প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে তারাবো পৌর এলাকায় বেড়েছে রিক্সা চুরির ঘটনা। আর এসব চোরাই রিক্সা ক্রয় ও চোর পালনের অভিযোগ ওঠেছে কিছু অসাধু রিক্সা গ্যারেজ মালিকের বিরুদ্ধে। এতে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে দরিদ্র শ্রেণির রিক্সা চালকরা। তারা হারাচ্ছে শেষ সম্বল।
তারাবো পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, সম্পতি উপজেলার তারাবো হাটিপাড়া ইসলাম রোলিং মিলের সামনে স্থানীয় বসু মিয়ার ছেলে জামাই হোসেনের মালিকানায় একটি রিক্সা গ্যারেজে পাওয়া গেছে বেশ কিছু চোরাই রিক্সা ও ব্যাটারি। এর আগে সোনারগাঁয়ের দরিদ্র রিক্সা চালক হাকিম উদ্দিনের একটি রিক্সার ব্যটারি চুরি করলে তার গ্যারেজ ওই চোরাই ব্যাটারি পাওয়া যায়।
এসব ঘটনার পর স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন জনে জনে। এতে বেরিয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্র জানায়, জামাই হোসেন দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ এ চোরাই রিক্সা বিক্রির ব্যবসা করে আসছে। রিক্সা চুরির সুবিধা করতে ৫ বছর পূর্বে তার ছেলে সুমন বরিশালের মুলাদি থানার চিহ্নিত অপরাধি বিল্লাল চোরাকে নিয়োগ দেয়। পরে ওই বিল্লাল একাধিকবার চুরিতে রিক্সা চুরির ঘটনায় ধরা পড়লে তারাবো এলাকা থেকে টাঙ্গাইলে গাঢাকা দেয়।
পরে সেখানেও একই কায়দায় রিক্সা চুরির ঘটনায় ধরা খেলে গত ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রয়ারিতে তাকে গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলে সেখানকার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, হোসেনের মালিাকানাধীন অপর একটি গ্যারেজে বসানো হয় জুয়ার আসর। এ আসরে প্রতি রাতে খেলা হয় লাখ টাকার জুয়া। প্রকাশ্যে জুয়া চললেও কারোই যেন কিছুই করার নেই। এমনটাই ধারণা করছেন এলাকাবাসী।আর জুয়ারীদের আনাগোনায় অনিরাপদ হয়ে পড়েছে সেখানকার ভাড়াটিয়ারা।
সূত্র জানায়, হোসেনের দুটি রিক্সা গ্যারেজে রয়েছে শতাধিক রিক্সা। এসব রিক্সার ২৫ শতাংশই চোরাই বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্যারেজেরই নিয়মিত রিক্সা চালক। অপর এক সূত্র জানায়, হোসেনের এ গ্যারেজ থেকে সোনারগা, আড়াই হাজার ও নরসিংদীর মাধবদী থেকে চুরি যাওয়া রিক্সা ও ব্যটারি উদ্ধারের পর এসব ঘটনায় পৃথক থানায় মামলা চলমান রয়েছে।হোসেন এক সময় ২ টি রিক্সার মালিক হলেও এখন তার রয়েছে শতাধিক রিক্সা। এসব রিক্সার সঙ্গে চোরাই মাল ও রিক্সা চোর পালন করে সে এখন কোটিপতি। তার রয়েছে ৫ টি পাকা ভবন এবং পর্যাপ্ত জমিজমা।
স্থানীয় হত দরিদ্র রিক্সা চালক মহিউদ্দিন বলেন, দুমাস পূর্বে আমার একটি রিক্সা চুরি হলে ৪দিন পর হোসেনের গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করি। কিন্তু হোসেন দাবি করে সে রিক্সা ক্রয় করেছে। পরে জানলাম সেই চোর তার গ্যারেজে নিয়মিত রিক্সা চালক। এদিকে সুমনের ছত্রছায়ায় একই এলাকার কালামের মালিকানাধীন গ্যারেজ থেকে পাওয়া গেছে চোরাই রিক্সা। এ নিয়ে তারাবো পৌরসভায় একাধিকবার তার বিরুদ্ধে শালিসে জরিমানা করা হলেও থামেনি চোরাই রিক্সার ব্যবসা।
এ বিষয়ে গ্যারেজ মালিক হোসেন মিয়া বলেন, আমার গ্যারেজে কোন চুরির মাল রাখি না। তবে কিছু রিক্সা চালক আমাকে না জানিয়ে রিক্সা রাখায় এসবের বিচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি জেনেছি, গ্যারেজটি নজরদারি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।