প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ আমি এখন ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী আর আমার মনে নানা প্রশ্ন নিজের অজান্তে চলে আসে। আমি সব সময় ভাবি, আমিতো বাড়িতে থাকছি পরিবারের সাথে ভালো জীবন-যাপন করছি। পড়া লেখা করছি। কিন্তু অপরদিকে আমার বয়সীাা ছোট-বড় অনেক শিশুদের দেখি যারা রাস্তার পাশে বসবাস করছে। ওরা কেন রাস্তায়, লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, বাস- স্ট্যান্ড, ওভারব্রিজ এবং শহরের নানা
জায়গায় জীবনের ঝ্ুঁকি নিয়ে থাকছে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে কথা বলি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী পথশিশুর সাথে জিজ্ঞাসা করি তাকে কেন তুমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করছো।
প্রথমে সে বলতে সংকোচ বোধ করলেও পরে কাঁদতে কাঁদতে তার জীবনের করুন কাহীনি বলা শুরু করে। সে যখন খুব ছোট তার মা মারা যায়, অভাবের সংসার ছিল বাবা একদিন হঠাৎ করে তার অসুস্থ নানির কাছে তাকে ফেলে রেখে যায়। আর কোনদিন খোজ নেয়নি। নানী বস্তির ভাঙ্গা ঘরে কোনোরকম ভিক্ষা করে জীবন-যাপন করতো। করোনার সময় অসুস্থ হয়ে নানী ও মারা যায়, এখন সে বড় একা বাবা-মা, আত্মীয় কেউ নেই। তাই রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে।
আর সারাদিন ভিক্ষা করে যে টাকা পাঁয়তার পুরোটা সে তার নিজের জন্য খরচ করতে পারেনা, অসৎ লোক যে তাকে এ ভিক্ষা বৃত্তির কাজের জন্য ব্যবহার করছে সে নিয়ে নেয়। কোথাও তার যাওয়ার জায়গা নেই, কথাগুলো বলছে আর এ পৃথিবীর প্রতি তার অনেক অভিমান প্রকাশ করছে। বাস্তবতা খুব কঠিন, শিশু অধিকার নিয়ে কত কথা,কত সংস্থা কাজ করছে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা নগ্ন। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদেও সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
বেসরকারি সংগঠন অ্যাকশন এইড এর একটি প্রতিবেদন পড়েছিলাম সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে-”শুধু ঢাকায় আড়াইলাখের মত পথ শিশু রয়েছে। যারা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে”সংগঠনটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেছিলেন – ”ভিক্ষা ছাড়াও চুরি,
ছিনতাই এবং মাদকের ব্যবসা এদের দিয়ে করানো হচ্ছে।
”আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও দেশকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারিনা তাই-শিশুশ্রম,রাস্তায়বসবাসকারীশিশু,প্রতিবন্ধী পথশিশু বিভিন্ন পেশায় ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের পূর্ণবাসন ও শিশুদের মৌলিক ও নৈতিক অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে দেশ ও জাতির ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের মত প্রতিটি শিশু তাদের অধিকার ফিরে পেলে, তবেই দেশের উন্নতি হবে। আমরাই শিশু আমরাই কুড়ি, তোমরা সবাই আমাদের ফুলের মত ফুটতে, স্বতস্ফুর্তভাবে