পাটমন্ত্রী গাজীর পত্রিকা ‘সংবাদচর্চা’য় শামীম ওসমানকে গডফাদার বলায় সমালোচনার ঝড়।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ এতদিন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লিখলেও দলের লোকেরা গা করেনি। কিন্তু পাটমন্ত্রী গাজীর পত্রিকা ‘সংবাদচর্চা’য় শামীম ওসমানকে গডফাদার হিসেবে উল্লেখ করায় আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। গতকাল নারায়ণগঞ্জে এটাই ছিল ‘টক অব দ্যা টাউন’। আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মতে, পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর একজন আওয়ামীলীগ নেতা এবং এমপি। তাঁর মালিকানাধীন পত্রিকায় দলীয় এমপি শামীম ওসমানকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার লেখার কারণ কি ? পাটমন্ত্রীর সাথে শামীম ওসমানের কি সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নাকি মন্ত্রীর কোন শুভাকাঙ্খি মন্ত্রীকে খুশি করতে আগ বাড়িয়ে একাজ করলেন ? সবই এখন ধোঁয়াসা।

তবে শীঘ্রই এর কারণ স্পষ্ট হবে। শামীম ওসমানকে গডফাদার লেখার কারণও জানা যাবে। উত্তর চাষাড়ার কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, সংবাদচর্চা পত্রিকাটার প্রিন্টার্স লাইনে যার নামই লেখা থাকুক না কেনো। আদতে পত্রিকাটা’র মূল মালিক পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক। গাজী সাহেবের টাকায় পত্রিকাটি বের হয়। এর অফিস চাষাড়া মোড়ে মাধবী পৌরপ্লাজা সংলগ্ন একটি ভবনের দোতালায়। পত্রিকাটি গতকাল প্রধান শিরানাম করেছে এমপি শামীম ওসমানকে নিয়ে। সংবাদে ইনিয়ে বিনিয়ে লিখেছে শামীম ওসমান একজন গডফাদার। এই সংবাদে এমপি শামীম ওসমানের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। এতদিন অন্যান্য পত্রিকা লিখলেও গাজী সাহেব দলের লোক। তিনি বর্তমানে দলের মন্ত্রী। তাঁর পত্রিকায় গডফাদার লিখে পরোক্ষভাবে শামীম ওসমানকে গডফাদার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হল। অন্যের পত্রিকায় লেখা আর দলীয় মন্ত্রীর পত্রিকায় লেখার মধ্যে ফারাক আকাশ-পাতাল। শামীম ওসমানকে গডফাদার স্বীকৃতি দিয়ে কি লাভ হল মন্ত্রী গাজী সাহেবের !

ক্ষতি যা হওয়ার দলের ও শামীম ওসমানের হল। এখন কিছু হলেই অন্যেরা আঙুল তাক করে শামীম ওসমানকে বলবে গডফাদার। গাজী সাহেব এর পত্রিকায় শামীম ওসমানকে গডফাদার বানালো কেন- তা গাজী সাহেবই ভাল জানেন। এরপর হাজার সংশোধনী ও প্রতিবাদ ছাপিয়ে কোন ফল হবেনা। হঠাৎ করে গাজী সাহেবের পত্রিকা শামীম ওসমানকে কেনো টার্গেট করলো। এ প্রশ্নের উত্তর মিলছেনা। গাজী সাহেবতো বিএনপি নেতা নন। তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। তাহলে তিনি শামীম ওসমানকে নিয়ে নতুন এ অপপ্রচারনা চাচ্ছেন কোন স্বার্থে। আমরা যতদূর জানি উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভাল।

জানাগেছে, গাজী সাহেবের পত্রিকা সংবাদচর্চা লিখেছে, তার ডাকে হাজার লোকের সমাগম হয়। অনুগত সুবিধাভোগীও কম নয়। এক সময় তাঁর হুঙ্কারে কেঁপে উঠতো নারায়ণগঞ্জ। সেই শামীম ওসমান এখন নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। সংসদে তিনি বলেছেন, তাঁর এলাকায় চাঁদাবাজি হচ্ছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কার ঘাড়ে ক’টা মাথা আছে উনার এলাকায় চাঁদাবাজি করবে। সে নিজেই গডফাদার। ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শামীম ওসমান ছিলেন এ শহরের দন্ডমুন্ডের কর্তা। তিনি হুকুম দিতেন আর তাঁর খলিফা বাহিনী অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। ওই সময়ে জেলায় আরো ৪ জন এমপি থাকলেও তাঁর দাপটে তাঁরা ছিলেন অসহায়। তখন শামীম বাহিনীর কাছে নিজের দলের নেতারাও নিরাপদ ছিলেন না।

ওই সময়ে তার অনুগতদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন অধ্যাপিকা নাজমা রহমান। লাঞ্ছিত হয়েছেন সেই সময়ের তুখোড় যুবলীগ নেতা কামাল মৃধা। তবে আগের সেই ক্ষমতা এখন শামীম ওসমানের নেই। তাই বলে একেবারে চুপ করে বসে থাকেন না তিনি। এখনো তাঁর অনুগতরাই ঠিকাদারি, চোরাই তেল, ঝুট, পরিবহনসহ নানা সেক্টর দখল করে রেখেছে। মাঝে মধ্যে হুঙ্কার ছাড়েন তিনি। কিছুদিন আগে পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও বলেছেন নানা কথা। পুলিশ সুপারকে জড়িয়েও কয়েকটি কথা লিখেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here