নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে আছে মহেশপুরের ঘানি ভাঙা শিল্প

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ  জিয়াউর রহমান জিয়া, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা: আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার সব ঐতিহ্য একে একে হারনোর পথে। এই সবের মধ্যে কলুর বলদ অন্যতম। আগে কলুর বলদের
মাধ্যমেই ঘানি ভেঙ্গে তেল তৈরী করা হতো গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে। কিন্তু প্রযুক্তির ছোঁয়ার ফলে এখন আর নেই সেই ঘানি, বা ঘানি ভেঙে তেল তৈরির প্রক্রিয়াটি।

তবে বর্তমান সময়ে এখনো অনেকেই লাভ-ক্ষতির হিসেবে না গিয়ে সন্ধান করে চলেছেন প্রাকৃতিক বিশুদ্ধতার। বাপ-দাদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে নানা প্রতিকুলতার মধ্যে আজও সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ। যেখানে রয়েছে কলু,কলুর বলদ,চটকা কড়াই কাঠ ও বাবলা কাঠ মিশ্রিত ঘানি,দেশি সরিষা আর শতভাগ বিশুদ্ধতা। কাঠের বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো হাতে তৈরি যন্ত্রের চারিদিকে নির্বিকারভাবে ঘুরে চলেছে কলুর বলদ, তার দু’চোখ বাঁধা বাঁশের তৈরি বিশেষ ধরণের দুটি ছোট ঝুড়ি তার উপর কাপড় দিয়ে।

কোন রকম অসম্মতি ছাড়াই অনবরত ঘুরে চলছে গরু। আর তৈরি হচ্ছে তেল দেশি সরিষার খাঁটি তেল। ফোটায় ফোটায় তেল জমা হচ্ছে নিচে রাখা পাত্রে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের আবু বক্কর, মোতালেব মালিথা,কানাইডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার, খালেক মালিথা, শহিদুল মালিথা,পুরনন্দপুর গ্রামের আব্দুল মালেক, আব্দুল জলিল, বজরাপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস,লিটন মালিথা সবাই এই শিল্পকে তাদের পেশা হিসাবে নিয়েছেন। এই শিল্পের উপর তাদের পুরো পরিবারের জীবন জীবিকা জড়িত। তারা প্রত্যেকে প্রতিদিন ১২ কেজি করে ঘানি ভাঙায়।

যা থেকে কোন রকম তাদের সংসার চলে। কখনও কখনও নিজে কেনা সরিয়া, নারিকেল বা তিল ভাঙ্গিয়ে তেল তৈরি করছেন। আবার কখনো অন্যের জিনিস ভাংগিয়ে তেল তৈরী করে টাকা নিচ্ছেন। ঘানি ভাঙ্গা শিল্পের সাথে জড়িত কানাইডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার জানান, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তেল তৈরিতে সময়, শ্রম ও খরচ দুটোই অনেক বেশি প্রয়োজন হয়। শক্তিশালী গরুগুলোর খাবার জোগাতেও খরচ হয় অনেক অর্থ। আর তাই এই তেলের দামটিও বেশি।

তবে দাম বেশি হলেও প্রায় দু:প্রাপ্য এই ঘানি তেলের চাহিদা ব্যাপক। এব্যাপারে একতারপুর গ্রামের আবুবক্কর মালিথার স্ত্রী সোনীয়া খাতুন জানান, এপর্যন্ত কেউ কোন খোজও নেয়নি এবং সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। তবে উষা নামে একটি এনজিও থেকে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা লোন করে বিপাকে পড়েছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here