প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও মেঘনা নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের চোখে ঘুম নেই। আবারো তারা বালু সন্ত্রাসীদের কবলে। কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এবারো মেঘনা নদীর ৮টি বালু মহাল ইজারা দেয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার মেঘনা নদীর নলচর ভরাটিয়া, সোনারচর সাপমারা, মূল মেঘনা নদী ও চালিভাঙ্গা এই চারটি বালু মহাল ইজারা দেয়ার কাজ শেষ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
অপরদিকে, ০৫.৪১.৬৭০০.৩০১.৩০.০১০.০১.২০২০-২৭৫ নং স্মারকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন নারায়লণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার চর লাউয়াদি ও চর রমজান সোনাউল্যাহ মৌজার চর লাউয়াদি ও চর রমজান সোনাউল্যাহ বালু মহাল। নুনেরটেক মৌজার আনন্দবাজার বালু মহাল। আড়াইহাজার উপজেলার নিজ কালাপাহাড়িয়া ডিকচর বালুমহাল ইজারা দেবে বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, আগামী ২২ জুলাই এসব বালুমহাল ইজারা দেয়ার কাজ শেষ হবে।
এলাকাবাসীর মতে, মেঘনা নদীতে একই বালু মহাল বিভিন্ন নামে ইজারা দিয়ে প্রভাবশালীদের বালু উত্তোলনে সহযোগীতা করছেন স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে ভূক্তভোগীরা তাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটি হারিয়ে অভিযোগ জানানোর জায়গাও পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মহসিন বলেন, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিকার চেয়ে তিনি উচ্চ আদালতে তিনটি রিট করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, দূর্নীতি দমন কমিশন, ভূমি মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দফতর আবেদন করলেও কোন সুফল পাননি।
বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য (সম্প্রতি কুয়েতে গ্রেফতার হওয়া) পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, আত্মীয় স্বজনদের অত্যাচারে এলাকাবাসী ভিটে মাটি ছাড়া। ক্ষমতার দাপটে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলিনের ফলে সেখানকার পাঁচটি গ্রামের তিনশ’ একর জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, ভিটেমাটি হারা হয়েছেন পাঁচ শতাধিক পরিবার। মিথ্যা মামলা, হুমকী, শারীরিক নির্যাতনের ভয়ে দিশেহারা তারা। গতকাল সরেজমিন ঘুড়ে এক ভয়ালচিত্র চোখ পড়ে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বালু সন্ত্রাসীরা অপরিকল্পিতভাবে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কারনে এলাকার বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, হাট-বাজার নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
বালু উত্তোলন নিয়ে ঘটে গেছে একাধিক প্রানহানীর ঘটনা। তারপরও প্রশাসনের এ ধরনের নেক্কারজনক খেলা বন্ধ হয়নি। এসব বালু মহাল পুনরায় ইজারা দেয়ার ফলে আবারো শুরু হবে নানা ধরনের সমাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা। কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনার নদীর তীরে অবস্থিত শতাধিক শিল্প কারখানা পরবে হুমকীর মুখে। সেখানে বিনিয়োগ করা হাজার হাজার কোটি টাকার শিল্পকারখানা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এছাড়া সম্প্রতি কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নির্মিত মেঘনা সেতুর অস্তিস্ত¡ নিয়েও শংকা প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞমহল। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।