ঝুকিপূর্ণ লাকসাম-চাঁদপুর রুটের, লাকসাম রেল সেতু: দূর্ঘটনার আশংকা।

0

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ এইচ এম মহিউদ্দিন: রেলওয়ের উন্নয়নে বর্তমান সরকার খুবই আন্তরিক। নেয়া হচ্ছে নানা উন্নয়নমূখী উদ্যোগ। চলমান রয়েছে অর্ধশত প্রকল্প। পাশাপাশি ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনাও রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রেলওয়েতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্রুতগতিসম্পন্ন বুলেট ও বৈদ্যুতিক ট্রেন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আর প্রতি বছরই বিভিন্ন রুটে নামছে নতুন নতুন আন্তঃনগর ট্রেন। কিন্তু সবকিছুই এক রকম নিষ্ফল করে দিচ্ছে জরাজীর্ণ সেতু ও রেললাইন। যে পথ দিয়ে ট্রেন চলাচল করে সেই রেলপথ দেখার যেন কেউ নেই। রেললাইন সংস্কার, মেরামত ও পরিদর্শনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এক রকম নির্বিকার থাকছেন।

জানা গেছে, রেলপথের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সময়ই খোলা থাকে ফিশপ্লেট, ক্লিপ, হুক, নাটবল্টু, হুক বোল্ডসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ। এমনকি রেললাইন মজবুত ও স্থিতিশীল রাখতে স্থাপিত স্লিপারগুলোর অবস্থাও নাজুক। আর সবচেয়ে আতংকের বিষয় হচ্ছে- রেলসেতুর মূল অংশের সাথে স্লিপারের সংযোগকারী হুক বোল্ডগুলো সরে গেছে। আবার অনেক স্থানে ব্রীজের মূল অংশের লোহার প্লেট জোড়া লাগানো স্থায়ী জয়েন্ট নাটগুলো ঝং ধরে খসে পড়েছে। এতে সেতুর সাথে সংযোগহীন রেললাইনে যে কোন সময় ট্রেন লাইনচ্যুৎ হয়ে যাত্রীসাধারণের প্রাণহানীর আশংকা দেখা দিয়েছে।

আবার এসব স্লিপারকে যথাস্থানে রাখতে যে পরিমাণ পাথর থাকা প্রয়োজন, অধিকাংশ স্থানেই তা নেই। কোনো কোনো স্থানে পাথরশূন্য অবস্থায় আছে স্লিপারগুলো। শুধু লাকসামে দু’টিই নয়; সারাদেশে রয়েছে ৩০০৬টি রেলসেতু। যার ৯০ শতাংশই তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে সচল রাখা হয়েছে সেতুগুলো। আবার ছোট ছোট কালভার্টগুলোর একই দশা। এগুলোর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিভিন্ন রুটের ট্রেন। সব মিলিয়ে এক রকম ‘মরণফাঁদ’-এ পরিণত হয়েছে গোটা রেলপথ।

অগ্রাধিকার ও জরুরিভিত্তিতে এসব রেললাইন ও সেতু সংস্কার এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে কুলাউড়ার মতো ফের বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পর কিছু সময়ের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে দায়িত্বপ্রাপ্তরা। নেয়া হয় নানা পদক্ষেপ। গঠন করা হয় একের পর এক তদন্ত কমিটি। কিন্তু অধিকাংশ কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। আবার যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, সেগুলোর সুপারিশমালার বেশির ভাগই থাকে অবাস্তবায়িত। সম্প্রতি কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু ও লাইন বর্ষার আগেই সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এ নির্দেশের পরও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে রেলপথ সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রেলপথ সংস্কার এবং যথাযথ মেরামত রাখা যাদের দায়িত্ব, তারা যদি দায়িত্বে কোনো গাফিলতি করেন, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি কারো দায়িত্বে অবহেলার জন্য লাইনচ্যুতি কিংবা দুর্ঘটনা ঘটে, তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, পুরনো লাইন সংস্কারসহ নতুন লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার রেলে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। লাইনের ত্রুটির জন্য দুর্ঘটনা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা আশা করছি, এমন পরিস্থিতি থাকবে না। এক প্রশ্নের উত্তরে রেলসচিব বলেছেন, রেলপথে নাটবল্টু, ক্লিপ-হুক কিংবা ফিশপ্লেট কিছুতেই খোলা থাকতে পারে না। এটা নিশ্চয় সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়।

