আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দিতে বিএনপির আহবান

0
 আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দিতে বিএনপির আহবান

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পরিপূর্ণ ভাবে প্রস্তুত হবে বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম খান। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকের পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এই কথা জানান। তিনি বলেন,আমরা তাদের কাছে মূলত তারা এই মুহুর্তে কি কার্যক্রম করছেন, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে তাদের প্রস্তুতি কি এই বিষয়গুলো নিয়েই আমরা নির্বাচন কমিশনের সাথে আমরা মতবিনিময় করেছি।

সব কিছু আলাপের পর আমাদের কাছে মনে হয়েছে তাদের কথায় যে, আগামী মে-জুন মাসের মধ্যে তারা পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবেন ভোটার তালিকা আপগ্রেড করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে। নজরুল ইসলাম খান বলেন, তবে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের নাই। কারণ দেশের প্রচলিত সংবিধান ও আইন হলো…. আপনারা জানেন আরকি একটা সরকার পদত্যাগ করলে তার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা… এটা আইন। কিন্তু এখন তো ওই আইনে দেশ চলছে না।

তাই না। এই মুহুর্তে তাহলে পলিটিক্যাল কনসেনসাসের ভিত্তিতে সরকারের তরফ থেকে অনুরোধ হতে হবে এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। তবে আমরা এতটুকু বুঝেছি যে, যদি মে-জুন মাসের মধ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি থাকে তাহলে প্রাসঙ্গিক আর কোনো সমস্যা থাকলে সেটা দূর করে খুব দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।বিকাল সাড়ে তিনটায় নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এমএম নাসির উদ্দিনসহ কমিশনারগণের সাথে বৈঠকে বসেন। সাড়ে তিনটা থেকে ৪টা ২২ মিনিট পর্যন্ত বৈঠকের পর বিএনপির নেতৃবৃন্দ সভা কক্ষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

বাদ পড়া ১৫ লক্ষ নতুন তালিকায় যুক্ত হবেন’আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন,আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জেনেছি যে, তারা তাদের কমিশনের পক্ষ থেকে একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারা কবে কি করবেন… এটা খালি তাদের বলা না, এটা দেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রচলিত আইন অনুযায়ী কিছু বিধান আছে যে, জানুয়ারির ২ তারিখের মধ্যে অটোআপগ্রেড হওয়ার কথা এবং মার্চের ২ তারিখে এসে এটা চূড়ান্ত হওয়ার কথা এবং তারপরেও আরও কিছু কার্যক্রম আছে… এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

তাদের কাছ থেকে যেটুকু জানলাম যে, প্রায় ৩০ লক্ষ নতুন ভোটার আগামী দিনে যুক্ত হবে যেগুলো বাদ পড়েছিল… তাদেরকে ভোটার আগে করা হয় নাই। আর এই সময়ে নতুন ভোটার যারা হবেন সেগুলো এখন ভোটার হবেন না… তারা ১৮ বছর হবেন আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি… কাজেই ওটা হিসেবে না। হিসাব হলো বাদ পড়া ছিলো প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার তালিকায় তারা যুক্ত হবেন। আর এর মধ্যে ১৫ লক্ষ মারা গেছেন তারাও বাদ পড়বেন। আল্টিমেটলি ১৫ লক্ষ ভোটার বিদ্যমান তালিকায় যুক্ত হওয়ার কথা।

তিনি বলেন,তবে এরপরে আরও কিছু যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে আপনারা জানেন যে, যারা মারা গেছেন সেই তালিকা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের যে মৃত্যু ব্যক্তিদের রেজিস্ট্র্রেশন তার ভিত্তিতে।আমরা সবাই জানি, দেশের বহু জায়গায় বহু মানুষ তারা মারা যাওয়ার পরে ইউনিয়ন পরিষদে রেজিস্ট্রেশন করেন না। অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্ট্রেশন তাদের নাম নাই। কিন্তু আসলে মারা গেছেন তারা। এগুলো অনুসন্ধান করার কাজ চলছেন বলে আমাদেরকে কমিশন জানিয়েছেন।‘

নির্বাচনের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলা হবেকবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে এর কোনো আভাস পাওয়া গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন,না। আমি তো বললাম, নির্বাচনের ঘোষণা তো উনারা করতে পারেন না। কারণ সংবিধানের নরমান নিয়ম অনুযায়ী সেই নির্বাচন হচ্ছে না।আপনারা কমিশনের কাছে নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কোনো প্রস্তাব দেইনি।

আমরা তো এনাদের কাছে এটা বলব না।যেহেতু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দায়িত্ব এখন সরকারের… তারপরে সিডিউল ঘোষণা তো কমিশনই করবে। আপনারা জানেন যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আগামীকাল আমাদের আলোচনা আছে সেখানে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।‘নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন প্রস্তুতি ‘ওয়েল’নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে আপনারা সন্তুষ্ট কিনা এরকম প্রশ্নের জবাবে নজরুল বলেন, ‘‘ওয়েল।

আইন অনুযায়ী তাদের যা করার কথা আমরা বুঝতে পারছি যে, তারা সঠিকভাবে সেটা করছেন।সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘দেখুন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সরকার স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করবে, সেটা করে যদি সিদ্ধান্ত আলোকে আইনের পরিবর্তন হয় বা বিধানের পরিবর্তন হয় তাহলে সেটা নির্বাচন কমিশনকে মানতে হবে।কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, সেটা তো এখনো হয়নাই।

নির্বাচন কমিশন বলেছিল যে, নির্বাচন সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব করেছেন তাদের কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে… এই বিষয়ে তারা কিছু আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,দেখুন এটা তো তাদের ব্যাপার সেটা তারা বলবেন।আমরাও যদি মনে করি যে, সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে অন্তরায় এটা নির্বাচন কমিশন কেনো, আমরাও বাধা দেবো। কিন্তু এই বিষয়টা তাদের সাথে আলোচনার বিষয় না।

এটা তো কোনো কোলাবরেশনের ব্যাপার না… তাদের মতামত তারা বলবে, আমাদের মতামত আমরা বলব।প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠকে ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবদুর রহমানেল মাসুদ, বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

বৈঠকে নজরুল ইসলাম খানের সাথে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদও ছিলেন এই বৈঠকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here