প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা পদযাত্রা কর্মসূচি পালনকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ টিয়ারশেল ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
আহতদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী আলামিন মোল্লা, আড়াইহাজার মাহমুদপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মনির হোসেন সরকারের নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান।শনিবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় উভয় ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল যায় এবং মহাসড়কে উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় শনিবার ছিল পদযাত্রা কর্মসূচি। এজন্য বিকেল ৩টা থেকেই বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নানের অনুসারী ও সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কাঁচপুরে জড়ো হতে থাকে।
তবে আগে থেকে কাঁচপুর ব্রিজে মোতায়েন করা পুলিশ নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন।বিকেল সাড়ে ৩টায় এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে পুলিশের তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যায়। ফের বিএনপি নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হয়ে মহাসড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।এ সময় পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে।
এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। এতে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আহত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ জানান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশ হঠাৎ করে অতর্কিতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে।
পুলিশের লাঠিচার্জ ও ছোঁড়া গুলিতে আমিসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছে। পুলিশের এই ন্যাক্কার জন্য ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।তবে আমি বলতে চাই এই হামলা করে আওয়ামী লীগের শেষ রক্ষা হবে না। আওয়ামী লীগের পতনের ঘন্টা বেজে উঠেছে। ইনশাল্লাহ এক দফা দাবি আদার মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটাবোনারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জানান, পুলিশের টিয়ারশেলের কারণে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদসহ আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে অবস্থান নেওয়ার সময়ে পুলিশ এসে অতর্কিত লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের পর টিয়ার সেল ও গুলি ছুড়েছে। এতে অনেকেই আহত হয়েছে।এবিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, অনুমতি ছাড়াই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি করতে চেয়েছিল।
আমরা তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বললে তারা আমাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।আত্মরক্ষার্থে আমরা কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। বর্তমানে পরিস্থিতিতে শান্ত রয়েছে।