খোদ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে বিভাগের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রেলপথে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ৯০ শতাংশ ট্রেন লাইনচ্যুত হচ্ছে শুধু লাইনে পর্যাপ্ত পাথর না থাকায়। রেলে ব্রিটিশ আমলের রেলওয়ে ব্রিজ রয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এসব ব্রিজের স্লিপার জরাজীর্ণ, লাইনে নেই ক্লিপ-হুক, ফিশপ্লেটও।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোথাও কোথায় বাঁশ দিয়ে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন রেলসেতু। পুরো রেলপথে প্রতি বছর ২২ লাখ ঘনফুট পাথর প্রয়োজন হলেও দেয়া হচ্ছে ১০ থেকে ১২ লাখ ঘনফুট পাথর। পুরো রেলপথে পূর্ণমাত্রায় পাথর দিতে ১ বছরে খরচ হয় ৩৩ কোটি টাকা। সেখানে রেলওয়ের লাইনচ্যুৎ বগি ও ইঞ্জিন উদ্ধার এবং লাইন মেরামতে প্রতি মাসেই খরচ করছে ৮ কোটি টাকারও বেশি। বছরে যা দাঁড়ায় শত কোটি টাকায়।

লাকসাম রেলওয়ে জংশন থেকে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও চাঁদপুর রুটে রাত-দিন অসংখ্য ট্রেন চলাচল করে থাকে। রুটগুলোর মধ্যে লাকসাম-চট্টগ্রাম ডাবল লাইনের পর লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইনের কাজ চলছে। অন্যদিকে, লাকসাম-নোয়াখালী ও লাকসাম চাঁদপুর রুটের বিভিন্ন স্থানে রেলসেতুর অবস্থা নাজুক আর লাইনের অনেক স্থানে রয়েছে ভাঙা স্লিপার, ক্লিপ-হুক, খোলা নাটবল্টু ও ফিশপ্লেট।

লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে চিতোষী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, লাকসাম পৌরসভার পেয়ারাপুর নামক স্থানের রেল সেতুটির অনেক স্থানে স্লিপার ভাঙ্গা, পঁচে খসে খসে পড়ছে। আর নিচ থেকে রেল সেতুর মূল অংশের সাথে স্লিপারের সংযোগকারী হুক বোল্ড সরে গেছে। এ সেতুর চাইতেও খারাপ অবস্থা উপজেলার কাগৈয়া ব্রীজের। এ ব্রীজের অনেকগুলো স্লিপার ভাঙ্গা ও পঁচে গেছে। অনেক স্থানে নাটবল্টু, ক্লিপ-হুক, ফিশপ্লেট খোলা। মূল আতংকের বিষয় হলো- সেতুটির মূল অংশের লোহার প্লেটগুলোর সংযোগকারী স্থায়ী জয়েন্টগুলো ঝং ধরে খসে গেছে। আবার ব্রীজের মূল লোহার প্লেটের সাথে স্লিপারের সংযোগকারী এঙ্গেল নাটের ৯৫ ভাগেরই কোন সংযোগ নেই। এতে অনেকটা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে সেতুটি।

অন্যদিকে, রেললাইনের বিভিন্ন স্থানে পাথরবিহীন লাইন, নাটবোল্টু, ক্লিপ-হুক, ফিশপ্লেট খোলা অবস্থায় স্লিপার ও লোহার লাইন রয়েছে। লাইন জুড়ে অসংখ্য স্লিপার ভাঙা এবং নাটবোল্টু, ক্লিপ-হুক, ফিশপ্লেট খোলা অবস্থায় আছে। পেয়ারাপুর এলাকার বাসিন্দা মমতাজ মিয়া জানান, রেললাইনের হুকবোল্ডগুলো খোলা থাকায় ব্রীজের নিচের দিকে চোখ গেলে বুক ধড়পর করে উঠে। অনেকগুলো স্লিপার পঁচে খসে খসে পড়ছে। ব্রীজটি তাড়াতাড়ি সংস্কার করা দরকার।

