প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আর মাত্র চার দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানীর ঈদ। তাই পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে জমে উঠতে শুরু করেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী ছেংগারচর বাজারসহ উপজেলার সবগুলো কোরবানীর পশুর হাট। ঈদকে সামনে রেখে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাক ডাকে মুখরিত হাট প্রাঙ্গন। কেউ কেউ খামার থেকেই গরু বিক্রি করছেন।
তবে এখনও আশানুরূপ বক্রিি শুরু হয়নি বলে জানয়িছেনে পশু বক্রিতোরা। আগামী দু-এক দনিরে মধ্যইে হাটগুলোতে জমজমাট বচোকনো শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করছেনে বক্রিতোরা। উপজেলায় এবার ২টি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি বসবে ১৭টি অনেক অস্থায়ী পশুর হাটও। উপজেলায় আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ৪ হাজার ৮০২ টি পশু কুরবানির জন্য প্রস্ত্তুত রয়েছে । এ উপজেলায় চাহিদার তুলনায় ঘাটতি রয়েছে ৩৯৮টি। খামারিরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও গোখাদ্যের সংকটের মধ্যেও প্রান্তিক খামারি ও কৃষকরা পশু লালন করেছেন। তবে তারা শঙ্কায় রয়েছেন ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ নিয়ে।
তারা বলছেন, যদি ভারতীয় গরুর আধিপত্য বাড়ে, তবে লোকসানে পড়বেন তারা। ইতিমধ্যে এ সব হাটগুলোতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খামারী ও ব্যাপারীরা বিক্রির উদ্দেশে তাদের লালন পালন করা পশু নিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে আগে ভাগেই পছন্দের পশু কিনতে হাটে ভীড় করছেন ক্রেতারা। এ বছর গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পশু লালন পালনে খরচ একটু বেশি হলেও পশুর উপযুক্ত মূল্য পেতে দুশ্চিন্তায় ভুগছে খামারীরা।আজ ০২ জুন সোমবার ছিলো উপজেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট ছেংগারচর বাজার সাপ্তাহিক পশুর হাটের দিন।
এ দিন এ বাজারে সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, জমে উঠেছে এ কোরবানির পশুর হাটটি। পছন্দের গরু কিনতে হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারা। এ হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশীয় গরু বাজারে মজুদ রয়েছে। ঈদের আর ৪দিন বাকী হাতে সময় নেই। অনেকে জামেলা ও ঝঁকি না নিয়ে এতটু আগেই কোরবানির পশু কিনে সারতে চান। পশু বিক্রি হচ্ছে ভালোই। ক্রেতা বিক্রেতা দর কষাকষির মধ্যে সময় পার করছে। হাটে উঠেছে ষাড়, দেশি গরু। হাটে আসা ক্রেতারা চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী দরদাম করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দাম নিয়ে উভয় মুটামুটি খুশি।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, এবার কোরবানীর পশুর হাটে সবগুলো দেশীয় জাতের গরু। এদের মধ্যে রয়েছে ছোট-বড় ও মাঝারি সাইজের। সকল বিক্রেতা বলছেন আমার গরুকে কোন ধরনের ঔষধ খাওয়া হয়নি। বিক্রেতারা বলছেন, দাম ঠিক রেখেই বিক্রির চেষ্টা চলছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই বলছেন, ঈদের তিন থেকে চার দিন আগেই মূলত ভালভাবে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। এবার কোরবানীর পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি।
