‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

0
‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জেলা: ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস ময়দানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভায় শনিবার (১১ মার্চ) বিকেলে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। ৮১ সালে যেদিন বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে। আমি জানতাম না কোথায় আমি থাকব, কিভাবে চলব- কোনো চিন্তা করিনি। শুধু একটা চিন্তা করেছি এ দেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন।

এদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে হবে। এদেশের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি দিতে হবে। গৃহহীন মানুষকে ঘর দিতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষকে উন্নত জীবন দিতে হবে। স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। শনিবার বিকালে ময়মনসিংহ জেলা সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহের বিভাগীয় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দেশে এক ইঞ্চি মাটিও পতিত থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের আনাচে কানাচে সব মাটিতে ফসল ফলাব।

নিজের খাবারের জন্য মাঠে কাজ করতে কোনো লজ্জা নেই। আমরা নিজেরা খাদ্যশস্য উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করব। আমরা আর কাছে হাত পাততে চাই না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করেছি। মানুষ এখন দেশে শান্তিতে বসবাস করছে। এখন আমাদের ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত আছে। বর্তমানে দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। তিনি বলেন, আমাদেরকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। আমরা নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। ২০৪১ সালে আমাদের জনগোষ্ঠী স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। আমাদের গ্রাম, কৃষি সবকিছু হবে স্মার্ট। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে, দেশের উন্নয়ন করা। আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

২১০০ সালের মধ্য ডেল্টা প্ল্যান করে এই ভূখণ্ড আরও উন্নত করব। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করে এই সভায় এসেছেন। আপনারা এই সভাকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন। আপনাদের উদ্দেশে বলতে চাই- ‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’। এর আগে জনসভায় যোগ দিয়ে একযোগে ১০৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে সমাবেশস্থল সার্কিট হাউজ মাঠ থেকে একযোগে ১০৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় ২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে জনসভা মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল ৩টায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। একই সঙ্গে নৌকা প্রতীকের রেপ্লিকা দেওয়া হয়। পরে জাতীয় সংগীত ও কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপরে গারোদের ভাষায় গান ও নাচ পরিবেশন করা হয়।

এরপর স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ এসেছিলেন। পাঁচ বছর পর আবার আজ তিনি ময়মনসিংহে গেছেন। তাঁর এ আগমন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে ময়মনসিংহ নগর। নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এদিকে আজ সকাল থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। জনসভায় মানুষের আসার সুবিধার্থে ময়মনসিংহ থেকে জামালপুর, নেত্রকোনা জেলা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলায় আজ চলছে আটটি বিশেষ ট্রেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here