বরগুনা-১,আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেন মতি

0
বরগুনা-১,আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেন মতি

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ মুঃ আঃ মোতালিব, তালতলী, (বরগুনা) : এক সময় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির শাসনামলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ২০০১ সালের বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী মতিয়ার রহমান তালুকদার বলেছেন পুনঃ বিবেচনায় মনোনয়ন না পেলেও তিনি নির্বাচন করবেন। তবে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যে তিনি আশ্বস্ত হন যে অন্ততঃ বরগুনা-১ ( সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনে  যোগ্যপ্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে পূনঃ বিবেচনা করবেন।

মতি আরো জানান নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগ মুহুর্তেও দলের পক্ষ থেকে নতুন কোন নির্দেশনা আসতে পারে, সে অপেক্ষায় থাকবেন। এর মধ্যেই অন্য একটি দলের (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জামায়াতে ইসলামী) পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার লোভিং চালিয়ে যাবেন। তফসিল ঘোষণার সময়ও যদি বিএনপি’র মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হলে অন্য একটি দলের মনোনয়ন কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন। তবুও তার নিজ আসন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

তিনি জানান ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমতলী ও তালতলী এ দুটি উপজেলা কে তিনি নিজের মতো করে সাজিয়েছেন। তাই এ আসনের আমতলী ও তালতলী উপজেলার সাধারণ জনগণ তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। বরগুনার চেয়ে এ দুটি উপজেলায় ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি। তার দাবি এ দুটি উপজেলার সাধারণ জনগণ তাকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। দেশে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে  তৎকালীন বরগুনা-৩ (আমতলী ও তালতলী) আসনে ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মতিয়ার রহমান তালুকদার।

সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এদেশের ক্ষমতায় আসেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ সময় তৎকালীন বরগুনা-৩ (আমতলী ও তালতলী) আসনে জাতীয় পার্টির মতিয়ার রহমান তালুকদার অল্প ভোটে হেরে গেলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী  মজিবুর রহমান তালুকদার।

২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান তালুকদার মনোনয়ন পেয়ে   আমতলীতে নির্বাচনী জনসভার মঞ্চে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নির্বাচনী মঞ্চে একজন সংসদ সদস্যের মৃত্যুর কাহিনীতে আমতলী ও তালতলীর সর্বত্র মঙ্গল ও অমঙ্গল নিয়ে এলাকায় আনাচে-কানাচে বেশ কয়েকদিন ছিল আলোচনার ঝড়। পরে এ আসনে তাৎক্ষণিকভাবে মনোনয়ন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি নির্বাচিত হন।

এ সময় শেখ হাসিনার সাথে নির্বাচনী লড়াই করেন জাতীয় পার্টি থেকে মতিয়ার রহমান তালুকদার। সামান্য সাড়ে তিন হাজার ভোটের ব্যবধানে শেখ হাসিনার সাথে মতি তালুকদার হেরে গেলেও তখন আলোচনার তুঙ্গে উঠেছেন তিনি। ২০০১ সালের এ নির্বাচনে জামায়াতসহ ১৪ দলকে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার গঠন করেন। ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনা ৩ টি আসন থেকে নির্বাচিত হলে বরগুনা-৩ (আমতলী ও তালতলী) আসনটি ছেড়ে দেন।

সরকার গঠনের পর ৩ মাসের মধ্যে এ আসনে দেয়া হয় উপ-নির্বাচন। এ উপ-নির্বাচনে মতিয়ার রহমান তালুকদার খশি পাল্টিয়ে আসেন বিএনপি’র মনোনয়ন নিয়ে। তখনও তিনি বিপুল ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ দীর্ঘ ক্ষমতাকালীন সময়ে তিনি আমতলী ও তালতলীকে নিজের মত সাজিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে বরগুনার ৩ টি আসনকে ভেঙ্গে করেন ২টি আসন।

বর্তমানে বরগুনা-১ (সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে আমতলী উপজেলার ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪০৮ জন এবং তালতলীতে ৯৩ হাজার ৭২৫ জন। দুই উপজেলা মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯২ হাজার ১৩৩, যা বরগুনা সদর উপজেলার চেয়ে ২৬ হাজারেরও বেশি।

স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলে বরগুনা-১ আসনে বিএনপির জন্য পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে। দলীয় ঐক্য বজায় না থাকলে এ আসন পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here