স্থানীয়রা গরুকে বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে বাজারে তুললেও দূরের ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে প্রচুর সংখ্যক গরু বাজারে তুলেছেন। বাজারে বিভিন্ন আকারের গরু, খাসি উঠেছে। কোরবানির আর মাত্র ৩ দিন বাকি। প্রতিটি হাট বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। তাই নির্ভয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার জোড়খালি গ্রাম থেকে আসা বহু পুরনো গরু বেপারী ও খামারী মোঃ সাদ্দাম বেপারী বলেন, আমার খামারে এবার ১২টি ষাড় গরু প্রস্ত্তুত করেছি।
তারমধ্যে আজকে একটি ষাড় গরু এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পশুর লালনপালন খরচও বেড়েছে। বাকীগুলো বিক্রি করবো ভালো দাম পেলে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত ক্রেতা রয়েছে, তারা গরু দেখছেন, দাম দর করছেন। গরুর খাদ্যের দাম বেশী,এজন্য গরুর পেছনে আমাদের খরচ পড়েছে বেশি। তবে ঈদের বেশ কদিন বাকি রয়েছে, ক্রেতারা যাচাই বাছাই করেই কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। প্রত্যাশিত দাম না পাওয়া পর্যন্ত বিক্রি করছি না।
ঈদ আসতে আরও বেশ কিছুদিন সময় আছে। এর মধ্যে কিছুটা লাভ পেলেই বিক্রি করে দেব।’ দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের আঃ রহিম বেপারী বলপন,আমি আজকে যে গরুটি বাজারে আনছি,সেটি ২ লাখ ৫০ হাজার দাম উঠেছে। ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাম উঠলে বিক্রি করবো। দশানী এলাকা থেকে গরু বিক্রি করতে আসা রবিউল্লাহ বলেন, আমার খামারে ১৫টি গরু রয়েছে। সবগুলো গরুই আজকে হাটে উঠিয়েছি। আমার এই কালো রঙ্গের এই গরুটির ৩ মণ মাংশ হবে, এখ পযর্ন্ত এর দাম উঠেছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
আমি ৩ লাখ টাকা দাম উঠলে বিক্রি করবো। এখ পর্যন্ত ৩টি গরু বিকি করেছি। এতে আমার লাভও হয়েছে ভালো। আশাকরি বাকি গরুগুলোও বিক্রি করতে পারবো। দাম নিয়ে আমি মুটামুটি খুশি। ছেংগারচর গ্রাম থেকে আরেক খামারি মাইন উদ্দিন বলেন, আমি আজকে বাজারে গরু আনছি ৮টা। এখন পর্যন্ত কোনো গরু বিক্রি করতে পারেনি। যে দাম হাঁকাচ্ছে তাতে আমার খইর বুশিসহ খাদ্য খাইয়ে আমরা খরচ হচ্ছেনা। লাভ তো দূরের কথা। হাতে সময় আছে আরো দেখবে তারপর ছাড়বো।ছেংগারচর বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ মিন্টু মিয়া বলেন, বাজারে এসেছি কোরবানির জন্য গরু কিনতে।
গরুর দাম একটু বেশী মনে হচ্ছে আমার। বাজারে এসে একটি গরু পছন্দ হয়েছে সেটার দাম চেয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সেটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনছি। দাম একটু বেশি হলেও গরু পছন্দ হয়েছে তাই দামে অখুশি না।ছেংগারচর পৌরসভার আদুরভিটি গ্রামের আক্তার দর্জি বলেন,আজকে আমাদের সাপ্তাহিক হাটের দিন। ঈদেরও কয়েকদিন বাকী আছে। তবে আজকে একটু ফ্রি ছিলাম তাই হাটে এসছি। গরু পছন্দ হয়েছে,তাই ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনে ফেলেছি। গরুটি দেখতেও খুব সুন্দর।
দামেও ভালো পেয়েছি এই গরু কিনতে পেরে আমার ছেলেরাও খুশি। এদিকে বাজারে খাসি বা ছাগলও উঠেছে এ প্রচুর। দামেও খুশি ক্রেতাবিক্রতারা। তেমনি একজন খাসি বিক্রেতা আঃ কাদির বলেন,বাজারে ৩৫টি খাসি এনছি, ২০টি বিক্রি করেছি,আরো রয়েছে ১৫টি। বাজার ভালো আছে। আশা করি বাকীগুলো আমার চাওয়া অনুযায়ী বিক্রি করতে পারবো। বালুচর গ্রামের খাসি বেপারী হাবীব উল্লাহ ফরাজী বলেন,আমার কাছে পর্যাপ্ত খাসি রয়েছে।
আজকের হাটে আমি ৫০টি‘ খাসি উঠাইছি। ৩০টি বিক্রি করেছি। আমার হাতে যে খাসি দেখছেন এটা ৩৫ হাজার ৫০০ টাকায় কিনা। ৪৫ হাজার ৫০০ টাকায় হলে বিক্রি করবো। উপজেলার প্রতিটি হাট বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। তাই নির্ভয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে।





