সে উপজেলা নির্বাচনেও নৌকা প্রতিকের চরম বিরোধীতা করে হাতপাখার পক্ষ হয়ে এলাকায় কাজ করেন। সংবাদ সম্মেলনে এইচ এম মরিুল ইসলাম আরো বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে গোজখালী ০৭ নং ওয়ার্ডের হিন্দু সম্প্রদায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি তার নেতৃত্বে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ জোর করে ১০ বছর ধরে দখল করে আছে। ওই সস্ত্রাসী গ্রুপটি তাদের উপর নির্যাতনও করে আসছে।
আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আমার কাছে আসলে আমি তাদের পাশে দাড়াই এবং প্রশাসনের সহযোগীতায় তাদের জমি পূনঃরুদ্ধার করে হিন্দুদের নিকট ফিরিয়ে দেই। এছাড়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদের জমিতে ৫০টি অবৈধ ঘর তুলে দিয়ে ঘড় প্রতি ২ লক্ষ টাকা করে মোট ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরে বলেন, গুলিশাখালী বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছেন।
ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম নিজস্ব লোকজনের নামে ভূয়া ভূমিহীন সার্টিফিকেট দিয়ে শত-শত একর জমির কার্ড করিয়ে পরবর্তীতে এভিডেভিডের মাধ্যম নিজ নামে পজেশন দখল করে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি আরো বলেন, মো. নুরুল ইসলাম আমার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছেন যাতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নয়ন মূলক কোন কাজ করতে না পারি। আমি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. মো.নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্টমন্ত্রীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানেরসাথে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা বারেক চৌকিদার, প্রধান শিক্ষক কাজী মোজাম্মেল হোসেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা মনিন্দ্রচন্দ্র শিল, গুলিশাখালী ইউনিয়নের সকল ইউপি সদস্যগন।