অন্যদিকে, কাগৈয়া রেলসেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত ফুলহরা গ্রামের মোবারক হোসেন, শাহেদসহ কয়েজন স্থানিয় বাসিন্দা জানান, এ ব্রিজে ট্রেন উঠলে বিকট শব্দ হয়। ব্রীজের হুকবোল্ডগুলোর ৯৫ ভাগ খোলা। বেশিরভাগ স্লিপার ভাঙ্গা, হুক, ফিশপ্লেট, নাটবল্টু খোলা। তাছাড়া এ ব্রিজের উপর দিয়ে স্থানীয় কাগৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। ব্রীজের কাছাকাছি দূরত্বে ট্রেনগুলো হুইসেল দেয় না। কোনরকম দুর্ঘটনা হলে এ এলাকায় মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে। আর লাইন মেরামতকারীরা নিয়মিত আসেনা। কয়েকদিন পর আসলেও তারা রেললাইনের পাশের গাছ কাটা হলো কিনা- সে বিষয়েই ব্যস্ত থাকে।

ব্রীজের পূর্বপাড়ের চা দোকানদার আবুল কালাম জানান, এ সেতুটি বুড়ো হয়ে গেছে। নাট-বল্টু, হুকবোল্ড, স্লিপার, ফিশপ্লেট ঠিক নেই। যে কোন সময় ট্রেন এক্সিডেন্ট হতে পারে। আমরা এলাকাবাসী সরকারের কাছে ব্রীজটি দ্রুত পূণঃনির্মাণের আবেদন জানাই।

জরাজীর্ণ স্লিপার ও খোলা স্থানগুলো মাসের পর মাস ধরে যে সংস্কার হচ্ছে না- তা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে। লাইনে নির্ধারিত দূরত্বের মধ্যে (প্রায় ৪০-৫০ ফুট) পয়েন্ট রয়েছে। এসব পয়েন্টের মধ্যে দু’পাশে ৮টি করে মোট ১৬টি নাট-বোল্টুসহ ১৬টি হুক-ক্লিপ থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ পয়েন্টের মধ্যে ১৬টির স্থলে ৫-৭টি রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ পয়েন্টগুলো খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। পঁচে কিংবা ফেটে গেছে সিøপারগুলো।
অধিকাংশ লাইনের পয়েন্ট (জোড়ার স্থল) নাটবোল্টু খোলা রয়েছে। এসব পয়েন্ট দিয়ে যখন ট্রেন চলাচল করে তখন শোনা যায় বিকট শব্দ।

আর অধিকাংশ স্লিপারের সঙ্গে লাইনটি লাগানো নয়। ক্লিপ খোলা! ফিশপ্লেট খোলা। হুক খোলা। কোথাও কোথাও কিছু পাথর আছে। আবার কোথাও একেবারেই পাথর নেই। রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলপথ দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। নাটবোল্টু, হুক-ক্লিপ-ফিশপ্লেট ও পাথর চুরি হচ্ছে। পুরো রেলওয়েতে প্রায় ৮০টি সেকশন রয়েছে। এসব সেকশনে রেললাইন দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে স্থায়ী রেলপথ পরিদর্শক (পিডব্লিউআই)। যাদের তত্ত্বাবধানে থাকে ওয়েম্যান।

