স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীকে সম্মননা ক্রেস্ট প্রদান

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ঐতিহাসিক ৭মার্চ উপলক্ষে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে
দেশকে পাকহানাদারমুক্ত করার জন্য মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় মহান স্বাধীনতার মাসে সাবেক ত্রাণমন্ত্রী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ২ নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুন সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ও বৃহত্তর ঢাকা মহানগর আ’লীগের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে।

রোববার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে ঢাকার মরিয়ম টাওয়ারে চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ ওচমান গনি পাটোয়ারী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের হাতে এ সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। এসময় চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান,সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মতলব উত্তর উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন প্রস্তÍুতি কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার, জেলা পরিষদের সদস্য ও মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মোঃ মিনহাজ উদ্দিন খান, মোঃ আল-আমিন ফরাজী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল রইসলাম বীরউত্তম এমপিকেও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশকে পাকহানাদারমুক্ত করার জন্য মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় চাঁদপুর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। উল্লেখ্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ১৯৭১ সালের জুন মাস। একদল গেরিলা যোদ্ধা রাজধানী ঢাকা শহরে ভয়াবহ আক্রমনের পরিকল্পণা করছে। এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ২ নং সেক্টরের ক্র্যাক পাটুন সদস্য।

তাদের টার্গেট হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত বিদেশী পর্যটক, রাষ্ট্রদুত ও গণমাধ্যমকর্মীসহ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ মুক্তিযুদ্ধের বার্তা পৌছানো। একদিন দিনের আলো পেরিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ক্র্যাক প্লাটুন সদস্যদের বোমার ভয়াবহ শব্দে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসহ আশেপাশের এলাকা
প্রকম্পিত হয়ে উঠলো। বিশ্বের মানুষের কাছে বার্তা পৌছলো বাংলাদেশে মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ চলছে। এ অপারেশনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। জনাব মায়া চৌধুরী ১৯৬৫ সালে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজ নৈতিক জীবন শুরু করেন। তৎকালিন পাকিস্তান আমলে তিনি
বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি যুদ্ধকালীন ২ নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুনের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘বীরবিক্রম’ খেতাব লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির আহবায়ক ও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা করা হলে তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জাতীয় ৪ নেতার সাথে তিনিও গ্রেফতার হন। দীর্ঘ ৩ বছর কারারুদ্ধ থাকার পর হাইকোর্টে রীটের মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান। মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে তিনি ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।

১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবং সর্বশেষ তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। জনাব চৌধুরী ১৯৯৬ সালে ২৬১ চাঁদপুর-২ মতলব উত্তর থেকে প্রথমবার এবং ২০১৪ সালে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাসে এমএ পাশ করে পরে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন।

সঙ্গীত পিপাসু মায়া চৌধুরী মিউজিক কলেজ থেকে আই মিউজিক পাশ করেন। একজন জনদরদী মানুষ হিসেবে মায়া চৌধুরী এলাকার একাধিক  স্কুল-কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মতলব উত্তর উপজেলা, মতলব  পৌরসভা ও ছেংগারচর পৌরসভার উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা। তিনি  একান্ত প্রচেষ্টায় মতলব উত্তর ও দক্ষিন উপজেলায় অনেক রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার  উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। যার জন্য তাকে বলা হয়  আধুনক মতলবের রুপকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here