প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি॥ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পায়রা নদীর মোহনা বরগুনার তালতলী উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের জয়ালভাঙ্গার বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বেরিবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে ২/১ দিনেই ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানতে পারে উপকুলে। এর ফলে সাগরে জলোচ্ছাসের সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় ওই এলাকার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ আতংকে দিন কাটাচ্ছে।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলা শহরের এক বিশাল এলাকা রয়েছে ওই ইউনিয়নের মধ্যে। যা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। বিগত ২০০৭ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরে ওই এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বেরিবাঁধ (ওয়াপদা) ভেঙে পানি ভিতরে প্রবেশ করে। তখনকার ঐ ঘটনায় সাবেক তালতলী-আমতলী উপজেলায় ২২১ জন মানুষ প্রান হারায়। তখনকার সময় এসব লোক মারা গেছে, যারা বেরীবাঁধের বাইরে ছিল এবং নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের জয়ালভাঙ্গা এলাকার বেরীবাধ ভেঙ্গে পানি ভিতরে ঢুকে তলিয়ে যাওয়ায় চুবনি খেতে খেতে। এ ঘূর্নিঝড়ে জয়ালভাঙ্গার মাত্র ৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বেরিবাঁধ ভেঙ্গে যায়। পর্যায়ক্রমে তা এলাকাবাসীর স্ব-শ্রমে ও ইউনিয়ন পরিষদের তরফ থেকে কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে রাখলেও সরকারি ভাবে আজও পুনঃ নির্মাণ করা হয়নি।
একাধিক স্থানীয়রা জানান, এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ জেলে পেশায় নিয়োজিত। মৎস্য বন্দর পার্শ^বর্তী উপজেলা পাথরঘাটার সাথে একমাত্র যোগাযোগ ১ টি ছোট লঞ্চ। এলাকাটি দিন দিন নতুনভাবে ভাঙ্গনের কারনে নেই কোন নির্ধারিত লঞ্চঘাট টার্মিনাল ও যাত্রী ছাউনি। এলাকার লোকজন বহুবার স্ব-শ্রমে বেরিবাধ নির্মাণ করলেও তা পরবর্তিতে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজন সরকারী পদক্ষেপ এবং টেকসই বেরিবাধ নির্মানের দাবী জানান। শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় মোখার কারনে পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়ার খবরে তাদের চোখে ঘুম নেই বলেও জানান তারা।
নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, উপজেলার নদী কবলিত এলাকা এ ইউনিয়নের মাত্র ৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বেরিবাঁধ ১৫ বছরেও পুনঃ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। আমি এ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। জয়ালভাঙ্গা এলাকার বেরিবাধ পুনঃনির্মাণে আমার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উপজেলা টিম লিডার আলতাফ হোসেন হাওলাদার জানান, ঘূর্ণিঝড় “মোখা” যেভাবে শক্তিশালী হচ্ছে, তা যদি এ এলাকা দিয়ে ওঠে তাহলে উপজেলার নদী কবলিত এলাকা তছনছ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।