আশুলিয়ায় হেযবুত তওহীদ কর্মীদের উপর হামলা, নারীসহ আহত ১৩, গুরুতর২

0
আশুলিয়ায় হেযবুত তওহীদ কর্মীদের উপর হামলা, নারীসহ আহত ১৩, গুরুতর২

প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ স্টাফ রিপোর্টার:ঢাকার আশুলিয়ায় গণসংযোগ কর্মসূচি চলাকালে হেযবুত তওহীদের স্থানীয় সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসীএতে হেযবুত তওহীদের নারী সদস্যসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৩ জন। তাদের মধ্যে দু জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

গতকাল শুক্রবার সকালে আশুলিয়ার ইউনিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতরা হলেন- হেযবুত তওহীদের কর্মী আশুলিয়ার বাসিন্দা আবুল হোসেন (৪৫) ও কামাল হোসেন (২৫)। অন্যান্য আহতরা হলেন- জাকির হোসেন, সুমি আক্তার, সাংবাদিক দাউদুল ইসলাম নয়ন, লিয়ন ইসলাম, নিজাম মণ্ডল, মানিক, জাহিদুল ইসলাম, সোহরাব হোসেন, নোমান, তরিকুল ইসলাম ও বাদশা।

জানা যায়, জঙ্গিবাদ, গুজব-সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে আশুলিয়ায় গণসংযোগ করছিলেন হেযবুত তওহীদের স্থানীয় কিছু কর্মী। এসময় একদল উগ্র সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক তাদেরকে বাধা প্রদান করে। তারা হেযবুত তওহীদের নারী কর্মীদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং তাদের গায়ে হাত তোলে, শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে সংগঠনটির স্থানীয় দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ছুটে এলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য অনুরোধ করে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

মীমাংসার বিষয়ে আলোচনা চলাকালে আশুলিয়ার ইউনিক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোপালগঞ্জ ফার্নিচারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মান্নানের ছেলে মানিক একদল সন্ত্রাসী নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় হেযবুত তওহীদের কর্মীদের উপর। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। দ্বিতীয় দফা হামলায় হেযবুত তওহীদের অন্তত ১০ কর্মী আহত হন যাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

গুরুতর আহত আবুল হোসেন ও কামাল হোসেনকে তাৎক্ষণিকভাবে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বাকিদেরকে সাভার মডেল হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ প্রচার করেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।হেযবুত তওহীদের আশুলিয়া থানার প্রচার সম্পাদক সুমি আক্তার বলেন, একজন মেয়ে মানুষ হয়ে আমি ইসলামের দাওয়াতি কাজ করতে বাইরে বের হয়েছি কেন এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে গোপালগঞ্জ ফার্নিচারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মান্নান। সে আমাকে ধমকাধমকি করতে থাকে।

আমার কোনো কথাই সে কানে নেয় না। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে সে আমার গায়ে হাত তোলে, ধাক্কা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে আমাদের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক দাউদুল ইসলাম নয়নের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য বসা হয়। আলোচনা চলাকালে আব্দুল মান্নানের ছেলে মানিক একদল দুর্বত্ত সন্ত্রাসী ডেকে নিয়ে আসে। তারা অতর্কিতভাবে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হেযবুত তওহীদের প্রচারকর্মীদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে।

এ সময় রড দিয়ে আমার গায়ে ও মাথায়ও আঘাত করা হয়। আহত সাংবাদিক দাউদুল হক নয়ন বলেন, হেযবুত তওহীদের একজন নারী কর্মীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় শালিস মীমাংসার জন্য ডাকা হয় আমাকে। এসময় হুট করে আব্দুল মান্নানের ছেলে মানিক একদল সন্ত্রাসী নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। আমি তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে তারা আমাকেও এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। হেযবুত তওহীদের আশুলিয়া থানার সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, মীমাংসার কথা বলে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ডেকে নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করা হয়েছে আমাদের।

আমরা এ ধরনের অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আইন মান্যকারী আন্দোলন হিসেবে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিগত দিনে এরকম বহু ঘটনায় আমরা বিচার পাইনি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা আর দেখতে চাই না। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়ে আমরা থানার সামনে অবস্থান নিয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।

হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় আমীর ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ বলেন, হেযবুত তওহীদের জন্মলগ্ন থেকে জঙ্গিমনা উগ্র একটি শ্রেণির দ্বারা বারবার আক্রান্ত হয়ে আসছি আমরা। বিগত কয়েকমাস ধরেই দেখছি উগ্রপন্থী এই শ্রেণিটির উগ্রতা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের দ্বারা হামলার শিকার হচ্ছে হেযবুত তওহীদের নিরপরাধ সদস্যরা। নারী সদস্যদের উপর হামলা করতেও তারা পিছপা হচ্ছে না। প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা তাদেরকে আরো বেপরোয়া করে তুলছে।

একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এরকম মাস্তানী দেশের জন্য অশনিসংকেত। আশুলিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না হেযবুত তওহীদ। অভিযুক্ত গোপালগঞ্জ ফার্নিচারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। আশুলিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ঘটনার পরপরই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে হেযবুত তওহীদের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা এ ঘটনার নেতৃত্বদানকারী আব্দুল মান্নান ও তার ছেলে মানিক, মো. সুজন, রফিকুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিকেল থেকে হেযবুত তওহীদের শত শত নেতাকর্মীকে থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here