ওয়েম্যানরাই মূলতঃ লাইন রক্ষণাবেক্ষণ করেন। কিন্তু ওয়েম্যানসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ১১ হাজার। ৮ জন ওয়েম্যান একত্রিত হয়ে একটি গ্যাং করা হয়। একেকটি গ্যাং ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার রেলপথ প্রতিদিন দেখাশোনার কথা। বর্তমানে প্রতি গ্যাংয়ে ১-২ জন ওয়েম্যান রয়েছে। কোনো কোনো সেকশন গ্যাংয়ে ওয়েম্যানই নেই। ফলে দিনের পর দিন রক্ষণাবেক্ষণ হয় না রেললাইন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক প্রকৌশলী জানান, পুরো রেলে হাজার হাজার স্লিপার জরাজীর্ণ রয়েছে। নাটবোল্টু, হুক-ক্লিপ, ফিশপ্লেট খোলা অবস্থায় রয়েছে পদে পদে। এসব মেরামত কিংবা পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাথাব্যথা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তথা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ শুধু প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত। মাঠ পর্যায়ে যে কাজের স্বল্পতা রয়েছে সেদিকে খেয়ালই নেই।

তিনি বলেন, নিয়মানুসারে একটি স্লিপার কিংবা নাটবোল্টু, ক্লিপ-হুক-ফিশপ্লেট খোলা থাকলে প্রয়োজনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে হলেও তা সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নাটবল্টু, হুক-ক্লিপ-ফিশপ্লেট খোলা থাকতে পারে না। ওয়েম্যানরা প্রতিদিন লাইন পরিদর্শন করবে, এমন ত্রুটি দেখা মাত্রই তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবে এবং সেই সমস্যা সমাধান করবে। রেলে এ নিয়মটাই নেই!

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছরে যেসব ওয়েম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা মাঠে কাজ করতে চায় না। তাদের কিছু বলাও যায় না। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গালমন্দ পর্যন্ত করছে তারা। একই অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমাঞ্চলে কর্মরত ওয়েম্যানদের বেলায়ও। মাঠ পর্যায়ের এসব কর্মচারীর কেউ কেউ আবার রেলের বিভিন্ন অফিস ও কর্মকর্তাদের বাসায় কাজ করছেন।

রেলওয়ে মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জরাজীর্ণ রেলপথের জন্য। লাইন হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এ লাইনই যদি ঝুঁকিপূর্ণ থাকে, ত্রুটি থাকে তাহলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। পুরো রেলে একটি হুক-ক্লিপ কিংবা ফিশপ্লেট খোলা থাকলেও সেটি মারাত্মক ঝুঁকি। পুরো রেলওয়েতে যেসব সেকশনে এমন অবস্থা পাওয়া যাবে, সেই সব সেকশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অবস্থায়ই একটি লাইনে স্লিপার নষ্ট কিংবা ক্লিপ-হুক, ফিশপ্লেট খোলা থাকতে পারে না। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে। তা যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করা হবে।

লাকসাম রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার কামরুল হাসান তালুকদার জানান, লাকসাম রেলওয়ে জংশন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট, চাঁদপুর এ ৫ রেলপথের মোহনা। লাকসাম রেলওয়ে জংশনের ৫টি রেলপথে প্রতিদিন আন্তঃনগর, লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেনসহ ৩৮টি ট্রেন আসা-যাওয়া করে। স্টেশনের প্লাটফর্মে ট্রেন চলাচলের জন্য ১১টি পৃথক লাইন রয়েছে। তম্মধ্যে ১টি রেললাইন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ায় সেটি সাইডিং এবং ৩টি গুডস -এর কাজে ব্যবহৃত হয়। বাকি ৭টি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, এ বিষয়টি রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ দেখাশুনা করে।

পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথের লাকসাম অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী (আইডব্লিউ) মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, নিয়মিতভাবে রেলপথের মেরামত কাজ হয়। একবারেই এ কাজ শেষ হয় না। তবে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, এ অঞ্চলের রেললাইন ও সেতুগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যেই ঊর্ধ্বতনর্ কতৃঅপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। আশা করি শীঘ্রই সেতুগুলোর সংস্কার শুরু হবে। তিনি বলেন, রেললাইনের যেসব স্থানে পাথর নেই, সেসব স্থানে পাথর দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here