প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ কামরুজ্জামান হারুন: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প। এটি চাঁদপুর মতলব উত্তরে অবস্থিত। প্রকল্পের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সোনালী। সবুজ ধান গাছের সোনালী শিষে সোনা মাখা রোদ যেন ঝিল মিলিয়ে হাঁসছে। তবে কৃষকের মুখে হাসি নেই।
বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধানের নেক ব্লাস্ট লিফ ব্লাস্ট রোগ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে দুশ্চিন্তায় কৃষকের ঘুম নেই। মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এ মৌসুমে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ৯ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।এ মৌসুমের সেচ প্রকল্পে ব্রি-১১,১৬, ২৮,২৯, ৩৩, ৫৯,৬৪,৭৪,৭৫ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছিল। এ ছাড়াও ৫শ হেক্টর জমিতে ধানের প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে।
সরেজমিন সেচ প্রকল্পের খাগকান্দা, ওটারচর, হানির পাড়, তালতলী, ঠাকুরচর, সুজাতপুর, ব্রাহ্মণ চক, মিঠুর কান্দি, জীবগাও,পাঁচগাছিয়া,কালিপুর, ষাটনল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন।
কিন্তু বাধ সেজেছে নেক ব্লাস্ট রোগ। কৃষকের ধানে নেক ব্লাস্ট রোগের কারণে বি-২৮ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ধান পাকার আগে এক পর্যায়ে ধানের পাতা ঝলসে যায়। এছাড়াও ধান সাদা হয়ে চিটা হয়ে গেছে। এ মৌসুমের সেচ প্রকল্পে ২ হাজার হেক্টর জমিতে বি- ২৮ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছিল।
মতলব উত্তরের ৪৩ টি কৃষি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে ময়দানে ছুটে গিয়ে কৃষকদের ধান রক্ষায় প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। পাঁচগাছিয়া গ্রামের কৃষক আমান উল্লাহ (৪৮) বলেন, ৩০ শতক জমিতে বি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেছি। নেক ব্লাস্ট রোগের কারণে সম্পূর্ণ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। গো-খাদ্য ছাড়া আর কিছুই পাবো না। তালতলী গ্রামের কৃষক হাজী তোফাজ্জল হোসেন (৬৫) জানান,ধানের নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এক পর্যায়ে ধানের পাতা ঝলছে যায়। এছাড়াও ধান সাদা হয়ে চিটা হয়ে যায়
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু জানান, আমাদের উপজেলায় ৪৩ টি ব্লকে ১২ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পর্যাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা না থাকার পরও মাত্র ১২ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ভাইরাসে মাঠে ময়দানে দায়িত্ব পালন করছেন। মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন বলেন,আমরা ব্রি-২৮ ধান রোপণ না করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। তিনি জানান, ব্লাস্ট রোগ থেকে রক্ষা করতে হলে ধানে শীষ বের হওয়ার আগেই জমিতে ট্রপার, ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ফিলিয়া পরিমাণ মতো ৫-৭ দিন অন্তর দুবার প্রয়োগ করতে হয়।
বোরো মৌসুমে সেচ প্রকল্পে ৯ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। এ মৌসুমে বোরো বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন চাল।