প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ দিন যাবত চলমান অবস্থান কর্মসূচির আজকের দিনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।সৃজয় সাহার সঞ্চালনায় ও জান্নাতুল ফেরদৌস নিসার সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদ জানান এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
মোমশিখা প্রোজ্জলন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা সহ-সভাপতি সৌরভ সেন, সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা, সহ-সাধারন সম্পাদক ইউশা ইসলাম,তাইরান আবাবিল রোজা,সাংগঠনিক সম্পাদক মৌমিতা নুর,অর্থ সম্পাদক শাহিন মৃধা,দপ্তর সম্পাদক অপূর্ব রয়,রাজনৈতিক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মুক্ত শেখ, কার্যকরী সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস নিসা সহ,নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সদস্য সচিব আবিদ রহমান, তোলারাম কলেজ সংগঠক রাইসা ইসলাম,মুন্নি আক্তার প্রত্যাশা, সদস্য শেখ সাদী,তাহমিদ আনোয়ার, সদস্য মো: সোহাগ,আফসানা আহমেদ, সিয়াম সরকার,শাহরিয়ার নাসিম, সহ অন্যান্য সংগঠক-কর্মী সহ সাধারন শিক্ষার্থীরা সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা জান্নাতুল ফেরদৌস নিসা বলেন, “এই রাষ্ট্র ও সমাজ জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।
একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। ধর্ষকরা সমাজে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” একজন ধর্ষিত নারী শুধুমাত্র একটি সংখ্যা নয়, একজন ধর্ষিত নারী একটা পরিবারের ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন। একটা ধর্ষিত শিশু শুধুমাত্র একটি সংখ্যা নয়, একটি ধর্ষিত শিশু ভেঙে যাওয়া বাবা মায়ের ভবিষ্যৎ। গঠিত নারী কমিশনকে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই আপনারা যদি নারী ও শিশুর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন তাহলে জনগণ আপনাদের ব্যর্থ ঘোষিত করবে এবং আপনারা নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিজেদের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন।
তিনি আরও বলেন, “ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার প্রবণতা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে আরও গভীর করছে। আমাদের দাবি, সকল ধর্ষণ মামলার নিষ্পত্তি ১৮ মাসের মধ্যে করতে হবে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” ছাত্রনেতা মৌমিতা নূর বলেন, “আমাদের সমাজে নারীরা প্রতিনিয়ত নিপীড়ন, হয়রানি এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষকরা বারবার অপরাধ করার সুযোগ পাচ্ছে। প্রশাসনের ব্যর্থতা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং দুর্নীতির কারণেই ধর্ষণের বিচার দীর্ঘসূত্রিতা ও প্রভাবিত হচ্ছে।
” তিনি আরও বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন কঠোর আইন প্রয়োগ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত। প্রতিটি থানায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করতে হবে, যাতে নির্যাতিতরা সহজেই আইনি সহায়তা পান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে।” অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, “যৌন নিপীড়ন বন্ধে শহর, গ্রাম, ক্যাম্পাস ও কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সেল গঠন করা জরুরি। মেডিকেল রিপোর্ট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করতে হবে, যাতে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রশাসনের গাফিলতির শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।” আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মোমবাতি প্রজ্বালন করে ধর্ষণের শিকার নারীদের প্রতি সংহতি জানানো হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান ছাত্র ফেডারেশন জেলার নেতৃত্বরা।