প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মো: মাহফুজুর রহমান,গৌরীপুর ( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : গৌরীপুর পৌর শহরে কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন শামীম আলভী। কিন্ত করোনকালে কোচিং বন্ধ হলে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। তখন তার অলস সময় কাটতো বাড়িতে বসে বসে। একদিন ইউটিউববে সাইলেজ উৎপাদন দেখে যোগাযোগ করেন স্থানীয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে।
সেখান থেকে কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে ভুট্টা চাষ করে কর্ন সাইলেজ উৎপাদন শুরু করেন এই উদ্যোক্তা। শুরুর দিকটা কঠিন হলেও এখন তিনি অনেকটা সফল। ২০২২ সাল উপজেলায় ১৭ একর জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা আবাদ করেন শামীম। ভুট্টার চারা জমিতে রোপনের ৮০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ভুট্টা গাছ কর্ন সাইলেজ করার উপযোগী হয়। পরে সেগুলো কেটে খামারেই মেশিনের সাহায্যে প্রক্রিয়াজাত করে প্যাকেট করে বাজারজাত করেন ‘সাফিনা সাইলেজ’ নামে। গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে সাফিনা সাইলেজের খামার।
সেখনে ভুট্টার কর্ণ সাফিনা সাইলেজ প্রতি প্যাকেট খুচরা ৬০০ টাকা ও পাইকারি ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে সাইলেজের চাহিদা থাকায় ২০২২ সালে প্রথমবার ভুট্টা চাষ করে ছয় মাসের মধ্যেই বিনিয়োগের ১২ লাখ টাকা উঠিয়ে লাভের মুখ দেখেন শামীম। এই বছর সাইলেজ উৎপাদনের জন্য ভুট্টা আবাদ করেছেন ৫০ একর জমিতে। স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অনলাইনে সারাদেশে সাইলেজ বিক্রি করে ভালো টাকা আয় করছেন তিনি।
প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ টন সাইলেজ বিক্রি করে ভালো টাকা আয় করছেন তিনি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. হারুন-অর- রশিদ বলেন, সাইলেজ মূলত সবুজ ঘাস সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া। এই অঞ্চলে শামীম প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে ভুট্টার সাইলেজ তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেছে।সাইলেজ গবাদি পশুর দুধ ও মাংস বৃদ্ধি করে৷ তার দেখাদেখি অন্য বেকার যুবক ও উদ্যোক্তারা সাইলেজ তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
কেন্দুয়ার জান্নাত ডেইরি এন্ড ফ্যাটেনিং এর পরিচালক রোকন বলেন, অনেক উদ্যোক্তা পণ্যের মানের চেয়ে ব্যবসার চিন্তা করে বেশি। তবে শামীম শুধু ব্যবসার চেয়ে পণ্যের গুণগত মান ভালো রেখেছে। তারসাইলেজের মান অত্যন্ত ভালো। এটা দেয়ার সাথে সাথে গরু খেয়ে শেষ করে ফেলে। পৌর শহরের খামারি মীম বলেন, বোরো মৌসুমে আমাদের জমিতে ধান চাষ হওয়ায় গরু চড়ানো কিংবা ঘাস পাওয়া যায় না।
তখন পশুর খাদ্য সংকট দেখা দেয়। শামীম ভাইয়ের এখানে থেকে আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন সাইলেজ পেয়ে থাকি। উদ্যোক্তা শামীম আলভী বলেন, করোনায় কোচিং সেন্টার বন্ধ হলে অর্থ সংকটে পড়ি। তবে সাইলেজ বেচে এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বড় বড় খামারিরা আমার সাইলেজ নিয়ে যায়। গত ছয় মাসে ধাপে সাইলেজ বেচে বিনিয়োগের টাকা উঠে এসে লাভের মুখ দেখেছি।