প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃকামরুজ্জামান হারুন চাঁদপুর প্রতিনিধি: হাজীগঞ্জের কাপাইকাপ ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার ২ শিক্ষার্থী কোচিং ফি না দেয়ায় বেত দিয়ে পিটিয়ে মারত্মক আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহতরা হলো, ওই মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী লোধপাড়া গ্রামের শহীদ উল্যাহ ও নূরে আলমের মেয়ে।
এ ঘটনায় আহত ওই দুই শিক্ষার্থীর পরিবার চিকিৎসার জন্য তাদেরকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
জানা গেছে, ৩ নভেম্বর সকালে মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।তবে নির্যাতনের ভয়ে মূখ খুলেনি ওই শিক্ষার্থীরা। বাড়ীতে এসে তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে আহত দুই ছাত্রী হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নারী ও শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীরা বলেন, সকালে শ্রেণি কক্ষের সামনে খেলতে ছিলাম। এ সময় আব্দুল হালিম হুজুর এসে আমাদের কাছে কোচিংয়ের টাকার কথা বলে । আমারা টাকা নেইনি বলে জানাই।
পরে ক্লাসের পাঠ না পাড়ার অযুহাতে আমাদের প্রচন্ডভাবে বেত দিয়ে আঘাত করে। ওই ছাত্রীরা আরো বলেন, আমরা আগের দিন মাদরাসায় না যাওয়ায় পূর্বের দিন কি পড়িয়ে ছিলো জানিনা। এটা বলার পর আরো বেশী মারে। এতে তারা দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়লে ওইদিন বিকেলে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ২ ছাত্রীর মা জানান, কোচিং টাকা সময় হলে দিয়ে দেই। কখনো একটু দেরি হয়। এজন্য হুজুর এতো মারতে পারেনা। পড়া না পারার কারণে হুজুররা মারে। কিন্তু টাকার জন্য কোনো শিক্ষক কি এভাবে মারতে পারে।
ছাত্রীদের পরিবার আরো জানান, (রোববার) বিকেলেই মাদরাসার অধ্যক্ষ, অভিযুক্ত শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকেরা হাসপাতালে এসে তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ক্ষমা প্রার্থনা করেন।মাদরাসার অধ্যক্ষ এটিএম আব্দুল হাই জানান, মাদরাসার পক্ষ থেকে আহত দুই ছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। নোটিসের জবাব পেলে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মাদরাসার সভাপতি মো. শাহাজাহান জানান, ওই শিক্ষককে মাদ্রাসার চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু জানান, তদন্ত পূর্বক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আহত দুই ছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়ার জন্যে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ মাদরাসার আরবি বিভাগের শিক্ষক আব্দুল জলিল ২০১০ সালের ৩ আগস্ট ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ওই ঘটনায় মেয়েটি সন্তান সম্ভবা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে জাতীয় আইনজীবী সমিতি মেয়েটিকে আইনগত সহায়তা দেয়। ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও নগদ এক লাখ টাকা অর্থদন্ডের রায় দিয়েছিলেন আদালত।